পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শুধু ঢাকা বিভাগেই সাড়ে তিন হাজার মাদক কারবারি রয়েছে বলে জানিয়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। সম্প্রতি সংস্থাটির করা এক তালিকায় এ তথ্য উঠে এসেছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর বলছে, তালিকা ধরে শিগগিরই অভিযান শুরু করবে তারা।
গতকাল দুপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রো উত্তরের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা বিভাগের প্রধান ও অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান। তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর এর আগেও মাদক কারবারিদের তালিকা তৈরি করেছিল। দুই মাস আগে পূর্বের তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। আমরা ঢাকা বিভাগের মাদক কারবারিদের গ্রেফতারে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছি। তিনি বলেন, ইতি মধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের বিভিন্ন অভিযান পরিচালনার জন্য লোকবল ও লজিস্টিক সার্পোট কিছুটা বেড়েছে। আমরা অভিযানের সংখ্যাও বৃদ্ধি করেছি।
সংবাদ সম্মেলনে ফজলুর রহমান বলেন, তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি ছাড়াও খুচরা ও মাদকসেবীদের আলাদা তালিকা করা হয়েছে। অধিদফতর চেষ্টা করছে মাদকের গড ফাদারদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার। অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে ব্যবসা ছেড়ে দিলেও এখন পৃষ্টপোষকতা করছেন। কেউবা নিজে সরাসরি না জড়িয়ে লগ্নি করে অন্যদের দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী কোনো মাদকসেবী বা কারবারিকে আইনের আওতায় আনতে হলে তার কাছে থাকা মাদকদ্রব্য জব্দ করতে হয়। সাধারণত মাদকের গড ফাদারদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা বা গ্রেফতার করা কঠিন হয়ে যায়। কারণ মাদক থাকে নিচের দিকের খুচরা কারবারিদের কাছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি হাতেনাতে ধরার জন্য।
মাদক কারবারিদের তালিকা কীভাবে করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মসজিদের ইমাম, জনপ্রতিনিধি, সাধারণ এলাকাবাসী, ভুক্তভোগী, মাদকসেবী, মাদক কারবারিদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য, মামলা বা পূর্বের মাদক সংক্রান্ত অপরাধের ধরণ, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যগত সমন্বয় করে অধিদফতর নিজস্ব প্রক্রিয়ায় মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা করেছে। সারাদেশে মাদক কারবারির সংখ্যা কতো তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সদর দফতর বলতে পারবে। সারাদেশের মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা আলাদা এবং আরও বড়।
ফজলুর রহমান বলেন, গত ২১ আগস্ট বনানী ও উত্তরায় অভিযান চালিয়ে ৫০০ গ্রাম আইসসহ ১০ মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার গুলশান, ভাটারা, কুড়িল ও রমনা এলাকা থেকে আরও ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৫৬০ গ্রাম ক্রিটাল মেথ আইস ও ১২০০ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার মাদক কারবারিরা হলেন- জাকারিয়া আহমেদ অমন, তারেক আহম্মেদ, সাদ্দাম হোসেন, শহিদুল ইসলাম খান ও জসিম উদ্দিন।
ফজলুর রহমান বলেন, ঢাকায় এই চক্রটি আইস মাদকের একটি শক্তিশালী নেটওয়াক ছিল। প্রথমে রমনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামী জাকারিয়া আহমেদ অমনকে ৫ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ গ্রেফতার করা হয়। পরে জাকারিয়ার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গুলশান থানাধীন বারিধারা দূতাবাস এলাকায় অভিযান চালিয়ে তারেক আহম্মেদকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে ৫ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস মাদক ও ১০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটও একটি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, জাকারিয়া ও তারেকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাদ্দাম হোসেনকে ৯০ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইচ মাদক ও পরবর্তীতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে আসামী শহীদুল ইসলাম খানকে ২০০ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস মাদক ও ৫০০ ইয়াবা ট্যাবলেট ও একটি প্রাইভেটকারসহ গ্রেফতার করা হয়। পরে চার আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর জোয়ার সাহারা, ভাটারা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জসিম উদ্দিনকে ২৬০ গ্রাম আইস মাদক ও ২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতার পাঁচ আসামীদের কাছ মোট ৫৬০ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস মাদক ও ১ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং দুইটি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়। আসামীদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট থানায় মাদক আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, যারা ইয়াবা কারবার করে তারা নতুন করে মিয়ানমার থেকে আইস মাদকের কারবারে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে। এছাড়াও বর্তমানে আইস মাদকে যুক্ত হচ্ছে বিত্তশালীরা। গ্রেফতার আসামীদের সবার অবস্থা ভালো ও তারা বিত্তশালী। তাদের কেউ ইংল্যান্ড থেকে বিবিএ করেছেন, কেউ আবার অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করেছেন। তারাই রাজধানীর অভিজাত এলাকায় করছেন মাদকের কারবার। তারা সেবনের পাশাপাশি ভয়ানক মাদক আইস কারবারের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। এসব মাদকের উৎস মিয়ানমার। নাফ নদী পথে গভীর সমুদ্র হয়ে মাদকের এসব চালান দেশে আসছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, ক্রিস্টাল মেথ (আইস) একটি ভয়ঙ্কর মাদক যা ইয়াবার থেকে বহুগুন শক্তিশালী। এই মাদক মানুষের মস্তিস্কের নিউরোনে ব্যপক প্রভাব ফেলে। এটি একটি ক শ্রেণির মাদকদ্রব্য।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মেট্রো উত্তরের উপ-পরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান ও সহকারী পরিচালক মো. মেহেদী হাসান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।