চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
প্রতিটি স্বামী-স্ত্রী-ই চায় যে,তাদের সংসার সুখের হোক। ভালোবাসাতে ভরে থাকুক পুরো জীবন। দাম্পত্য জীবন সুখময় হোক। এরজন্য একেকজন একেকভাবে চেষ্টা করে থাকে। ক’জনকে পাবেন যে চায় তার সংসার কোলাহলে ভরে থাকুক।সংসারে অশান্তি আসুক। এরকম পাওয়া যাবে না। এমনিভাবে কোন মেয়েও কখনো চায় না যে, তার সংসারে অসুখী নেমে আসুক। তাদের বিচ্ছেদ ঘটুক।
এজন্যই দাম্পত্য জীবন সুখময় করার ক্ষেত্রে আল্লাহর রহমের সাথে-সাথে প্রতিটি স্ত্রী’র ভূমিকা থাকে অতুলনীয়। একজন আদর্শবান স্ত্রী-ই পারে একটা সংসারকে অন্যরকমভাবে সাজাতে। সবাই মিলেমিশে একসাথে বসবাস করতে।এজন্য স্ত্রীকে ঘরের রাণী বলা হয়ে থাকে। কোন পুরুষ যদি তার স্ত্রীকে রাণী বানিয়ে রাখে তাহলে স্ত্রীও নিজ স্বামীকে ঘরের রাজা বানিয়ে রাখবে।তাই সুখীময় জীবন যাপনে স্বামীর ভূমিকাও কম নয়।তবে এক্ষেত্রে স্ত্রী’র ভূমিকা অতুলনীয় এবং বেশি । প্রতিটি স্ত্রীকে স্বামীর প্রতি বিশেষ কিছু জিনিসের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাহলেই সকল সংসারে সুখ আসবে ইনশা আল্লাহ। তাই প্রতিটি মেয়েকে বলবো; অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি বিশেষ করে খেয়াল রাখা।
১. স্বামী ঘুম থেকে উঠার আগে নিজে উঠে পরিপাটি হয়ে নেওয়া,যাতে স্বামী আপনাকে সকাল বেলাই অপরিপাটি না দেখে। তার সাথে সুগন্ধি ব্যবহার করুন। যাতে সকালে আপনাকে দেখেই আপনার স্বামীর মন ভরে যায়। ২. তার ঘুম যেভাবে ভাঙ্গালে সে পছন্দ করবে, সেভাবে তাকে ঘুম থেকে জেগে তুলুন। ৩. তার প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে তবেই অন্য কাজে যাবেন এবং সে তার কাজে যাওয়ার সময় কপালে আর বুকে দুইটা ‘সুন্নতি স্পর্শ’ দিয়ে দিন।
৪. সে কখন বাসায় আসতে পারে তা অনুমান করে পরিপাটি হয়ে থেকে তার অপেক্ষা করুন এবং সে ডাকার সাথে সাথে দরজা খুলে দিন একটা মুচকি হাসি দিয়ে দিন।তার সাথে কথা বলার সময় সর্বদা হাসি মুখে কথা বলুন। ৫. তার সামনে কখনো গন্ধ নিয়ে যাবেন না। সবসময় একটা সুঘ্রাণ রাখুন নিজের শরীরে। ৬. পরিপূর্ণ পর্দা করুন। ৭. স্বামীকে তাহাজ্জুদ এবং ফজরের নামাজের জন্য ডেকে দিন। আল্লাহর তরফ হতে স্বামীর হৃদয়ে আপনার প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা জন্ম নিবে। ৮. স্বামীর মনে কখনো আঘাত দিয়ে কথা বলবেন না।
৯. কখনো স্বামীকে নিজের উপর রাগ হতে দিবেন না বরং স্বামী যে ইশারায় চালাতে চায় সে ইশারায় চলুন (নাফরমানী কাজ ব্যতিত)। ১০. স্বামী কোন কাজ করতে আদেশ করলে সাথে সাথে হাসি ও খুশির সহিত কাজ করে দিন। ১১. স্বামীর কাছে থাকাকালীন তার অনুমতি ব্যতিত কোন নফল ইবাদাত করবেন না। স্বামীর খেদমত অন্যান্য নফল ইবাদাত থেকেও উত্তম। ১২. পৃথিবীর কোন মানুষের গিবত না করা। ১৩. স্বামীর হুকুম ছাড়া স্বামীর মাল থেকে কাউকে দান বা ঋণ না দেয়া । এটা জায়েজ নেই।
১৪. স্বামীর কোন দোষের কথা পৃথিবীর কোন মানুষকে না বলা। বরং স্বামীর মাথা যখন একদম ঠাণ্ডা থাকবে তখন স্বামীকে হাসিমুখে বিনয়ের সহিত তার ভুল ধরিয়ে ও শুধরে দেওয়ার চেষ্টা করা। ১৫. স্বামীর কোন কাজ নিজের মতের বিরুদ্ধে হলেও তর্ক না করা। ১৬. স্বামী যা আনুক তা এক টাকার হলেও এমন একটা ভাব করুন যেন এটা আপনার কাছে ভিষণ পছন্দ হয়েছে। এতে পুরুষেরা স্বস্তি পায়। ১৭. স্বামীর বাড়িতে যতই কষ্ট থাকুক, স্বামীর সাথে সমাধানের চেষ্টা করুন। তবে হায় হতাশা করে স্বামীকে কষ্ট দিবেন না।
১৮. স্বামীর মেজাজ বুঝে ব্যবহার। তার মুখে হাসি থাকলে আপনিও হাসুন। আর তার মনে কোন কারণে খারাপ থাকলে আপনিও তার মন খারাপের ভাগিদার হোন, মন খারাপের সময় হেসে এটা প্রকাশ করবেন না যে তার মন খারাপে আপনার কিছু যায় আসে না। আর মেজাজ খারাপ থাকলে একদম চুপ থাকবেন। ১৯. স্বামী আপনাকে যে টাকা দিবে তা ১০০% তাকে হিসাব দিয়ে দিন।আপনার ওপর একটা অন্যরকম বিশ্বাস সৃষ্টি হবে ইনশাআল্লাহ। ২০. শ্বশুড়-শাশুড়ির সেবা করুন এবং শ্বশুড় বাড়ীর সকলকে ভালোবাসুন।
২১. স্বামীকে মনের ভুলেও কাজ করতে দিবেন না। বরং তাকে ঠিক কাচের পুতুলের মতো রাখার চেষ্টা করুন। ২২. ঘরের কাজ কারো জন্য ফেলে রাখবেন না। ২৩. স্বামী বাবা-মা এর কাছে টাকা দিলে তা নিয়ে মন খারাপ করবেন না। (তাদের ছেলের টাকা তারা নিবে না তো কে নিবে?) ২৪. স্বামী কোন সফর থেকে ফিরলে তাকে খেদমত করুন, প্রশ্ন করুন পরে।
উপরোক্ত বিষয় গুলো দেখলে হয়তো একদল নারীবাদী বলে থাকবেথ এতে স্বামীর গোলামী ছাড়া আর কিছুই নয়! আমি বলবো এগুলো গোলামী নয়। বরং এগুলো হচ্ছে দাম্পত্য জীবন সুখময় হওয়ার কিছু টিপস। যার অভিজ্ঞতা হাজারো জনের রয়েছে।
মনে রাখবেন,আপনি অন্যের জন্য যা করবেন অন্যও আপনার জন্য তা করতে বাধ্য হবে। আপনি উপরোক্ত টিপস গুলো মেনে চলেন,তাহলে দেখবেন অবাধ স্বামীটাও একদিন এরকম হবে যে,আপনাকে ছাড়া থাকতে পারবে না। আপনার জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত থাকবে।ভালোবাসাতে কোন কমতি করবে না। ঝগড়াঝাটি করা বা আপনাকে দু’চোখে দেখতে না পারা শ্বশুর-শাশুড়ীও আপনার হাতে খাবার না তুলে দিলে খেতেই চাইবে না। আপনাকে ছাড়া কিছুই বুঝবে না। তাই পরিশেষে বলি,অন্যের জন্য করুন অন্যও আপনার জন্য করবে। ইনশা আল্লাহ। এভাবেই গড়ে উঠবে সুখময় দাম্পত্য জীবন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের বোনদেরসহ সবাইকে আমল করার ও বুঝার তৌফিক দান করুন,আমীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।