বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যুক্তরাষ্ট্রেও গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বাংলাদেশকে। তবে এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্মাণাধীন কার্গো স্টেশন পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। এর আগে সকাল ৯ টায় বিমানের একটি ফ্লাইটে সিলেট সফরে আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
উপস্থিত সাংবাদিকদের, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশের আমন্ত্রণ না পাওয়া প্রসঙ্গে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, “এইগুলা নিয়ে আপনারা এতো চিন্তায় কেন ? সম্মেলন তো শত শত হয় দুনিয়াজুড়ে। নতুন বাইডেন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন...বেচারা খুব কষ্ট করে হোয়াইট হাউসে এসেছেন। যা ঝামেলা হয়েছিল, আপনারা জানেন না ? এখনও ক্যাপিটালে (কেইস নিয়ে) ঝামেলা যাচ্ছে। এরকম একটা পরিপক্ব গণতান্ত্রিক দেশ আমেরিকা, সেখানেই ঝামেলা হয়েছে। আমরা সেদিক থেকে ভালো আছি। আর গণতন্ত্র অন্য কেউ শেখাবে না, আপনার দেশের লোকই শেখাবে।” তিনি বলছেন, ‘কে দাওয়াত দিল না দিল এগুলো সেকেন্ড বিষয়।’ এছাড়া তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও সুশাসনের কথা বলে বিভিন্ন দেশকে চাপে রাখতে চাওয়াই আমেরিকার রাজনীতি। আগামী গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশ ডাক পাবে কি না তা জানতে সাংবাদিকরা চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আমেরিকা বিভিন্ন দেশকে কখনো গনতন্ত্রের কথা বলে, কখনো সুশাসনের কথা বলে, কখনো সন্ত্রাসবাদের কথা বলে চাপে রাখতে চায়, সেটাই তাদের রাজনীতি। তাই গণতন্ত্র সম্মেলনে ডাক পাওয়া বা না পাওয়া নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
তিনি বলেন, এসব নিয়ে চিন্তা না করে নিজেরা কিভাবে ভালো করা যায়, সেটা নিয়ে চিন্তা করা প্রয়োজন। যদি আমাদের দুর্বলতা থাকে, সেটা দূর করার চেষ্টা করবো এছাড়া, ইউপি নির্বাচনে সহিংসতার ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামীতে নির্বাচনে একটি লোকও যাতে মারা না যায় সে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এছাড়া মন্ত্রী বলেন, “আমরা গত অনেক বছরে খুব স্থিতিশীল গণতন্ত্র...সব দেশেই আপনার কিছু ব্যত্যয় আছে, উইকনেস (দুর্বলতা) আছে। এ দুর্বলতাকে সামনে নিয়ে আমরা দিনে দিনে যাতে আরও ভালো করতে পারি, আমরাই ঠিক করবো। অন্যের ফরমায়েশে আপনার ভালো হয় না। এইগুলো শুধু মুখে বললেই হবে না। এইজন্যে মনমানসিকতা দরকার, আমাদের দেশে সহনশীলতা আরও বাড়াতে হবে। এটার একটু অভাব পরিলক্ষিত হয়। বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবনে, এমনকি তাঁর শত্রু যিনি, উনার অপজিশন (বিপক্ষ) নেতা উনার সাথে ছিলেন। একবার দিল্লি থেকে, আপনারা উনার (বঙ্গবন্ধু) বই যদি পড়েন, একবার দিল্লি থেকে ফিরছেন, উনার অপজিশনের লোকের টিকেট ছিল না। উনি (বঙ্গবন্ধু) উনারটা দিয়ে দিয়েছিলেন যে ওঁর হয়তো জরুরি দরকার আছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “আমাদের সহনশীলতা বাড়াতে হবে। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বাড়াতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই বলে থাকেন যে, একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বাড়াতে হবে। আমরা সবাই এই দেশেরই লোক। সম্প্রতি মহামান্য রাষ্ট্রপতি এই উপদেশই দিয়েছেন। সহিষ্ণুতা বাড়াতে হবে। আমরা আমাদের গণতন্ত্র ঠিক করবো। আগামীতে আমাদের দেশে যখন নির্বাচন হয়, যাতে একটি লোকও মারা না যায়। সেটার জন্য আমরা প্রচেষ্টা চালাবো। আমাদের কোথাও যদি ব্যত্যয় হয়, আমরা নিশ্চয়ই সেটা ইমপ্রুভ (উন্নতি) করার চেষ্টা করবো। সেগুলো নিয়েই বরং চিন্তা করেন।’ সিলেট-১ আসনের সাংসদ বলেন, “এ দেশে একসময় গণতন্ত্র ছিল না, এ দেশের লোকই গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে। আগামীতে এই গণতন্ত্রকে আরও পরিপক্বতা অর্জনের জন্য আমরাই চেষ্টা করবো, অন্য কেউ করতে পারবে না। আর আমেরিকায় দেখলেনই তো গণতন্ত্রের নমুনা। সুতরাং আর কাদেরকে দাওয়াত দিয়েছে সেগুলো আর দেখছি না। আর ওটা তাদের দায়দায়িত্ব; কাকে দাওয়াত দেবে না দেবে সেটা তাদের দায়দায়িত্ব।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন।সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ, সিসিক কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ, জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।