পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘অচেনা’ এক প্রাণীর আক্রমণে আতঙ্কে দিন পার করছে গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার হরিনাথপুর ও তালুক কেঁওয়াবাড়িসহ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা। ইতোমধ্যে প্রাণীটির আক্রমণে একজন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়া শিশুসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। প্রাণীটির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে গ্রামের ছোট-বড় সবাই লাঠি হাতে চলাফেরা করছে।
স্থানীয়রা জানায়, গত এক মাস ধরে অচেনা এই প্রাণীর আক্রমণে হরিনাথপুর, তালুকজামিরা, কেঁওয়াবাড়ি, দেওয়ানের বাজার ও কুমতিপুরের শিশুসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আমরুল ইসলাম (৩২), হামিদ মিয়া (৪০), সুমি বেগম (৪০) ও মনজিলা বেগমের (৩৮) অবস্থা গুরুতর।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে বাড়ির পাশে ঘাস কাটতে গিয়ে ওই প্রাণীর প্রথম হামলার শিকার হন স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম ফেরদৌস সরকার রুকু (৫৫)। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। হামলার ১৮ দিন পর নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়।
সর্বশেষ গত রবিবার দাদার বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফেরা পথে হামলা শিকার হয় কেঁওয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র রাব্বী শেখ। এ সময় তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে মায়ের ওপরও হামলা করে প্রাণীটি।
আহত আমরুল ইসলাম, হামিদ মিয়া ও মনজিলা বেগম জানান, বাড়ির পাশে কাজ করার সময় হঠাৎ করে প্রাণীটি তাদের আক্রমণ করে। এতে তাদের মুখ-চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ জখম হয়। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর কিছু সুস্থ তারা।
গ্রামবাসী বলছে, অচেনা এই প্রাণীটি দেখতে শিয়ালের মতো। লাল, সাদা ও ধূসর রঙের প্রাণীটির শরীরে ডোরাকাটা দাগ রয়েছে। সামনের পা দুটি ছোট হলেও মুখটা লম্বা এবং লেজ আকারে বেশ বড়। ধানক্ষেত কিংবা জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা প্রাণীটি দিনে কিংবা রাতে মানুষ দেখলে হঠাৎ আক্রমণ করছে। প্রাণীটির আক্রমণে দুটি কুকুরও মারা গেছে।
কেঁওয়াবাড়ি গ্রামের সাইদুর রহমান ও সাইফুল ইসলাম টিপু জানান, হাট-বাজার ও স্কুল-কলেজে যাওয়ার সময়ও অনেককে আক্রমণ করছে এই প্রাণী।
তালুক জামিরা গ্রামের নাজিম উদ্দিন জানান, গ্রামবাসী এখন ভয়-আতঙ্কে দিন পার করছে। ছোট-বড় সবাই বাড়ির বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছে। ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠানোও বন্ধ করে দিয়েছেন অনেক অভিভাবক। গত এক মাস ধরে এ অবস্থা চললেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসনের কেউ তাদের খোঁজ-খবর নেয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
হরিনাথপুর, তালুকজামিরা ও কেঁওয়াবাড়ি ছাড়াও দেওয়ানের বাজার, কুমিতপুর, ব্রাক্ষবাড়ি, হরিণাবাড়ি ও তালুক কেঁওয়াবাড়িসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে প্রাণীটির আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাফুজার রহমান সরকার জানান, জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত শিয়াল কিংবা কুকুর জাতীয় এই প্রাণীটি লোকালয়ে ঢুকে মানুষ ও প্রাণীর ওপর আক্রমণ করছে। প্রাণীটিকে শনাক্ত করাসহ আটকের চেষ্টা চলছে।
হরিণাবাড়ি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোহাম্মদ রাকিব হোসেন জানান, প্রাণীটির আক্রমণের বিষয়টি তাদের জানা আছে। এ বিষয়ে নজরদারিসহ স্থানীয়দের আতঙ্কিত না হয়ে সাবধানে চলাচলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাণীটি শনাক্ত করাসহ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।