মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইউক্রেন সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ নিয়ে রাশিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা সামরিক মিত্রদের বাদানুবাদ দিনকে দিন বিপজ্জনক মোড় নিচ্ছে। আর সেই বাদানুবাদের বিস্ফোরণ দেখা গেছে সুইডেনে ইউরোপীয় নিরাপত্তা বিষয়ক এক বৈঠকে। স্টকহোমের বৈঠকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের পাশে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট করে বলেছেন রাশিয়া তার ঘরের পাশে ন্যাটো সামরিক জোটের নতুন কোনো তৎপরতা কোনোভাবেই সহ্য করবে না। সংঘাত এড়াতে ইউরোপের সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি করতে চায় রাশিয়া। মি. ল্যাভরভ সতর্ক করেছেন, আমেরিকা এবং ন্যাটো জোট রাশিয়ার এই বার্তা অগ্রাহ্য করলে ইউরোপে আবারো যুদ্ধ শুরু হতে পারে। তার মন্তব্য ছিল- ইউরোপকে আবারো যুদ্ধের দুঃস্বপ্ন দেখতে হতে পারে। সুইডেনের বৈঠকে রাশিয়া ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছে যার মূল কথা- ন্যাটো জোটকে ইউরোপের পূর্বে নতুন কোনো বিস্তৃতির চেষ্টা বন্ধ করতে হবে। মি. ব্লিঙ্কেন রাশিয়ার সেই সেই প্রস্তাব বা দাবির ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি। বরং তিনি পাল্টা সতর্ক করেছেন ইউক্রেনে যে কোনো সামরিক অভিযান চালালে রাশিয়াকে তার ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে। ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল এবং ইউক্রেনের জাতিগত রুশ অধ্যুষিত ডনবাস অঞ্চলে সশস্ত্র বিদ্রোহকে কেন্দ্র করে গত সাত বছর ধরে রাশিয়ার সাথে পশ্চিমা ন্যাটো জোটের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। অনেক পর্যবেক্ষক বলছেন এই টানাপড়েন দিনকে দিন বিপজ্জনক চেহারা নিচ্ছে। সুইডেনে বৃহস্পতিবারের বৈঠকটি হয়েছে ইউক্রেন সীমান্তে ৯০ হাজারেরও বেশি রুশ সৈন্য সমাবেশ নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে। জানা গেছে, বৈঠকটি বহু-দেশীয় হলেও আলাদাভাবে মুখোমুখি কথা বলেছে মি. লাবরভ এবং মি. ব্লিঙ্কেন। মার্কিন কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের পরে জানিয়েছেন, দু পক্ষই ইউক্রেন নিয়ে কূটনৈতিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে একমত হয়েছে। এমনকি অদূর ভবিষ্যতে প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মধ্যে একটি শীর্ষ বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়েও কথা হয়েছে। তবে কবে তা হতে পারে তা নিয়ে কোনো ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি। তবে জুন মাসে জেনেভাতে মি পুতিন ও মি বাইডেনের মধ্যে মুখোমুখি যে বৈঠক হয়েছিল সেখানেও ইউক্রেন এবং ন্যাটোর সম্প্রসারণ নিয়ে কথা হয়। কিন্তু তাতে যে কোনো ফল হয়নি তা রাশিয়ার নতুন এই সৈন্য সমাবেশের ঘটনায় স্পষ্ট। রাশিয়া গত বছরগুলোতে বিভিন্নভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছে ইউক্রেনে আমেরিকা বা ন্যাটো জোটের কোনো সামরিক উপস্থিতি তারা মানবে না। সপ্তাহখানেক আগে প্রেসিডেন্ট পুতিন আবারো বলেছেন আমেরিকাকে এ ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে হবে। আর বৃহস্পতিবার স্টকহোমে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মি. লাবরভ খোলাখুলি বলেন ইউক্রেন দিয়ে বিপজ্জনক কোনো পরিস্থিতি এড়ানোর কোনো সদিচ্ছা ন্যাটো দেখাচ্ছে না। তিনি বলেন, নেটো জোটের সামরিক অবকাঠামো রাশিয়ার সীমান্তে নিয়ে আসা হচ্ছে। রোমানিয়া এবং পোল্যান্ডে আমেরিকান ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থা মোতায়েন করা হচ্ছে। আমেরিকার তৈরি মধ্যপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ইউরোপে নিয়ে আসা হচ্ছে। যার অর্থ ইউরোপে সামরিক সংঘাতের দুঃস্বপ্ন পুনরায় ফিরে আসছে। মি. লাবরভ হুঁশিয়ার করেন আমেরিকা এবং পশ্চিমা মিত্ররা যেন ইউক্রেনসহ রাশিয়ার প্রতিবেশীদেরকে সামরিক ্রসংঘাতের চারণভূমিগ্ধ বানিয়ে না ফেলে। যদিও ইউক্রেন এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা ক্রমাগত বলছে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পাঁয়তারা করছে, তবে বিবিসির সংবাদদাতা সারা রেইন্সফোর্ড - যিনি সম্প্রতি মস্কো থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন - বলছেন সিংহভাগ বিশ্লেষক এখনও মনে করছেন না যে, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক কোনো অভিযান চালাবে। বরঞ্চ, বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, ক্রেমলিন স্পষ্ট একটি বার্তা দিতে চাইছে যে ইউক্রেনকে যেন কখনই ন্যাটো জোটের সদস্য না করা হয় এবং তাদের এই ‹রেড লাইন› ভাঙলে রাশিয়া তা প্রতিহত করতে প্রস্তুত। পুতিনের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি মনে করছেন ন্যাটোতে ঢোকার ব্যাপারে পশ্চিমারা ইউক্রেনের বর্তমান ক্ষমতাসীনদের আশা যোগাচ্ছে, বিবিসিকে বলেন মস্কোতে রুশ রাজনৈতিক বিশ্লেষক তাতিয়ানা স্তানোভায়া। নেটোর পক্ষ থেকে যেভাবে ইউক্রেনকে অস্ত্র এবং সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে তাতে মি. পুতিন প্রচ- ক্ষিপ্ত। লাল কাপড় দেখলে ষাঁড় যেমন ক্ষেপে যায় অনেকটা তেমন, বলেন মিজ স্তানোভায়া। পুতিন ভাবছেন এখনই যদি তিনি কিছু না করেন, আগামিকাল ইউক্রেনে ন্যাটো ঘাঁটি হবে। সুতরাং এখনই তাকে তা আটকাতে হবে। ইউক্রেন যে ন্যাটোতে যোগ দিতে উদগ্রীব তা অজানা কিছু নয়। বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।