Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ষণ সালিশে মেম্বার আসামী

ঈশ্বরগঞ্জ(ময়মনসিংহ)উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০২১, ৫:৪৯ পিএম

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে এক তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় স্থানীয় ইউপি মেম্বারকে আসামি করে এক মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার দুপুরে ওই তরুণী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে।

জানা যায়, উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের বিলখেরুয়া গ্রামের একটি দরিদ্র পরিবারে জন্ম ওই তরুণীর। দরিদ্র সংসার এবং পরিবারের সদস্য বেশি হয়ে যাওয়ায় ওই তরুণীর বাবা এত বড় সংসার চালাতে যেনো পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে গাজীপুর জেলার জৈনা বাজার এলাকায় কাজ করতে যায় সকলেই। সেখানে ওই তরুণী একটি গ্রার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ করার সুযোগ পায়। এঅবস্থায় প্রায় ৩বছর যাবত চাকুরী করে বাবার সংসারের সহযোগী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। এমন সময় নিজ গ্রামের মুদি দোকানি আব্দুল মোতালেবের ছেলে আবু তালেব ওরফে পিনু মিয়া(৩০)এর সাথে পরিচয় হয়। সেই পিনু মিয়া দুইটি বিবাহ করে। তারমধ্যে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে বর্তমানে দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে সংসার চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরও সেই পরিচয়ের একপর্যায়ে ওই তরুণীর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে কিছুদিন পরপর তাকে নিজ বাড়িতে আসতে বলে পিনু মিয়া।

এরই মাঝে ওই তরুণীর শারীরিক অসুস্থ্যতা বোধ করায় গাজীপুর কর্মস্থল থেকে নিজ বাড়িতে চলে আসে। কিন্তু বাড়িতে আসার পর পিনু মিয়ার দোকান থেকে প্রতিদিন ওই কিশোরী জিনিসপত্র কিনতে যায়। এই অবস্থায় একদিন পিনু মিয়া তাকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু পিনু মিয়ার আরো একজন স্ত্রী ঘরে আছে বলে ওই তরুণী বিবাহের সম্মতি দেয়নি। এসময় পিনু মিয়া তার বর্তমান স্ত্রীর কোনদিন সন্তান হবে না বলে জানান এবং ওই তরুণীকে জমাজমি লিখে দিবে বলে আশ্বাস দেয়।

এরই মাঝে রোববার রাতে তরুণীর বড় ভাই একটি ওয়াজ মাহফিলে চলে যায়। ভাই ওয়াজ মাহফিলে চলে গেছে এমন খবর পেয়ে পিনু মিয়া ওই তরুণীর ঘরে টুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় তরুণীর চেঁচামেচির শব্দ শুনে পাশের রুমে থাকা কিশোরীর ভাবি পাশের ঘরে থাকা চাচা শশুরকে ডেকে নিয়ে আসে। তখন মানুষ আসছে টের পেয়ে পিনু মিয়া পালিয়ে যায়। তারপরদিন ওই কিশোরীর চাচা পিনু মিয়ার বাবাকে জানালে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি মেম্বার এমদাদুল হক সমাধান দিবে বলে আশ্বাস দিয়ে প্রায় চার দফায় সালিশ দরবার করে। কিন্তু সেই সালিশ দরবারে মেম্বার এমদাদুল হক একবার বলে বিবাহ করিয়ে দিবে আর একবার বলে ৮০ হাজার টাকা দিয়ে সমাধান করে দিবে। পরে ওই কিশোরীর বাবা এবং চাচাকে ৮০ হাজার টাকার প্রস্তাব দেয় মেম্বার এমদাদুল হক।

বিবাহের কথা বলে ৭দিন পার হয়ে যাওয়া এবং মিমাংসার বিষয়টি নিয়ে মেম্বার বনিতা করায় কিশোরীর বাবা চলে যায় ইউপি স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে। পরে ইউপি চেয়ারম্যান মোদাব্বিরুল ইসলাম এমন ঘটনা নিয়ে থানায় যেতে বলে। তারপর রোববার সকালে মেয়ের বাবা মেয়েকে সাথে নিয়ে থানায় এসে পিনু মিয়া ও তার বাবা এবং মেম্বারসহ আসামি করে মামলা দায়ের করে।


ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, এঘটনায় কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মামলা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ