গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
কোনো নেতার বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলন বা শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ উঠলে তার আওয়ামী লীগ করার আর সুযোগ থাকবে না উল্লেখ করে দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া দলে কেউ অপরিহার্য নয়। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আইইবি মিলনায়তনে তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) নতুন কমিটির অভিষেক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা সংগঠন করি। তাই নীতি-নৈতিকতাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা সমাজের প্রতিনিধিত্ব করি। সমাজের প্রতি আমাদের দায় আছে। মানুষ প্রত্যাশা করে, যারা দায়িত্বশীল পদে থাকে তারা ভালো কাজ করবে, ভালো কথা বলবে। কিন্তু আমরা অনেক সময় নৈতিকতার স্খলন দেখি। হানিফ বলেন, কিছুদিন আগে গাজীপুরের মেয়রকে কিন্তু অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। ডা. মুরাদ হাসানকে প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হয়েছে। সেটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। এর মধ্য দিয়ে একটি বার্তা পরিষ্কারভাবে দেওয়া হচ্ছে, আওয়ামী লীগের জন্য শেখ হাসিনা ছাড়া কোনো ব্যক্তি অপরিহার্য নয়।
আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা বলেন, ডা. মুরাদ হাসান অত্যন্ত নিম্নমানের রুচিহীন কথা বলেছেন। আমি অবাক হয়ে যাই, একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে কীভাবে এসব বলেন? এরকম রুচিহীন ব্যক্তি যার মধ্যে নিম্নতম রুচিবোধ নেই, অশ্লীল কথা বলে। এ রকম ব্যক্তির সাংগঠনিক কোনো দায়িত্বশীল পদে থাকার কোনো সুযোগ নেই, তিনি সেই সুযোগ হারিয়েছেন। সংগঠনের যেই পদে থাকুক না কেন সেই পদ থেকে অপসারণের জন্য আগামী কার্যনির্বাহী সভায় সুপারিশ করব। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি নেতারা নাটক করছেন উল্লেখ করে হানিফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী মানবতা দেখিয়ে কারাবিধির বাইরে গিয়ে খালেদা জিয়াকে নির্বাহী ক্ষমতায় বাসায় থাকার সুযোগ দিয়েছেন। দণ্ড স্থগিত রেখে তার চিকিৎসার সুযোগ দিয়েছেন। পৃথিবীর কোথাও কয়েদিকে এমন সুযোগ দেওয়ার নজির নেই। বিএনপি নেতারা দাবি করছেন তাকে বিদেশে পাঠাতে হবে।
আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা বলেন, বিএনপি নেতারা বেগম জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে সকাল-বিকাল বিএনপি নেতারা প্রেস ক্লাবের সামনে অযৌক্তিক দাবি তুলে বক্তব্য করছেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বিদেশে চিকিৎসা দেশের আইনের মধ্যে পড়ে না। দয়া করে প্রতিদিন প্রেস ক্লাবের সামনে নাটক করা বন্ধ করুন। দণ্ড স্থগিত অবস্থায় কেউ দেশের বাইরে যেতে পারে না। একমাত্র দণ্ড মওকুফ হলে তিনি বিদেশে যেতে পারেন। দোষ শিকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ আছে। রাষ্ট্রের অভিভাবক দয়ালু মানুষ। তিনি চাইলে ক্ষমা করে দিতে পারেন। মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেন, কারো দয়ায় বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হয়নি। আমরা যুদ্ধ করে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দেশ স্বাধীন করেছি। এই স্বাধীনতার জন্য জাতির পিতার ২১ বছরের আন্দোলনের পথ মসৃণ ছিল না। ১৩ বছর বিভিন্ন জায়গায় কারাবরণ করেছেন। ১৯৬৬ সালের ছয় দফার ঘোষণার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার সোপান রচিত হয়েছিল। রেসকোর্স ময়দানের ১৯ মিনিটের ভাষণে তিনি বাঙালিকে জাগিয়ে তুলেছেন। স্বাধীন, আত্মমর্যাদাশীল বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। অথচ মুক্তিযুদ্ধের সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ড ক্ষমতার পালাবদলের জন্য ছিল না। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ছিল একাত্তরের চরম প্রতিশোধ।
তিনি বলেন, ৫০ বছরের মাথায় দাঁড়িয়ে মূল্যায়ন করার সময় এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়ন, অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার বিকল্প কোনো নেতা নেই। আওয়ামী লীগ বা অন্য দল, কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বেই আমরা সোনার বাংলা গড়ব। তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়নের অভিষেক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি আবারও অস্বাভাবিক চিন্তা শুরু করেছে। তারা পেছনের দরজায় দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। জাতির জনকের কন্যা বলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকার সুযোগ দিয়েছেন, চিকিৎসার সুযোগ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র ছিল। এখনও বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের সবাইকে এসব ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কাজিম উদ্দিন বলেন, দেশে তিতাসের লাখ লাখ গ্রাহকের অবৈধ সংযোগ রয়েছে। তিতাসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবৈধ সংযোগ দেওয়ার সঙ্গে জড়িত নয়। তিতাসকে বাঁচাতে এসব অবৈধ সংযোগ বন্ধ করতে হবে। তিতাস বিলীন হওয়ার পথে। তিতাসকে বাঁচাতে সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান, তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌ. হারুনুর রশীদ মোল্লাহ, জাতীয় শ্রমিক লীগের কার্যকরী সভাপতি আলাউদ্দিন মিয়া, জাতীয় শ্রমিক লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক এইচএম মোতালেব প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন তিতাস গ্যাস কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক আয়েজ উদ্দিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।