বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কের ‘বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু’ ও ‘মেজর জলিল সেতুু’ দুটি আলোকিত করার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ সরঞ্জাম স্থাপনের পরে দশ বছর কেটে গেলেও বাতি জ্বলেনি। অথচ এ খাতে সরকারি কোষাগার থেকে খরচ হয়েছে বিপুল অর্থ। কবে, কিভাবে এসব বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্থাপন করা হয়েছিল, তাও কিছু জানেন না সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের বর্তমান দায়িত্বশীলরা। অথচ সন্ধ্যা হলেই এসব সেতু, সংযোগ সড়কসহ সন্নিহিত এলাকা অন্ধকারে নিমজ্জিত হচ্ছে।
কুয়েত উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল মহানগরী থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার ও ২১ কিলোমিটার উত্তরে বরিশাল-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কের দোয়ারিকা ও শিকারপুরে দুটি সেতু নির্মিত হয়। ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পরে ২০০৩ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এসব সেতু উদ্বোধন করে মুক্তিযুদ্ধের দুই বীর সেনানী বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ও মেজর জলিলের নামে নামকরণ করেন। সেতু দুটি প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের মাধ্যমে বরিশাল প্রান্তে বিমান বন্দর এলাকায় এবং অপর প্রান্ত শিকারপুরের জয়শ্রীতে সংযুক্ত হয়। কিন্তু ‘প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট গার্ডার’ পদ্ধতির এ দুটি সেতু ও দীর্ঘ সাড়ে ১২ কিলোমিটার সংযোগ সড়কটি আলোকিত করার কোন পদক্ষেপ ছিলো না মূল প্রকল্পে। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ রক্ষাকারী এ দুটি সেতু ও সংযোগ সড়ক সন্ধ্যার পরেই অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে মহাসড়কটি ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তাহীন করে তুলছে। সেতু ও সংযোগ সড়কে ছোট-বড় অনেক ছিনতাই ও রাহাজানির ঘটনা পথচারীদের আতঙ্কিত করছে।
সেতু দুটি ও সাড়ে ১২ কিলোমিটার সংযোগ সড়কে বাতি সংযোজনের দাবি দীর্ঘদিনের। এক সময়ে ওই এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের কাছে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যরা বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরেন। তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রীর কাছেও বিষয়টি নিয়ে আর্জি জানান মোযাজ্জেম হোসেন আলাল। তখন যোগাযোগমন্ত্রীর নির্দেশে এ লক্ষ্যে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর নীতিগত সিদ্ধান্তও গ্রহণ করে।
এরই ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ কালক্ষেপণ করে ২০১২ সালে বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু ও মেজর জলিল সেতুর রেলিংসহ সংযোগ সড়কটির ২০ মিটারের মধ্যে প্রায় দেড়শ’ বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করে সোডিয়াম বাতি স্থাপন করা হয়। কিন্তু ট্রান্সফর্মার স্থাপনসহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে সংযোগ গ্রহণ করে এসব বৈদ্যুতিক খুঁটিতে দিন আলো জ্বলেনি। বরিশাল সড়ক বিভাগও বিষয়টি নিয়ে পরবর্তিতে ন্যূনতম কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে।
বরিশাল সড়ক বিভাগ ও সার্কেলের বর্তমান দায়িত্বশীলরা প্রায় এক দশক আগে বিপুল অর্থ ব্যয়ে দুটি সেতুতে বাতি সংযোজন ও পরবর্তীতে তা কার্যকর না করার বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই বলতে পারছেন না। এ ব্যাপারে বরিশাল সড়ক বিভাগের সাবেক দু’জন নির্বাহী প্রকৌশলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারাও কিছু বলতে পারেননি। তবে এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট নথিপত্র খুঁজে বের করে সঠিক কারণ উদ্ঘাটনের কথা জানিয়েছিলেন তারা। কিন্তু পরবর্তীতে সব কিছুই স্তিমিত হয়ে গেছে। তারা অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন।
বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলীও বিষয়টি নিয়ে সঠিক কিছু বলতে না পারলেও পুরনো সব নথি খুঁজে বের করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন। কিন্তু এসব সেতুর বৈদ্যুতিক ফিটিংস এখন কতটা কার্যকর আছে তা অজ্ঞাত। পাশাপাশি ট্রান্সফর্মার স্থাপনসহ বৈদ্যুতিক সংযোগ গ্রহণ করে লাইন চালু করে সেতু দুটি আলোকিত করতে কত টাকার প্রয়োজন হবে তা অজ্ঞাত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।