Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ছাইয়ে তলিয়ে গেছে ১১টি গ্রাম

ইন্দোনেশিয়ার আগ্নেয়গিরি : সতর্কতা বজায় রাখার আহ্বান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

ইন্দোনেশিয়ার সেমেরু আগ্নেয়গিরির উদগীরণে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর পর ওই এলাকার বাসিন্দাদের সতর্কতা বজায় রাখতে বলেছেন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণরত কর্মকর্তারা। ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির কারণে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। শনিবার জাভা দ্বীপের সর্বোচ্চ এই আগ্নেয়গিরি থেকে উত্তপ্ত ঘন ছাই ও ধোঁয়ার বিশাল কু-ুলি উৎক্ষিপ্ত হয়ে আশপাশের গ্রামগুলো ঢেকে দেয়, এতে ১৪ জনের মৃত্যু হয় এবং বহু মানুষ আহত হন। উপর থেকে নেওয়া ফুটেজে বিস্তৃত এলাকা ঘন ছাইয়ে ঢাকা পড়ে আছে এমনটি দেখা গেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। খবরে বলা হয়, ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে মাউন্ট সেমেরু আগ্নেয়গিরি থেকে শনিবার শুরু হওয়া অগ্ন্যুৎপাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান বাড়ছেই। লুমাজাং প্রদেশের অন্তত ১১টি গ্রাম অগ্ন্যুৎপাত থেকে সৃষ্ট বিশাল ছাইয়ের স্তুপের নিচে পুরো তলিয়ে গেছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে পালানো গ্রামবাসীদের অনেকেই মসজিদ ও অস্থায়ী কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। দেশটির আপদকালীন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অগ্ন্যুৎপাতের কারণে এ পর্যন্ত অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও বহু মানুষ। আগ্নেয়গিরির ছাই বাড়িঘরের ছাদ পর্যন্ত ঢেকে দিয়েছে। সতর্কতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে স্থানীয়রা বলছেন, ঘন ধোঁয়ার মেঘ সূর্যকে সম্পূর্ণ ঢেকে দেওয়ায় দিনের বেলাতেও আকাশ রাতের মতো ঘন অন্ধকার হয়ে আছে। কর্মকর্তারা বলছেন, অন্তত ৫৭ জন দগ্ধ হয়ে আহত হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকে গুরুতরভাবে পুড়ে গেছে। দগ্ধদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থা বিএনপিবি-র কর্মকর্তারা বলছেন, উপদ্রুত এলাকা থেকে এ যাবত ৯ শতাধিক মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে দম বন্ধ করা ধোঁয়া আর বিদ্যুৎ সংযোগ পুরো বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণে। এছাড়াও অগ্ন্যুৎপাতের পর ঝড়বৃষ্টিতে আগ্নেয়গিরির লাভা ও ধ্বংসাবশেষ মিশে কাদায় পরিণত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। স্থানীয় একজন কর্মকর্তা তরিকুল হক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ওই এলাকার সঙ্গে নিকটবর্তী মালাং শহরের সড়ক ও সেতু যোগাযোগও অগ্ন্যুৎপাতের ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। খুব দ্রুত পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গেছে। ছাইয়ে চাপা পড়া ভবনগুলোতে আটকে পড়া ১০ জনকে ইতোমধ্যেই উদ্ধার করা হয়েছে। জরুরি বিভাগের কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় মিডিয়াগুলো আকাশ ঢেকে ফেলা বিশাল ছাইয়ের মেঘ থেকে প্রাণ বাঁচাতে এলাকার মানুষদের ছুটে পালানোর ভিডিও শেয়ার করেছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে। এসব ভিডিওতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্কের চিত্র ফুটে উঠছে। এই অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয় শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর প্রায় আড়াইটা নাগাদ। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে তিন মাইল (পাঁচ কিলোমিটার) পর্যন্ত এলাকায় কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না। অস্ট্রেলিয়ার ডারউইনে ভলক্যানিক অ্যাশ অ্যাডভাইজরি সেন্টার বলছে, আগ্নেয়গিরির ছাই জ্বালামুখ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এখন ভারত মহাসাগরের ওপর দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি আগ্নেয়গিরির ছাই-এর সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে এয়ারলাইন্সগুলোকে সতর্ক করে দিয়েছে। বিমান সংস্থাগুলোকে বলা হয়েছে, এই ছাই ১৫ হাজার মিটার (৫০ হাজার ফুট) উঁচু পর্যন্ত উঠতে পারে। রয়টার্স, বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইন্দোনেশিয়ার আগ্নেয়গিরি
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ