পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাবেক কমিশনার রকিব উদ্দিন ও নূরুল হুদা কমিশন তাদের চরম পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের মাধ্যমে আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এর ফলে জনগণের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের ওপর ব্যাপক অনাস্থা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে তীব্র শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে আইনের বিধানাবলী-সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ প্রদানের নির্দেশনা থাকলেও গত ৫০ বছরে কোনো সরকারই এমন একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। কেবলমাত্র আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট ৫৩ জন নাগরিক।
গতকাল শনিবার সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদে বলা আছে যে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চার জন নির্বাচন কমিশনারকে লইয়া বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোনো আইনের বিধানাবলী- সাপেক্ষে প্রেসিডেন্ট প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগদান করিবেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে আইনের বিধানাবলী-সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ প্রদানের নির্দেশনা থাকলেও গত ৫০ বছরে কোনো সরকারই এমন একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। গত দুটি নির্বাচন কমিশন নিয়োগের আগে প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে দুটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেন। এডহক ভিত্তিতে সৃষ্ট ওই দুটি অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশে গঠিত রকিব উদ্দিন কমিশন ও নূরুল হুদা কমিশন তাদের চরম পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের মাধ্যমে আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে, যার ফলে জনগণের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের ওপর ব্যাপক অনাস্থা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে তীব্র শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান নূরুল হুদা কমিশনের মেয়াদ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হবে। তাই নির্বাচন কমিশনের পুনগর্ঠনের উদ্যোগ এখনই শুরু করতে হবে, যার প্রাথমিক পদক্ষেপ হবে সাংবিধানিক নির্দেশনা অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চার জন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের লক্ষ্যে একটি আইন প্রণয়ন করা। এ ব্যাপারে অনতিবিলম্বে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আমরা সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। যাতে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে ও সম্পূর্ণ প্রভাবমুক্ত থেকে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে সবধরনের আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। একইসঙ্গে অনুরোধ জানাচ্ছি, নির্বাচনকালীন সময়ে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যাতে নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে দায়িত্ব পালন করতে পারে সে ব্যাপারে সংস্কার পদক্ষেপের কথা এখন থেকেই ভাবতে। প্রস্তাবিত আইনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনারদের যোগ্যতার মাপকাঠি নির্ধারিত করা ও একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠনের বিধান রাখার সুপারিশ করে বিবৃতিতে বলা হয়। এই অনুসন্ধান কমিটি দল নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত হতে হবে। যেন সব নির্বাচনি অংশীজনদের কাছে এটি গ্রহণযোগ্যতা পায়। গঠিত অনুসন্ধান কমিটির দায়িত্ব হবে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে আইনে বিধৃত যোগ্যতার মানদণ্ডের আলোকে কিছু সৎ, নির্দলীয় ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের একটি প্যানেল নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ প্রদানের জন্য প্রেসিডেন্টর কাছে সুপারিশ করা। স্বচ্ছতার অংশ হিসেবে কোনো কোনো ব্যক্তিদেরকে নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের জন্য অনুসন্ধান কমিটি প্রাথমিকভাবে বিবেচনা করছে তাদের নাম প্রকাশ ও গণশুনানির আয়োজন করা এবং কোন যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রেসিডেন্টের কাছে প্রেরণের জন্য সেসব নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে, তার একটি প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করার বিধান আইনে রাখতে হবে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আমরা আশা করি যে সঠিক ব্যক্তিদেরকে নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে সরকারের নির্দেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয় একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ জরুরি ভিত্তিতে গ্রহণ করবে। নাগরিক হিসেবে মতামত প্রদানের মাধ্যমে আমরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করতে পারি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা হলেন, ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, এম হাফিজউদ্দিন খান, ড. আকবর আলী খান, রাশেদা কে চৌধুরী, বিচারপতি আব্দুল মতিন, ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, ড. হামিদা হোসেন, ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক আবু আলম শহীদ খান, মহিউদ্দিন আহমদ, ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, খুশী কবির, অধ্যাপক পারভীন হাসান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, ড. আহসান মনসুর, জেড. আই খান পান্না, ড. শাহদীন মালিক, মুনিরা খান, শিরিন হক, সালমা আলী, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, শাহীন আনাম, ফারাহ কবির, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, মির্জা তাসলিমা সুলতানা, আবদুল লতিফ মন্ডল, সঞ্জীব দ্রং, ড. শহিদুল আলম, শারমিন মুরশিদ, শামসুল হুদা, অধ্যাপক সি. আর আবরার, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, অধ্যাপক আকমল হোসেন, অধ্যাপক স্বপন আদনান, অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, আবু সাঈদ খান, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা, গোলাম মোনোয়ার কামাল, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, অধ্যাপক নায়লা জামান খান, জাকির হোসেন, ফারুক ফয়সাল, ড. আব্দুল আলিম ও নূর খান লিটন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।