পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার টিকা নেয়ার লক্ষ্যে নিবন্ধন করে টিকা না পেয়ে অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছেন। করোনার দ্বিতীয় দফায় গণটিকা কার্যক্রমের আগে যারা নিবন্ধন করেছেন তাদের অনেকেই এখনো টিকা পাননি। এসএমএসের জন্য তারা মুখিয়ে রয়েছেন। চীন থেকে কয়েক দফায় টিকা বাংলাদেশে আসার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ঘোষণা দিয়েছিলেন নিবন্ধন করা ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার ভিক্তিতে টিকা দেয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে অনেকেই নিবন্ধন করে এসএমএসের আশায় প্রহর গুনছেন। অন্যেরা নিবন্ধন না করেই টিকা নিয়েছেন।
নিবন্ধন করা ব্যক্তিদের অনেকেই মধ্যে টিকা না পাওয়া নিয়ে হতাশা থাকলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে টিকাদান কর্মসূচিতে আওতায় এখন পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৩৯ হাজার ৭৫২ জন। দেশের মোট জনসংখ্যা হিসেবে এটা প্রায় ১৯ শতাংশ মানুষ। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলে মোট ১৪ শতাংশ মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ কার্যক্রমের আওতায় ৭৫ লাখসহ একদিনে ৮০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। ফলে টিকা প্রয়োগের এই সংখ্যা প্রায় ১৯ শতাংশ হয়ে যায়।
বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি ধরা হয়। করোনাভাইরাস বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটি দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার পরামর্শ দেয়। সে হিসেবে দেশের ১২ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেব মতে এখন পর্যন্ত ৪ কোটি ৯৪ লাখ ৭৩ হাজার ৯৯৬ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৩ কোটি ২৬ লাখ ৯২ হাজার ১১০ জন এবং দুই ডোজ নিয়েছেন এক কোটি ৬৭ লাখ ৮১ হাজার ৮৮৬ জন।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে আমরা সর্বোচ্চ ৬৭ লাখ টিকা দিতে পেরেছি। অথচ আমাদের জন্য বড় এক চ্যালেঞ্জ ছিল সার্ভারের সমস্যা। আগের দিন থেকে কয়েক ঘণ্টায় প্রায় ১০ লাখ মানুষের নিবন্ধন করতে গিয়ে সার্ভার ডাউন হয়ে যায়। ফলে অনেক কেন্দ্রেই সক্ষমতা থাকতেও কম টিকা দিতে হয়েছে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের বেশিরভাগ কেন্দ্রেই প্রথম দিন ঠিকমতো টিকা দেওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, প্রধানমন্ত্রী জন্মদিনে টিকা কার্যক্রমে রাজধানী ঢাকার অনেক কেন্দ্রেই টিকাদানের গতি ছিল খুবই কম। সব মিলিয়ে ১৭৬ কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হয়েছে মোট ৯১ হাজার ২৫০ ডোজ। এর মধ্যে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৭৬ হাজার ৪৭৭ জনকে। গড়ে প্রতি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হয়েছে মাত্র ৪৩৪ জনকে। ওই দিন কয়েকটি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হয়েছে ৫০ থেকে ১০০ জনের মধ্যে। বেশিরভাগ কেন্দ্রেই টিকা দেয়া হয় ২০০ থেকে ৫০০ জনের মধ্যে। এমনকি ৪টি কেন্দ্রে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে যথাক্রমে ৫০, ৭৭, ৮৯ ও ৯৯ জন করে। ৭টি কেন্দ্রে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে ১০০ থেকে ২০০ জনের মধ্যে।
জানা যায়, বিভাগ হিসাবে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ মানুষ টিকা পেয়েছে ঢাকা বিভাগের মানুষ। তবে রাজধানীর বাইরের চিত্রে দেখা যায় জনসংখ্যা বিবেচনায় সবচেয়ে বেশি টিকা পেয়েছে রাঙামাটি জেলার মানুষ। যেখানে মোট ৭ লাখ ১৭ হাজার মানুষের মধ্যে প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছে ২৮ শতাংশ এবং দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে ২১ শতাংশ মানুষ। তবে বিভাগ হিসেবে ১৮ শতাংশ করে টিকা পেয়েছে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের মানুষ। সব চেয়ে টিকা কম দেওয়া হয়েছে সিলেট বিভাগে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের টিকাদানের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রথম ডোজের তুলনায় সবচেয়ে বেশি ৭১ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের মানুষ। এর পরেই ৬৭ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগে, ৬৬ শতাংশ করে পেয়েছে খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের মানুষ, ৬৪ শতাংশ পেয়েছে বরিশাল বিভাগে এবং ৫৭ শতাংশ পেয়েছে রংপুর বিভাগের মানুষ।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন বলেন, বিশেষ গণটিকা কার্যক্রমে গ্রামের তুলনায় ঢাকার প্রচার কম হয়েছে। অনেক মানুষই বিশেষ টিকা কার্যক্রমের কথা জানতে পারেনি। আবার নিয়মিত কেন্দ্রগুলো থেকে অনেক মানুষকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। টিকার পছন্দ-অপছন্দের বিষয়টি থাকলেও তা খুব বেশি মানুষের ছিল না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসেবে মতে, বিশেষ গণটিকা কার্যক্রম পর্যন্ত দেশে মোট টিকা দেওয়া হয়েছে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৩৯ হাজার ৭৫২ ডোজ। এর মধ্যে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৬ হাজার ১৭ জনকে এবং দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে এক কোটি ৬৬ লাখ ৩৩ হাজার ৭৩৫ জনকে। প্রথম ডোজ পেয়েছে মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৯ শতাংশ। আর দুই ডোজ মিলে মোট টিকার ১৪ শতাংশ। তবে গত মঙ্গলবার ৬৭ লাখ ৫৫ হাজার জনকে দেওয়া হয়েছে। ওই দিন শুধু প্রথম ডোজই পেয়েছে ৬৬ লাখ ২৫ হাজার ১২৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে এক দিনে রেকর্ডসংখ্যক টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ কোভিডের টিকা দেওয়ায় নতুন সক্ষমতা অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে বিশেষ কার্যক্রমের আওতায় ৭৫ লাখ টিকাদানের ঘোষণা দেওয়া হয়। লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জন না হলেও ৯০.১২ শতাংশ লক্ষ্যে পৌঁছানোও বিশাল একটি অর্জন।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যারা আগে টিকা পাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন তাদের মধ্যে অসংখ্য মানুষ এখনো এসএমএসের জন্য অপেক্ষা করছেন। ম্যাসেজ না পাওয়ায় তারা টিকা নিতে পারছেন না। ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষকে টিকা দেয়া হলেও নিবন্ধন করা ব্যক্তিরা টিকা না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।