মানবপাচার আইনে বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক-কর্মচারীদের হয়রানি ও গ্রেফতার বন্ধের দাবিতে আজ সোমবার ভুক্তভোগী রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা পুলিশ মহাপরিদর্শকের দপ্তরে স্মারকলিপি পেশ করেছেন। স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর স্বার্থ বিরোধী ধারাগুলো সংশোধন না আনায় জনশক্তি রফতানিকারকরা সামাজিক ও মানুষিকভাবে লাঞ্ছিত-বঞ্চিত হচ্ছে। এই আইনে জামিন অযোগ্য ধারায় রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা জেল জুলুল ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বৈধভাবে কর্মী পাঠিয়ে মানবপাচার আইনে জেল জুলুমের শিকার হওয়া মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সরকারের যথাযথ বিধিবিধান প্রতিপালন করে বিএমইটির স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৈধ ভাবে কর্মী প্রেরণকারী রিক্রুটিং এজেন্সি সমূহের বিরুদ্ধে মানব পাচার ও দমন আইন ২০১২ এর আওতায় মামলা গ্রহণ না করে যাচাই-বাছাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় দেশের বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহ ইতিমধ্যে ১ কোটি ২৫ লাখের অধিক নারী পুরুষ কর্মীকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থানের সুব্যবস্থা করেছে। যার মাধ্যমে বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলারের উত্তীর্ণ হয়েছে।
বিদেশ থেকে আগত স্মার্ট কার্ড প্রাপ্ত কর্মীরা যে কোন অভিযোগে মামলা করার পূর্বে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো(বিএমইটি)অথবা বায়রা'র মাধ্যমে যাচাই পৃর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এক্ষেত্রে রিক্রুটিং এজেন্টনগণের বিরুদ্ধে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা না করার জন্য সকল থানা এবং পুলিশের সকল সংস্থাকে ব্যবস্থা গ্রহণ একান্ত অপরিহার্য। দেশের স্বার্থে অসামান্য অবদান রাখা রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকবৃন্দকে,বৈধ ভাবে বিএমইটি স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করে কর্মী প্রেরণ করা সত্বেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদন্ত ও আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পূর্বেই মানবপাচারকারী জঘন্য অপরাধী হিসেবে গ্রেফতার করে সমাজ রাষ্ট্র ও বিশ্বের সামনে মিডিয়ার মাধ্যমে রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকবৃন্দের সারা জীবনের সকল অর্জন ম্লান করা হচ্ছে।
কর্মীর যে কোন অভিযোগ থাকলে সেটি বৈদেশিক কর্মসংস্থান অভিবাসী আইন ২০১৩ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ বাঞ্ছনীয়। মানব পাচার আইনকে আমরা সমর্থন করি। যারা অবৈধ ভাবে নদী সাগর ও সীমান্ত দিয়ে মানবপাচার করে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে তারা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করছে। এসব মানবপাচারকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিতে হবে। রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকবৃন্দকে মানবপাচার আইনের অপব্যবহার করে ধারাবাহিকভাবে চলা অহেতুক হয়রানি থেকে স্থায়ী ভাবে মুক্তি দিতে হবে। মানবপাচার আইনে ভুক্তভোগী ও সাধারণ রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের উদ্যোগে গতকাল পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছে স্মারকলিপিতে বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর ন্যায্য অধিকার রক্ষায় সহযোগিতা কামনা করা হয়। রাজধানী ট্রের্ড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী এম টিপু সুলতানের নেতৃত্বে গতকাল জান্নাত ওভারসীজ স্বত্বাধিকারী লিমা বেগম, গোলাম রাব্বি ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী আক্তার হোসেন, ফাতেমা ওভারসীজ স্বত্বাধিকারী কবির হোসেন ও অপরাজিতা ওভারসীজের স্বত্বাধিকারী আরিফুর রহমান পুলিশ হোডকোয়াটার্সে গিয়ে মানবপাচার আইনে বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোতে পুলিশী হয়রানি বন্ধের দাবিতে স্মারকলিপি পেশ করেন।