Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

কুড়িগ্রামে ধর্ষণের ঘটনা সত্তর হাজার টাকায় দফারফা

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৫:৫৪ পিএম

কুড়িগ্রামের রাজারহাটে মেয়েকে বাড়ীতে রেখে টিকা দিতে গিয়ে ধর্ষণের কবলে পরেছে তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। ঘটনা ধামাচাপা দিতে ৭০ হাজার টাকায় দফারফা করে ধর্ষককে ছেড়ে দিয়েছে স্থানীয় মেম্বারসহ সালিশকারীরা। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখা গ্রামে। বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘটনাটির খবর ছড়িয়ে পরলে বিষয়টি সাংবাদিকদের নজরে আসে।


জানা যায়, পরিবারের সদস্যরা তাদের তৃতীয় শ্রেণির শিশু সন্তানকে বাড়িতে রেখে ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদে কোভিড-১৯ এর প্রথম ডোজের টিকা নিতে যান। এই ফাঁকে প্রতিবেশি নরেশ চন্দ্র (৫৫) কন্যা শিশুটিকে একা পেয়ে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে। এসময় তার আতর্ম-চিৎকারে আশপাশের বাড়ির লোকজন এসে নরেশ চন্দ্রকে আপত্তিকর অবস্থায় হাতেনাতে আটক করে। ন্যাক্কারজনক এ ঘটনায় ক্ষীপ্ত লোকজন ধর্ষক নরেশ চন্দ্রকে উঠানে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে ভিকটিমের বাবা-মাকে খবর দেয়। ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় কিছু দালাল শ্রেণির লোকজন ভিকটিমের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা না করার জন্য চাপ দেয়। পরে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুস ছাত্তার বাবু মেম্বার ও কালাম মাস্টার ৭০ হাজার টাকায় ধর্ষণের মামলা ধামাচাপা দিয়ে অভিযুক্ত ধর্ষক নরেশ চন্দ্রকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে বাবু মেম্বারসহ সালিশকারীরা ৭০ হাজার টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নেয়।

ভিকটিমের দাদা (আসমান উদ্দিন) জানান, মঙ্গলবার সকালে আমরা বাড়ির সকল সদস্য ইউনিয়ন পরিষদে করোনার টিকা নিতে যাই। টিকা নিয়ে ফিরে এসে দেখি নরেশ চন্দ্রকে এলাকাবাসী আমার বাড়ির উঠানে খুটির সাথে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছে। পরে প্রত্যক্ষদর্শির কাছ থেকে জানতে পারি আমার স্কুল পড়ুয়া তৃতীয় শ্রেণির নাতনিকে ধর্ষণ করেছে নরেশ চন্দ্র। পরে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বাবু মেম্বার ও কালাম মাস্টার গ্রাম্য সালিশ বসিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত নরেশ চন্দ্র পলাতক রয়েছে।

এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য আব্দুস ছাত্তার বাবু মেম্বার সাংবাদিকদের উপর ক্ষীপ্ত হয়ে বলেন, দু’পক্ষের সম্মতিতে বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে। আপনারা এত বাড়াবাড়ি করছেন কেন। ৭০ হাজার টাকা কে নিয়েছে কি করেছে এত কিছু জেনে কি করবেন। বেশি মাথাচাড়া দিবেন না, তাহলে সমস্যায় পরবেন।
এ বিষয়ে রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ রাজু সরকার জানান, ভিকটিমের পরিবার থেকে এখনো কোন অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ