পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলামই একমাত্র গ্রহণযোগ্য সার্বজনীন কল্যাণময়ী ধর্ম। যা সকল ধর্মের মানুষের জান মাল ইজ্জত-আব্রু ও অধিকার নিশ্চিত করেছে। নিশ্চয় ইসলামই আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনিত ধর্ম। আর যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো ধর্ম (জীবন বিধান, অনুশাসন) গ্রহণ করে তা আল্লাহর নিকট কখনও গ্রহণ যোগ্য হবে না। গতকাল জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে মসজিদের পেশ ইমাম এসব কথা বলেন। জুমার বয়ানে পেশ ইমামরা মুসল্লিদের উদ্দেশে রবিউল মাসের গুরুত্ব ও তৎপর্য তুলে ধরেন।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ পেশ ইমাম মুফতি মুহিউদ্দীন কাসেম গতকাল জুমার বয়ানে বলেন, পবিত্র কোরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে (হে নবী!) আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তাহলে আমার আনুগত্য করো। ফলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ মাফ করে দিবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত ৩১)। পেশ ইমাম বলেন, কারণ রাসূলের আদর্শ সর্বোত্তম আদর্শ। কোরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সূরা আল-আহজাব, আয়াত: ২১)।
সুতরাং আমাদের স্মরণ রাখতে হবে এই উত্তম আদর্শের অনুসরণ অনুকরনের মাঝেই আমাদের ইহকাল এবং পরকালে শান্তি সফলতা নিহিত আছে। তবে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ভালোবাসতে হবে সেভাবে যে ভাবে সাহাবায়ে কেরাম ভালোবেসেছেন। সাহাবায়ে কেরাম নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে রাসূলকে ভালোবেসেছেন। এজন্যই রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার সাহাবায়ে কেরাম উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো তোমরা যে কারো অনুসরণ করবে হেদায়েত পেয়ে যাবে। তাছাড়া কোরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে, তোমরা ঈমান আন যেমনি ঈমান এনেছেন মানুষগণ অর্থাৎ সাহাবাগণ। (সূরা আল বাকারা, আয়াত ১৩) সুতরাং তাদের ঈমান ও আমল অনুযায়ী আমাদের ঈমান ও আমল হওয়া উচিত। আল্লাহপাক আমাদেরকে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ভালোবাসায় আমাদের অন্তরকে পূর্ণ করে দিন এবং জীবনের প্রত্যেকটা কাজ সুন্নাত অনুযায়ী করার তৌফিক দান করুন। আমীন!
মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী বাইতুল মামুর জামে মসজিদ এর খতিব মুফতি আব্দুর রহীম কাসেমী গতকাল জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে বলেন, মানবতার মুক্তির দিশারী সফল রাষ্ট্রনায়ক মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমেই সুষ্ঠু ও কল্যাণময়ী রাষ্ট্র পরিচালনা নিশ্চিত করা যায়। আজও সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি, শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম অক্ষুণ্ন রেখে রাসূলের আদর্শে আল্লাহ দেয়া নির্দেশনাবলী বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। খতিব আরও বলেন, আজ দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট ও প্রমাণিত যে, ইসলামই একমাত্র গ্রহণযোগ্য, সার্বজনীন কল্যাণময়ী ধর্ম, যা সকল ধর্মের মানুষের জান মাল, ইজ্জত-আব্রু ও অধিকার নিশ্চিত করেছে। যার প্রেক্ষিতে আল্লাহর অশেষ কৃপায় অনেক অমুসলিম ভাইয়েরাও ইসলামের সত্যতা, সভ্যতা ও সৌন্দর্যতা অবলোকন করত : ইসলাম গ্রহণে ধন্য হয়েছেন। কারণ আল্লাহ তায়ালার নিকট মনোনিত ধর্ম ইসলাম। তাই ইসলাম ছিল আছে থাকবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন; নিশ্চয় ইসলামই আল্লাহর নিকট একমাত্র মনোনিত ধর্ম। আর যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো ধর্ম (জীবন বিধান, অনুশাসন) গ্রহণ করে তা আল্লাহর নিকট কখনও গ্রহণযোগ্য হবে না। (সূরা আল ইমরান, আয়াত নং ১৯, ৮৫)। আল্লাহ আমাদের সকলকে ইসলামের বিধান পালন করার তৌফিক দান করুন। আমীন!
ঢাকা উত্তরা ৩ নং সেক্টর মসজিদ আল মাগফিরাহ এর খতিব মুফতি ওয়াহিদুল আলম গতকাল জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে বলেন, নবী কারীম (সা.) এর জন্ম গ্রহণের মাস রবিউল আউয়ালে আমাদের জন্য করণীয় কী? নবীজী আমাদেরকে কী আমল শিখিয়েছেন? ১ নং আমল হলো প্রতি সোমবার রোজা রাখা।
হযরত আবু কাতাদা (রা.) বলেন, নবী কারীম (সা.)-কে সোমবার রোজা রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হয়। তিঁনি বলেন, এই দিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দিনই আমি নবুওয়তপ্রাপ্ত হয়েছি। (মুসলিম শরিফ)। নবী কারীম (সা.) নিজে প্রতি সোমবার রোজা রাখতেন। আর এই সাপ্তাহিক রোজার আমল সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে গুরুত্বের সাথে ছিল। খতিব বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ রা. সূত্রে বর্ণিত নবী কারীম (সা.) বলেন, কেয়ামতের দিন সবচেয়ে উত্তম মানুষ আমার নিকট সে, আমার প্রতি যার দরুদ শরীফ বেশি জমা হবে। (তিরমিজি)। আল্লাহ সবাইকে তৌফিক দান করুন। আমীন!
মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী আজ জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে বলেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম মৃত্যুসহ নানা কারণে রবিউল আউয়ালের মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। জীবনঘনিষ্ঠ অনেক পালনীয় বিষয় এ মাসের সাথে সম্পৃক্ত। বিশ্বনবীর সীরাত হলো মানব জীবনের সর্বোত্তম নমুনা। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনের সূরা আহযাবের ২১ নং আয়াতে ইরশাদ করেন, ‘অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ তায়ালা ও পরকালের প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করে।’ এই আয়াতে আল্লাহ পাক রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন। আর তা হচ্ছে, তিনি আল্লাহভীরুদের জন্য ‘উসওয়ায়ে হাসানা’ বা উত্তম আদর্শ। আর শেষ দিবসকে ভয় করে এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে।
খতিব আরও বলেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনও আত্মমর্যাদা বোধবশত কাউকেই তুচ্ছজ্ঞান ও হেয়প্রতিপন্ন করেননি। জাতি ধর্ম বর্ণ দলমত নির্বিশেষে সব মানুষের সঙ্গে সদাচরণ করে পৃথিবীর বুকে শ্রেষ্ঠতর স্বভাব-চরিত্রের অতুলনীয় আদর্শ স্থাপন করেছেন। তাঁর স্বভাব-চরিত্রের মধ্যে বিনয় ও নম্রতা ছিল সদা জাগ্রত। সর্বোত্তম আদর্শের বাস্তবায়নকারী ও প্রশিক্ষক হিসেবেই তাঁকে বিশ্বমানবতার কল্যাণের জন্য পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি উত্তম চরিত্রের পরিপূর্ণতা সাধনের জন্যই প্রেরিত হয়েছি।’ (মুসনাদে আহমাদ, মিশকাত)। সীরাতের আয়নায় আমাদের আমলকে পর্যালোচনা করে যাবতীয় ত্রুটিগুলো সংশোধন করতে হবে। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করেন। আমীন!
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, আল্ল¬¬ামা পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ বলেছেন, মানতার মুক্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বারতা নিয়েই রাসুলে করিম (সা.) দুনিয়াতে এসেছিলেন। সৎ ও সোজা রাস্তায় চলতে মহান আল্লাহ তার আউলিয়াদের নির্দেশ দিয়েছেন। আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় গতকাল শুক্রবার নামাজে জুমার বয়ানে তিনি এ কথা বলেন। নগরীর ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা সংলগ্ন জুলুস ময়দানে পবিত্র জুমার নামাজে মুসল্লির ঢল নামে।
নামাজ শেষে আল্লামা পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহর হাতে হাজার হাজার মুসল্লি সিলসিলায়ে আলীয়া কাদেরিয়া ত্বরিকায় দিক্ষিত হন। ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারী জেনারেল মুাহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, এডিশনাল জেনারেল সেক্রেটারী মুহাম্মদ সামশুদ্দিন, জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারী মুাহাম্মদ সিরাজুল হক, এ্যাসিস্টেন্ট জেনারেল সেক্রেটারী এস এম গিয়াস উদ্দিন শাকের, প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারী প্রফেসর কাজী শামসুর রহমান, গাউসিয়া কমিটির চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।