Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বরিশালের নদীতে ইলিশের আকালের মধ্যে পাঙ্গাসের আধিক্য

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০২১, ১২:৪৩ পিএম

ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করতে মৎস্য আহরনে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার পরে মেঘনার শাখা নদ-নদীগুলোতে পাঙ্গস মাছের প্রচুর্য জেলেদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে। বরিশাল ও ভোলার ইলিশ মোকামের আড়তগুলোতে পাঙ্গাসের অধিক্য আড়তদারদের ২২ দিনের বিপনন নিষেধাজ্ঞার ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে। প্রতিদিনই বরিশালের মাছের আড়তে বিপুল সংখ্যক পাঙ্গাস নিয়ে আসছে জেলেরা। বাজারেও শীতের এ মাছের প্রচুর্যে খুশি উচ্চবিত্ত ও উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। দ্বীপজেলা ভোলার পূূর্বপাশে ভাটি মেঘনা আর পশ্চিমের তেতুলিয়া নদীর ভাটিতে সাগর মোহনা থেকে এসময়ে যে পরিমান ইলিশ উজানে উঠে আসার কথা, তার যথেষ্ঠ ঘাটতিতে জেলেদের মুখের হাসি মিলিয়ে যাবার মধ্যেই প্রচুর পাঙ্গাস মাছ ধরা পড়ায় ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে।
গত কয়েকদিনে ধরেই ভোলার উজানে চাঁদপুরের ভাটিতে বরিশালের হিজলা সংলগ্ন মেঘনা ও এর শাখা নদ-নদীগুলোতে প্রচুর পঙ্গাস মাছ ধরা পড়ছে। ৩ থেকে দশ কেজি ওজনের এসব মাছ নদীতেই ৩শ থেকে ৫শ টাকা কেজিতে বিক্রী হলেও দুÑতিন হাত ঘুরে ভোক্তার কাছে যখন পৌছছে তখন তা ৮শ টাকা কেজি। তার পরেও গত কয়েকদিন ধরে বাজারে পাঙ্গাসের প্রাচুর্য মধ্যবিত্ত ও উচ্চÑমধ্যবিত্ত পরিবারের খাবারে ভাল আমিষের যোগান দিচ্ছে।
মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, শীতের সময় মেঘনা ও এর শাখা নদ-নদী সহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদীতে প্রচুর পাঙ্গাস মাছও ধড়া পরে। এবার তা কিছুটা আগেই মেঘনা ও তেতুলিয়ার ভাটি থেকে উজানে চলে এসেছে। এমনকি বিজ্ঞানীদের সরেজমিন গবেষনায় ২০১৯ সালে ইলিশের মূল প্রজনকালীন ২২ দিনে দেশের প্রধান ইলিশ প্রজননক্ষেত্র সমুহে পরিক্ষামূলক নমুনায়নে ৮৩% ইলিশের রেনুর সাথে ১৭% অন্যান্য মাছের রেনু পোনাও পাওয়া যায়। ফলে ইলিশ আহরন নিষদ্ধকালীন ২২ দিনে উপক’লে অন্যান্য মাছেরও নিরাপদ প্রজনন স¤পন্ন হচ্ছে বলে নিশ্চিত হয়েছেন মৎস্য বিজ্ঞানীগন। যা দেশে অন্যান্য প্রজাতির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে জানিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর। এবার নদ-নদীতে গত কয়েকদিনের পাঙ্গাসের আগাম বিচরনকে অত্যন্ত ভাল লক্ষন মনে করে সহনীয় আহরনের ওপর গুরুত্ব দিতে চান মৎস্য বিজ্ঞানীগন।
এ ব্যাপারে মৎস্য অধিপ্তরের বরিশালের বিভাগীয় উপ-পরিচালকের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, ইলিশ প্রজননের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময় অন্যান্য মাছেরও নিরাপদ প্রজনন বৃদ্ধি পাওয়ায় নদ-নদীতে শুধু পাঙ্গাস নয় বিভিন্ন মাছেরও প্রাচুর্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত ভাল লক্ষন বলেও মনে করেন তিনি। তবে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার পরেও নদ-নদীতে ইলিশের প্রচুর্য কিছুটা কম থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি জানান, অভিপ্রয়াণী মাছ ইলিশ জীবনচক্রে স্বাদু পানি থেকে নোনা পানিতে এবং সেখান থেকে পুনরায় স্বাদু পানিতে অভিপ্রয়ান করে। উপক’লের ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটারের মূল প্রজনন ক্ষেত্রে মূক্ত ভাসমান অবস্থায় ডিম ছেড়ে বেশীরভাগ ইলিশই আবার সাগরের নেনা পানিতে বিচরন করছে। সুতরাং প্রজননত্তর এসময়ে দেশের অভ্যন্তরীন নদ-নদীতে ইলিশের বিচরন অনেকটা সিমিত থাকাই স্বাভাবিক বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ