নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
চোট কাটিয়ে অ্যাশেজে মাঠে ফিরতে সময়ের সঙ্গে লড়ছিলেন টিম পেইন। কিন্তু সময় তাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেল চার বছর আগে। সেই সময়ের বিতর্কিত এক ঘটনা আচমকা সামনে চলে আসায় অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্ব ছেড়ে দিলেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। গতকাল হোবার্টে স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার দিকে সংবাদমাধ্যমের সামনে লিখিত বিবৃতিতে পদত্যাগের কথা জানান পেইন। এমন এক সময় অধিনায়কত্ব ছাড়লেন তিনি, দেশের মাঠে অ্যাশেজ শুরু হতে যখন বাকি নেই তিন সপ্তাহও।
২০১৭ সালে এক নারী সহকর্মীকে অশ্লীল বার্তা ও ছবি পাঠানোর দায়ে ক্রিকেট তাসমানিয়া ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া তদন্ত করেছিল পেইনের বিরুদ্ধে। তখনও অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্ব পাওয়া তো বহুদূর, দলেও ফিরতে পারেননি তিনি। ৭ বছরের বেশি সময় দলের বাইরে থাকার পর ওই বছরই পেইন দলে ফেরেন। স্টিভেন স্মিথদের বল টেম্পারিং বিতর্কের পর ২০১৮ সালে পেয়ে যান নেতৃত্ব। সেই নেতৃত্বে টিকে ছিলেন আজকের আগ পর্যন্ত এবং অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলকে থিতুও করেন তিনি।
কিন্তু পুরনো সেই ‘যৌন হেনস্থার’ ঘটনা সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। সংবাদমাধ্যমে এই বিতর্ক নাম পেয়ে গেছে ‘সেক্সটিং স্ক্যান্ডাল।’ সেই সময় যদিও তদন্তে দায়মুক্তিই পেয়েছিলেন পেইন। তবু সেটির জেরে দায়িত্ব ছেড়ে দিলেন তিনি আচমকাই। নিজের শহর হোবার্টে কান্নজড়িত কণ্ঠে লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন পেইন, ‘আজকে (গতকাল) আমি অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের নেতৃত্ব থেকে পদত্যাগের ঘোষণা করছি। অবিশ্বাস্যরকমের কঠিন সিদ্ধান্ত এটি। তবে সঠিক সিদ্ধান্ত আমার জন্য, আমার পরিবারের জন্য ও ক্রিকেটের জন্য। আমার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপট প্রায় চার বছর আগের। সেই সময়ের এক সহকর্মীর সঙ্গে টেক্সট ম্যাসেজ বিনিময়ের ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলাম। সেসময় এই ব্যাপারটি নিয়ে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ইন্টেগ্রিটি ইউনিট বিশদ তদন্ত করেছিল, আমি যেটায় পুরোপুরি ও খোলামেলাভাবেই অংশ নিয়েছিলাম। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার তদন্ত ও ক্রিকেট তাসমানিয়ার মানব সম্পদ বিভাগের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছিল যে, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার আচরণবিধির কোনো ধারা ভাঙিনি আমি। যদিও আমাকে নির্দোষ রায় দেওয়া হয়েছিল, তার পরও সেসময় ওই ঘটনায় গভীর অনুশোচনা করেছিলাম আমি, এখনও অনুতপ্ত। সেসময় স্ত্রী ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছিলাম এবং ওদের ক্ষমা ও সমর্থনের জন্য দারুণ কৃতজ্ঞ আমি। ভেবেছিলাম, এই ঘটনা আমাদের জীবনে অতীত হয়ে গেছে এবং দলেই পুরোপুরি মনোযোগ দিতে পারব। গত তিন-চার বছর ধরে যেটি করেই আসছি। কিন্তু সম্প্রতি জানতে পারি, গোপন সেই টেক্সট ম্যাসেজগুলি সামনে চলে আসছে। ২০১৭ সালে আমার সেই কাজ অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট অধিনায়কের মানদণ্ডের সঙ্গে ও বৃহত্তর সম্প্রদায়ের সঙ্গে যায় না। আমার স্ত্রী, পরিবার ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের যে ব্যথা ও যন্ত্রণা দিয়েছি, সেসবের জন্য আমি সত্যিই দুঃখিত। আমাদের খেলাটার ভাবমূর্তির কোনো ক্ষতি করে থাকলেও দুঃখপ্রকাশ করছি। এবং আমি বিশ্বাস করি, অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোই সঠিক সিদ্ধান্ত, যা কার্যকর এই মুহূর্ত থেকে। অ্যাশেজের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিরিজের আগে আমার ঘটনা দলের জন্য অবাঞ্ছিত ব্যাঘাত ডেকে আনুক, তা আমি চাই না। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দায়িত্ব আমি ভালোবেসেছি। আমার খেলোয়াড়ি জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন এটি। সতীর্থদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ সমর্থনের জন্য এবং একসঙ্গে যা অর্জন করেছি, সেসব নিয়ে আমি গর্বিত। ওদের কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আশা করছি, ওরা বুঝবে। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ভক্তদের কাছে গভীর দুঃখপ্রকাশ করছি যে, অ্যাশেজের আগে আমাদের খেলাটায় প্রভাব ফেলছে আমার অতীতের আচরণ। ভক্ত-সমর্থক ও বৃহত্তর সম্প্রদায়ের জন্য যেভাবে হতাশার কারণ হয়েছি, সেজন্য আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমার সৌভাগ্য যে অসাধারণ, ভালোবাসাময় ও সহনীয় এক পরিবার পেয়েছি আমি। ওদেরকে কষ্ট দিয়েছি জেনে আমার হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে। ওরা সবসময় আমার পাশে থেকেছে, আমার সবচেয়ে একনিষ্ঠ ভক্ত ওরা এবং ওদের সমর্থনের ঋণ আমি শোধ করতে পারব না। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দলের নিবেদিত একজন সদস্য হয়ে থাকব আমি এবং দারুণ একটি অ্যাশেজের দিকে তাকিয়ে থাকব।’
শেষ কথাটিতে পেইন জানিয়ে দিয়েছেন, নেতৃত্ব ছাড়লেও দলে খেলে যেতে চান তিনি। তবে এই ঘটনার পর তার দলে সুযোগ পাওয়াটাই হবে বিস্ময়। অ্যালেক্স কেয়ারি ও জন ইংলিসের মধ্যে একজন হয়তো এবার অ্যাশেজে হবেন অস্ট্রেলিয়ার কিপার-ব্যাটসম্যান। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াও মেনে নিয়েছে পেইনের পদত্যাগ। শিগগিরই তারা নতুন অধিনায়কের নাম ঘোষণা করবে। সহ-অধিনায়ক হিসেবে আপাতত নেতৃত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে প্যাট কামিন্স। তিনিই দায়িত্ব পেলে ৬৫ বছরের মধ্যে প্রথম ফাস্ট বোলিং অধিনায়ক পাবে অস্ট্রেলিয়া। আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু এবারের অ্যাশেজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।