Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের বিরুদ্ধে আসন্ন সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুত চীন

যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান পরিস্থিতিকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

তাইওয়ান প্রণালীতে চীনের বর্ধিত সামরিক তৎপরতা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে খবরের শিরোনাম দখল করলেও এর পশ্চিমে হাজার হাজার মাইল দূরে, ২ হাজার ৮শ’ মাইল দূরে এবং সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে চীনের আরেকটি সীমান্তে বিরোধ ক্রমেই চরম আকার ধারণ করছে। চীনের মতে, তাদের সাথে অন্যান্য অঞ্চলগুলোর সীমান্ত বিরোধের মূলে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ভারত-চীন সীমান্ত পরিস্থিতি কেন এখন উত্তপ্ত, এ প্রশ্নের জবাবে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গেøাবাল টাইমস যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছে, ‘(ভারত) দেখছে যে, ওয়াশিংটন নয়াদিল্লিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়, যেমন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রায়ই ভারত সরকারের সঙ্গে আলাপচারিতা করেছেন এবং চীনের প্রবৃদ্ধিকে ব্যর্থ করে দেয়ার পরিকল্পনাটি যৌথভাবে আলোচনা করেছেন।’

প্রকৃতপক্ষে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত মাসে ওয়াশিংটনে বাইডেন এবং অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের প্রধানমন্ত্রীদের সাথে নিরাপত্তা সংলাপ বা কোয়াডের প্রথম উপস্থিত বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন, যা চারটি গণতান্ত্রিক দেশের একটি অনানুষ্ঠানিক কৌশলগত ফোরাম হিসাবে পরিচিত, এশিয়ায় চীনের উত্থান প্রতিহত করা যার মূল উদ্দেশ্য।

গত ১০ অক্টোবর পশ্চিম চীন-ভারত সীমান্তের মোলদোতে বৈঠকের ১৩তম রাউন্ডেও সমঝোতায় আসতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ভারত এবং চীন উভয়ই একে অপরকে অভিযুক্ত করতে শুরু করে। ভারত বলে যে, স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের জন্য চীনা পক্ষের একতরফা প্রচেষ্টা এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তি লঙ্ঘন সীমান্ত এলাকায় সমস্যার সৃষ্টি করেছে। চীনা পক্ষ এই সমস্যার সমাধানের জন্য কোন ‘দূরদর্শী প্রস্তাব’ উপস্থাপন করেনি।

অন্যদিকে, চীন ভারতকে ‘অযৌক্তিক এবং অবাস্তব দাবি’ করার জন্য অভিযুক্ত করেছে এবং আশা ব্যক্ত করেছে যে, ভারত সীমান্ত এলাকায় ‘পরিস্থিতি নিয়ে ভুল বুঝবে না’। এ বিষয়ে একটি বিস্তৃত নিবন্ধ গেøাবাল টাইমস ভারতকে সীমান্তের পূর্বাংশে নতুন ঘটনা ঘটানোর কাজে অভিযুক্ত করেছে এবং নতুন সঙ্ঘাতের বিষয়ে চীনা বিশেষজ্ঞদের সতর্কতার বরাত দিয়ে বলেছে যে, আলোচনার টেবিলে ভারতের উদ্ধত দাবি শুধু প্রত্যাখ্যান করাই নয়, নতুন ভারতীয় সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের জন্যও চীনের প্রস্তুত থাকা উচিত।’

পত্রিকাটি হিমালয় সীমান্তে পিএলএ গ্যারিসনের ঝুঁকিপূর্ণ দৈনন্দিন কাজের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ‘কমান্ডাররা সামনে টহল দিচ্ছে এবং সৈন্যরা যুদ্ধের অনুমতির জন্য আবেদন লিখছে। প্রতিবেদনটিতে এই অঞ্চলের অবকাঠামো তৈরির জন্য চীনের প্রচেষ্টার কথাও বলা হয় এবং বলা হয় যে, এসব পদক্ষেপ চীনের সৈন্যদের মনোবল এবং এলএসি বরাবর হটস্পটগুলোতে তাদের পৌঁছানোর ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে।

উল্লেখ্য, মাত্র ১৬ মাস আগে, হিমালয়ের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) দুই পারমাণবিক শক্তি চীন এবং ভারতের সৈন্যরদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে এবং বর্তমানে পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। সোমবার ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে চীনের বিরুদ্ধে আর সহযোগিতা না করার অভিযোগ তুলেছে। ভারতীয় পক্ষ উল্লেখ করেছে যে, চীনের পক্ষ থেকে স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের একতরফা প্রচেষ্টা এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তি লঙ্ঘনের কারণে এলএসিতে পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। ভারতের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তাই ভারতীয় পক্ষ অবশিষ্ট অঞ্চলগুলোর সমাধান করার জন্য গঠনমূলক পরামর্শ দিয়েছিল কিন্তু চীনা পক্ষ সম্মত ছিল না এবং কোনো অগ্রগামী প্রস্তাবও দিতে পারেনি।’

তবে, পরিস্থিতিটিকে ভিন্নভাবে দেখছে বেইজিং। পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ)-এর ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের মুখপাত্র কর্নেল লং শাওহুয়ার পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চীন সীমান্ত পরিস্থিতি সহজ ও ঠান্ডা করার জন্য ব্যাপক চেষ্টা করেছে এবং দুই সামরিক বাহিনীর মধ্যে সম্পর্কের সামগ্রিক স্থিতি বজায় রাখার জন্য সম্প‚র্ণ আন্তরিকতা প্রদর্শন করেছে। যাইহোক, ভারত এরপরেও অযৌক্তিক এবং অবাস্তব দাবির উপর জোর দিয়েছে, যা আলোচনাকে আরও কঠিন করে তোলে।’

সর্বশেষ কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনের পর, চায়না ফরেন অ্যাফেয়ার্স ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক লি হেইডং লিখেছিলেন, ‘কোয়াড সদস্যরা চীন হুমকি তত্ত¡ প্রচার করা বন্ধ করবে না। এই মাসের শুরুর দিকে তাইওয়ান সীমান্তে চীনের বিমান মহড়ার মধ্যে গ্লোবাল টাইমস বলেছিল, ‘যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপান স্ব-শাসিত দ্বীপটির চারপাশের পরিস্থিতিকে প্রান্তিকের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, তাৎক্ষণিক অনুভ‚তি তৈরি করছে যে যেকোনও সময় যুদ্ধ হতে পারে।’ এবং হিমালয়ের উপর সোমবারের গ্লোবাল টাইমসের একটি শিরোনামে বলা হয়েছে, ‘পিএলএ সীমান্ত সৈন্যরা আসন্ন সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুত।’ সূত্র : সিএনএন।

 

 



 

Show all comments
  • অচেনা পথিক ১৫ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৪২ এএম says : 0
    চিন অথবা ভারত সবাই ই তার নিজের সার্থের বাহিরে গিয়ে আমাদের ভালোবাসা দেখাবে না এটা চিরন্তন বাস্তবতা । চিন যেমন রোহিংগা ইস্যুতে আমাদের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে ঠিক তেমনিভাবে ভারত ও সমুদ্র সীমা নিয়ে আদালতের কাছে গিয়েছে,সেখানে যখন আমাদের পক্ষে রায় এসেছে ঠিক তার কিছুদিনের মাঝেই আবার তারা মহি সোপান অবৈধ ভাবে দাবি করছে।বলার এমন অনেক কিছু আছে তবে টাইম নেই। বুঝলে বুঝপাতা না বুঝলে তেজ পাতা
    Total Reply(0) Reply
  • Al Bahadur Mofid ১৫ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৪২ এএম says : 0
    গরু কে যতই বাঘ বানানোর চেষ্টা করো গরু কখনো বাঘ হবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul Razzak ১৫ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৪২ এএম says : 0
    ইনশাআল্লাহ ভারত ভেঙে একদিন টুকরো টুকরো হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Borhan Azmeer ১৫ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৪৩ এএম says : 1
    সরাসরি যুদ্ধে জড়ালে চীনের ক্ষতি। তবে শীতল যুদ্ধে গেলে লাভবান হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Faizul Ashkar ১৫ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৪৩ এএম says : 0
    চিন এগিয়ে যাও।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Nuruzzaman ১৫ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৪৪ এএম says : 0
    চীন চাইলে মুহূর্তের ভিতরে ধ্বংস করে দিতে পারবে,,ভারত
    Total Reply(0) Reply
  • মোস্তফা সওদাগর ১৫ অক্টোবর, ২০২১, ৬:০০ এএম says : 0
    চিন এতোটাই শক্তিশালী দে-শ ভারতের কল্পনার বাহিরে
    Total Reply(0) Reply
  • salman ১৫ অক্টোবর, ২০২১, ৭:২২ এএম says : 0
    China agye jao, Bangladesh er Jono gon tomader sathe. India k akta chorom Dholai dorkar.
    Total Reply(0) Reply
  • Hira Khan ১৫ অক্টোবর, ২০২১, ১:০৬ পিএম says : 0
    ভারতের দিন শেষ ভারতের মত একটা বাজে দেশ এই পৃথিবীতে আর একটা নাই এরা শুধু নিজেদের স্বার্থেই বোধহয় অন্য কারো কোনো স্বার্থ বোঝে না ভারতের কোন প্রতিবেশী সাথে তার ভাল সম্পর্ক নেই
    Total Reply(0) Reply
  • Ala Uddin Khan ১৫ অক্টোবর, ২০২১, ১:০৬ পিএম says : 0
    ভারত শক্তের ভক্ত নরমের জম,এ দেশ টার জন্যে চিন পাকিস্তান আফগানিস্তানের প্রতিরোধ প্রয়োজন।
    Total Reply(0) Reply
  • ফুরাদ আহমেদ ১৫ অক্টোবর, ২০২১, ৩:২৯ পিএম says : 0
    চীন- ভারত যুদ্ধ এ অন্চলের শান্তি ও স্হিতিশীলতাকে বিনষ্ট করবে।আমাদের অর্থনীতির উপরও প্রভাব পরবে। তাই এই দুই পরাশক্তির মধ্যে শান্তিপূর্ন সমাধানই আমাদের কাম্য।
    Total Reply(0) Reply
  • Md m sikdar ১৮ অক্টোবর, ২০২১, ৭:৪৪ এএম says : 0
    ইনশাআল্লাহ ভারত একদিন খন্ড ভিখন্ড হয়ে যাবে
    Total Reply(0) Reply
  • Utshab ২৩ জানুয়ারি, ২০২২, ৯:৩০ পিএম says : 0
    ভারত সম্পকে চীন ভাবতে পারেনি ভারত কতটা শক্তি শালী
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ