মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড় খুঁড়ে স্বর্ণ উত্তোলন করেন কঙ্গোর বাসিন্দারা। দারিদ্র্য ঘোচাতে কতটা সহায়ক তাদের এ ঝুঁকিপূর্ণ কাজ? ‘বনের পশুর মতো গুহায় প্রবেশ করি। ক্লান্ত হয়ে গেলে একটু বিশ্রাম নেই,’ এভাবেই স্বর্ণ উঠাতে গিয়ে নিজের পরিশ্রমের কথা বলছিলেন আফ্রিকার দেশ কঙ্গোর হার্ডি বিসিমওয়া।
২২ বছরের বিসিমওয়া দেশটির সাউথ কিভু প্রদেশের লুহিহির একটি খনিতে নানা কসরত করে স্বর্ণ আহরণের চেষ্টা করেন। মাথায় বসানো থাকে টর্চ লাইট। টর্চের আলোয় চলে খননকাজ। নেই কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা। আর তাই থাকে জীবন হারানোর মারাত্মক ঝুঁকি। কংঙ্গোর ওই অঞ্চলটিতে স্বর্ণ উত্তোলনের ইতিহাস বেশিদিনের নয়। দুই বছর আগে স্থানীয়রা সেখানে একটি পাহাড় আবিষ্কার করে, যে পাহাড়ের নীচে গুপ্তধনের মতোই স্বর্ণ লুকিয়ে আছে বলে ধারণা করা হয়।
এমন ধারণায় স্থানীয়রা ওই পাহাড়কে ঘিরে ভিড় করতে থাকে। কাঠ আর ত্রিপলের ঘর বানিয়ে এখানে প্রায় দুইশ পরিবার বাস করছে। তবে স্বর্ণ উত্তোলনের বিষয়টি কিন্তু অত্যন্ত ভয়াবহ। কেননা, স্থানীয় গোত্রগুলোর মধ্যে এ খনিজ সম্পদ নিয়ে কোন্দল তো আছেই, সেই সাথে গুহায় শ্বাসকষ্টে মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থা ডিডিয়ের সিযা-র একজন প্রতিনিধি জানান, গত পাঁচ মাসে লুহিহিতে সাতজন মারা গেছেন। তাদের কেউ কেউ গোত্র-কোন্দলে আর কেউ কেউ গুহার ভেতরে শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন।
এতসব ঝুঁকি আর নিরাপত্তাহীনতার পর খুব বেশিকিছু যে পাওয়া যাচ্ছে তা কিন্তু নয়। সর্বশেষ সাতবারের চেষ্টায় বিসিমওয়া একবার স্বর্ণ পেয়েছিলেন। তবে আশা ছাড়ছেন না তিনি। বলছেন, ‘ঈশ্বরের কৃপা থাকলে আমি স্বর্ণ পাবো, যা দিয়ে আমার পরিবারকে নিয়ে চলতে পারবো।’ মধ্য-আফ্রিকার দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে স্বর্ণ ও কোবাল্টসহ প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য রয়েছে। তারপরও দেশের জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশের অবস্থান দারিদ্র্য সীমার নীচে। বিশ্ব ব্যাংকের হিসেব অনুযায়ী, তাদের দৈনিক আয় দুই ডলারেরও কম।
তাদেরই একজন বেরটিন মুরুহা। ১৯ বছরের মুরুহা ২০১৯ সালের স্কুলের চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তিনি এখন খনি থেকে স্বর্ণ উত্তোলনের চেষ্টা করেন। গত এক বছরের চেষ্টায় কিছুটা স্বর্ণ পেয়েছেন মুরুহা। এদিকে এত পরিশ্রমের পর যে সোনা হাতে তারা পান তারও আবার ন্যায্য দাম পান না। স্থানীয় কারবারিদের কাছে প্রতি কেজি সোনা ৪৫০ ডলারে বিক্রি করতে হয়, আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় যা অনেক কম। আর কয়েক গ্রাম সোনার দাম যে কত কম তা সহজেই অনুমান করা যায়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বর্ণ তোলায় নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন তাই খুব একটা হয় না। লুহিহির বাসিন্দা সিফা নাশোবোলে বলেন, ‘আমরা যে আসলে স্বর্ণ উত্তোলন থেকে লাভবান হচ্ছি তা কিন্তু নয়। কারণ, সব স্বর্ণ চলে যায় কারবারিদের কাছে।’ সূত্র: এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।