পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশটন কার্টার ইরাকের মসুলে আইএসের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে তুরস্কের সম্পৃক্ত হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। তবে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে ইরাকি কর্তৃপক্ষের অনুমোদন প্রয়োজন হবে বলে মনে করেন তিনি। গত শুক্রবার আঙ্কারায় তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগানের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। ইরাকি কর্তৃপক্ষ তুরস্ককে মসুলে সামরিক ভূমিকা পালন করতে দেবে কিনা- যেখানে বাগদাদ বরং এর বিরোধীতা করছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাশটন কার্টার বলেন, আমি বেশ আত্মবিশ্বাসী। আমরা সব বিষয়েই আলাপ আলোচনা করেছি... বাস্তবতার নিরিখে আমরা একযোগে কাজ করতে পারবো। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, এ অঞ্চলে তুরস্কের ঐতিহাসিক ভূমিকা রয়েছে। এটা যথার্থভাবেই সিরিয়া ও ইরাকে আইএস বিরোধী অভিযানেও অব্যাহত থাকবে। সফরে ব্যর্থ অভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত তুরস্কের পার্লামেন্ট ভবনও ঘুরে দেখেন অ্যাশটন কার্টার। এছাড়া তিনি দেশটির শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। এদিকে মসুল পুনরুদ্ধারের জন্য আইএস-এর প্রবল বাধা উপেক্ষা করে ক্রমাগত সামনে এগিয়ে যাচ্ছে ইরাকি বাহিনী। আইএসকে যেন চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলা যায় তার জন্য এ পর্যায়ে অভিযানের তৃতীয় অধ্যায় শুরু করেছে তারা। আর তাদেরকে ঠেকাতে ক্রমাগত আত্মঘাতী বোমা হামলা ও চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে আইএস। তবে ইরাকি বাহিনীর দাবি, আইএস-এর সংগ্রহে থাকা অস্ত্রও সীমিত হয়ে পড়েছে। তাদের কাছে এখন স্নাইপার ও আত্মঘাতী গাড়িবোমা হামলা চালানোর উপকরণ ছাড়া আর কোনও অস্ত্র নেই। গত বৃহস্পতিবার ইরাকি সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের সেনারা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে অগ্রসর হচ্ছে এবং কুর্দি পেশমার্গা বাহিনী অগ্রসর হচ্ছে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে। আইএস ঘাঁটি লক্ষ্য করে হেলিকপ্টার থেকে বোমা হামলা চালানো হচ্ছে। ইরাকের বিশেষ বাহিনী এরই মধ্যে বারতেল্লা শহরে প্রবেশ করেছে। শহরটি মসুল শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। মেজর জেনারেল ফাদিল বারওয়ারি বলেন, আমরা তাদেরকে বারতেল্লায় পরাস্ত করতে পারলে সব জায়গাতেই তারা ভেঙে পড়বে। তার দাবি, আইএস-এর কাছে এখন প্রতিরোধ করার মতো কিছু নেই। তাদের কাছে কিছু স্নাইপার আর গাড়িবোমা রয়েছে। মসুল অভিযানে ইরাকি সেনাবাহিনীর ১৮ হাজার সদস্য এবং কুর্দি পেশমেরগা বাহিনীর ১০ হাজার সদস্য অংশ নিচ্ছেন। সেই সঙ্গে পাঁচ হাজার মার্কিন সেনা সদস্যও তাদের সহযোগিতার জন্য এখন ইরাকে অবস্থান করছেন। এদিকে এ অভিযান শুরুর পর প্রথমবারের মতো বৃহস্পতিবার এক মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইরাকের উত্তরাঞ্চলে রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা বোমা হামলায় আহত হওয়ার পর মারা যান তিনি। তবে ঠিক কোন জায়গায় এ ঘটনা ঘটেছে তা জানানো হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের জুন মাসে জঙ্গিদের হাতে মসুল নগরীর পতন হয়। ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই নগরী আইএসের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য গত কয়েক মাস ধরে প্রস্তুতি চলছিল। সোমবার (১৭ অক্টোবর) ভোরে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে আনুষ্ঠানিকভাবে মসুল পুনরুদ্ধার অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি। বৃহস্পতিবার ইরাকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে হায়দার আল-আবাদি বলেন, ‘সামরিক বাহিনী আমাদের ধারণার চেয়েও দ্রুত গতিতে নগরীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এমনকি আমরা যে পরিকল্পনা করেছিলাম, তা এর চেয়েও দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে।’ ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম মসুল নগরীর পুনর্গঠনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করতে ওই জ্যেষ্ঠ ইরাকি কর্মকর্তারা এখন ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে রয়েছেন। এবিসি নিউজ, আল-জাজিরা, ইয়েনি সাফাক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।