পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অপরাধের অভিযোগ তদন্ত করতে স্বাধীন ‘পুলিশ অভিযোগ তদন্ত কমিশন’ গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে দায়ের করা রিটের শুনানি যে কোনো দিন। গতকাল সোমবার রিটটি শুনানির জন্য আদালতের দৈনন্দিন কার্যতালিকায় উঠেছে।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চে রিটের শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে ‘পুলিশ অভিযোগ তদন্ত কমিশন’ নামে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের ১০২ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির রিট দায়ের করেন। রিটে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপিকে) বিবাদী করা হয়েছে।
রিটে তদন্ত কমিশন গঠনের জন্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, অবসরপ্রাপ্ত আইজিপি, অবসরপ্রাপ্ত সচিব, আইনের শিক্ষক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গঠনের অন্তর্বর্তীকালিন নির্দেশনা চাওয়া হয়। এ কমিটি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতামত সংবলিত প্রতিবেদন তৈরি করে আদালতে দাখিল করবে।
রিটের পিটিশনে ১৪৫ পৃষ্ঠার আবেদনের সঙ্গে সংযুক্তি আকারে ১ হাজার ৫২২ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট দেয়া হয়েছে। রিটে ৮টি যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী গঠনের উদ্দেশ্য, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবদান, পুলিশের গৌরবময় অর্জনের বর্ণনা রযেছে। তাদের শৃঙ্খলা বিধানের বর্তমান আইনি কাঠামো সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে পুলিশ সদস্যদের সংঘটিত অপরাধ ও অসদাচরণের বিবরণ দেয়া হয়েছে। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ৫৮৯টি এ সংক্রান্ত ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। ঘটনাগুলোর সংবাদ রিট আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এসব ঘটনা পর্যালোচনায় দেখা যায়, পুলিশ বাহিনীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বিচারবহির্ভূত হত্যা, হেফাজতে মৃত্যু ও নির্যাতন, গুম, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়, খুন, মারধর, হুমকি ও হয়রানি, ধর্ষণ, ইভটিজিং ও নারী নির্যাতন, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও লুটপাট, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, ঘুষ-বাণিজ্য ও ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়, জমি দখল ও সম্পত্তি বিনষ্টকরণ, মাদক ব্যবসা ও উদ্ধারকৃত মাদক আত্মসাৎ, আটক বাণিজ্য, অপরাধীদের আশ্রয়, প্রশ্রয় ও টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া, মামলা নিতে গড়িমসি ও মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ, মিথ্যা ও পাল্টা মামলা দিয়ে হয়রানি, তদন্তে গাফিলতি, হয়রানি ও ঘুষ নেয়া, সাংবাদিক নির্যাতন, কর্তব্যে অবহেলা, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিনষ্টকরণ ও আসামিদের নাম বাদ দেয়া এবং নিয়োগ, পদায়ন ও পদোন্নতিতে দুর্নীতিসহ ১৮ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। অথচ বিদ্যমান আইনি কাঠামোর দুর্বলতায় এসবের কোনো প্রতিকার নেই।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে স্বাধীন তদন্ত কমিশনের অভাবকে এর প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ কর হযেছে রিটে। অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, দৃষ্টান্ত হিসেবে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ৬টি মামলার কপি সংযুক্ত করা হয়েছে। এসব মামলায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা চূড়ান্ত রিপোর্ট বা আপসের মাধ্যমে অব্যাহতি বা খালাস পেয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তদন্ত’ হলো বিচারের প্রাথমিক ধাপ। ন্যায়বিচারের জন্য প্রধান শর্ত হলো সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত। সুষ্ঠু তদন্ত সংবিধানের ৩৫(৩) ও ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ব্যক্তির মৌলিক অধিকার। বর্তমান আইনি কাঠামোতে পুলিশের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্তভার পুলিশের ওপরই ন্যস্ত। ফলে তদন্ত প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে ২০০৭ সালে ‘পুলিশ অধ্যাদেশ’ নামে একটি আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশের ৭১ দফায় ‘পুলিশ কমপ্লেইন কমিশন’ গঠনের বিধান প্রস্তাব করা হয়।
কিন্তু সেই খসড়া অধ্যাদেশ আজও আইনে পরিণত হয়নি। রিটে ৮টি আন্তর্জাতিক কনভেনশন ও নীতিমালা সংযুক্ত করা হয়েছে। এসব আন্তর্জাতিক দলিলে পুলিশের অপরাধ তদন্তে পৃথক কর্তৃপক্ষ/কমিশন গঠনের জোর তাগিদ দেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, ভারতসহ বিশ্বের অন্তত ২৫টি দেশে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র তদন্ত কমিশন কার্যকর রয়েছে। ২০০৬ সালে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট বিখ্যাত ‘প্রকাশ সিং বনাম ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়া’ মামলায় পুলিশ ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য ৭ দফা নির্দেশনা প্রদানের নজিরও যুক্ত করা হয়েছে রিটে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।