পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রথমে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর ওপর যে ওহী আসত, তা ছিল নিদ্রায় শুভ স্বপ্ন। তিনি যে স্বপ্নই দেখতেন, তা উসার আলোর মতো সুস্পষ্ট হতো। তারপর তার নিকট নির্জনতাকে প্রিয় করা হলো। তখন তিনি ‘হেরা গুহায়’ নির্জনে থাকতে লাগলেন। তিনি সেখানে কয়েকদিন ধরে সরে আমার পূর্বে ইবাদত করতেন এবং এর জন্য তিনি খাদ্য নিয়ে যেতেন। অত:পর তিনি হজরত খাদিজা (রা:) এর নিকট ফিরে আসতেন এবং আবার খাদ্য নিয়ে যেতেন। আবার কখনো কখনো হজরত খাদিজা (রা:) খাদ্য পৌঁছে দিয়ে আসতেন।
অবশেষে ‘হেরা গুহাতে’ থাকা অবস্থায়ই তাঁর নিকট সত্য আসল। ফিরিশতা (জিব্রাঈল (আ:) তাঁর নিকট এসে বললেন : পড়ুন! তিনি বললেন : আমি তো পড়ুয়াছাত্র নই। রাসুল (সা.) বলেছেন, তখন তিনি আমাকে এমনভাবে চেপে ধরলেন যে, আমার কষ্ট চরমে পৌঁছল। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পড়ুন! আমি বললাম, আমি তো পড়ুয়াছাত্র নই। তারপর তিনি আমাকে দ্বিতীয়বার চেপে ধরলেন এবং আমার কষ্ট চরমে পৌঁছল। তখন তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পড়ুন! আমি বললাম, আমি তো পড়ুয়াছাত্র নই। তখন তিনি আমাকে তৃতীয়বার চেপে ধরলেন। তারপর ছেড়ে দিয়ে বললেন, ‘পড়ুন! আপনার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন, মানুষকে সৃষ্টি করেছেন জমাট রক্ত হতে, পড়ুন! আপনার প্রভুর অতি মহান যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন যা সে জানত না’।
এই বাণী নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) গৃহে ফিরলেন এমন অবস্থায় যে, তাঁর হৃৎপিণ্ড ধড়ফড় করছিল। তিনি খাজিদা বিনতে খুওয়াইলিদের নিকটে এসে বললেন : আমাকে ঢেকে দাও, আমাকে ঢেকে দাও। তখন (বাড়ির লোকেরা) তাঁকে ঢেকে দিল এবং তাঁর শঙ্কা দূর হলো। তিনি ব্যাপারটি খাদিজাকে জানিয়ে বললেন : ‘আমার প্রাণের ভয় হচ্ছে’। খাদিজা বললেন, কখনো নয়। আল্লাহর কসম! তিনি কখনো আপনাকে লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি তো আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করেন। অপরের বোঝা নিজে বহন করেন। নিঃস্বকে উপার্জনক্ষম করেন। অতিথিকে আহার্য দেন। দৈবদুর্বিপাকে মানুষকে সাহায্য করেন।
তারপর খাদিজা তাকে নিয়ে গেলেন স্বীয় পিতৃব্য পুত্র ওরাকা বিন নাওফাল এর নিকট। নাওফাল অজ্ঞতার যুগে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি হিব্রু ভাষা লিখতে জানতেন এবং তিনি আল্লাহ পাক যতটা চাইতেন ইঞ্জিল কিতাব লিখতেন। তিনি বৃদ্ধ ছিলেন এবং অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। খাদিজা বললেন, হে আমার পিতৃব্য পুত্র? আপনার ভ্রাতুস্পুত্রের কথা শুনুন। ওরাকা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে ভ্রাতুস্পুত্র! তুমি কী দেখ? রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে জানালেন তিনি যা কিছু দেখে ছিলেন। তখন ওরাকা তাকে বললেন, ইনি তো সেই ফিরিশতা যাকে আল্লাহ পাক মুসা (আ:) এর নিকট পাঠিয়ে ছিলেন। হায়! আমি যদি যুবক থাকতাম, হায় আমি যদি জীবিত থাকতাম ওই সময়ে যখন তোমার কাওমের লোকেরা তোমাকে বের করে দিবে! এতে রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তারা কি আমাকে বের করে দিবে? ওরাকা বললেন, হ্যাঁ। যে কেউ এরূপ কিছু এনেছে যা তুমি এনেছ, লোকেরা তারই শত্রুতা করেছে। আমি যদি তোমার সেদিন পাই, তবে নিশ্চয় তোমাকে জোরাল সাহায্য করব। এর কিছু দিনের মধ্যেই ওরাকা প্রাণ ত্যাগ করেন। এবং কিছু দিনের জন্য ওহি নাজিল বিরত থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।