Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফ্ল্যাটে ২ শিশু সন্তানসহ মায়ের লাশ

চট্টগ্রামের মীরসরাইতে ভাই ও বাবা-মাকে খুনের দায় স্বীকার বড় ছেলের

চট্টগ্রাম ব্যুরো ও মীরসরাই উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০২ এএম

নগরীর মুরাদপুরে একটি ফ্ল্যাট থেকে দুই শিশু সন্তানসহ মায়ের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। জেলার মীরসরাইতে একই পরিবারের তিন জনের গলা কাটা লাশ উদ্ধারের মাত্র ১২ ঘণ্টার মাথায় গতকাল শুক্রবার মুরাদপুরে তিন জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তারা হলেন সুমিতা খাতুন (৩২), তার কন্যা জান্নাতুন আইনুন (৭) ও আড়াই বছরের পুত্র চাঁদ বাবু ওরফে শান।
পুলিশ জানায়, মুরাদপুরের মোহাম্মদপুর এলাকার ইসমাইল কলোনির আটতলা এসএস হাউসের চতুর্থ তলা থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ভেতর থেকে বন্ধ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে সুমতিা ও শানের লাশ রশিতে ঝুলছিলো। খাটে পড়ে ছিলো আইনুনের নিথর দেহ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুমিতা খাতুনের স্বামী সোহেল রানাকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি পেশায় ইউনানি হারবাল ব্যবসায়ী।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মোখলেসুর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দুই শিশু সন্তানকে হত্যার পর মা সুমিতা আত্মহত্যা করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামীকে আটক করা হয়েছে। পাঁচলাইশ থানার ওসি জাহিদুল কবির বলেন, ভোরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে এক প্রতিবেশির ফোন পেয়ে পুলিশ ওই ফ্ল্যাটে যায়। পরে দরজা ভেঙ্গে লাশ তিনটি উদ্ধার করা হয়েছে।
খবর পেয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইর টিম ঘটনাস্থলে যায়। তারা সেখান থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে। ঘটনার সময় স্বামী সোহেল রানা বাসায় ছিলেন না বলে দাবি করেন। তবে প্রতিবেশিরা জানায় গত কয়েক দিন ধরে স্ত্রীর সাথে তার ঝগড়া চলছিলো।
ওসি জানান, দুই শিশুকে হত্যা করা হয়েছে, তবে সুুমিতার লাশের ময়না তদন্ত শেষে তার মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। তা ছাড়া এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা তা স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যাবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। সোহেল রানার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার খোসকা গ্রামে।
সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করায় মা-বাবা ও ভাইকে হত্যা
মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জে একই পরিবারের তিন জনকে গলা কেটে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন গ্রেফতার বড় ছেলে সাদেক হোসেন সাদ্দাম (৩০)। গতকাল বিকেলে তার জবানবন্দির বরাত দিয়ে জোরারগঞ্জ থানার ওসি নূর হোসেন মামুন ইনকিলাবকে বলেন, সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করায় বাবা, মা ও ভাইকে খুনের কথা স্বীকার করে সাদ্দাম। তার দেখানো মতো খুনে ব্যবহৃত ছুরিটিও উদ্ধার করার কথা জানান ওসি। তার স্ত্রী আইনুর নাহারকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি।
ওসি জানান, সাদ্দামের সাথে এই তিন খুনের ঘটনায় আরো কেউ জড়িত কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে মা জোছনা আরা (৪৫), বাবা মো. মোস্তফা সওদাগর (৫৬) ও মেজো ভাই আহমদ হোসেনকে (২৫) গলা কেটে হত্যা করে সাদ্দাম। বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার ৩নং জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামে মোস্তফা সওদাগরের বাড়ি থেকে পুলিশ লাশ তিনটি উদ্ধার করে। শেষ রাতে একে একে তিনজনকে গলা কেটে হত্যা করে সাদ্দাম। পিতা, মাতা ও ভাইকে খুনের পরও স্বাভাবিক ছিলো সে। ঘটনাকে ডাকাতির নাটক সাজানোর চেষ্টা করে সাদ্দাম। বারইয়ারহাটে থাকা ছোট ভাই আলতাফ হোসেনকে ফোনে জানায়, রাতে বাড়িতে ডাকাত হানা দিয়েছে। তারা বাবা, মা ও আহমদ হোসেনকে কুপিয়েছে। তুমি তাড়াতাড়ি আস, তাদের হাসপাতালে নিতে হবে।
আলতাফ বাড়ি ফিরে দেখেন তারা তিনজনই মৃত। পুলিশ জানায়, প্রথমে ঘটনাকে ডাকাতি বলার চেষ্টা করলেও এক পর্যায়ে সাদ্দাম নিজেই তিনজনকে খুনের কথা স্বীকার করেন। সম্প্রতি তার বাবা কিছু জমি অন্য ভাইদের নামে লিখে দেন। এ নিয়ে প্রায়ই বাবা, মার সাথে তার ঝগড়া হতো। এরমধ্যে মেজো ছেলের বিয়ের জন্য টাকা চাওয়ায় আবারও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। এর জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লাশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ