Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দক্ষিণাঞ্চলের অর্ধ সহস্রাধিক কেজি স্কুল বন্ধ, অনিশ্চিত হাজার হাজার শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১:১২ পিএম | আপডেট : ১:১৫ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১

করোনা সংকটে দক্ষিণাঞ্চলের অর্ধ সহস্রাধিক কিন্ডার গার্টেন স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার কোমলমতি শিশু সহ অভিভাবকগন চরম বিপাকে পড়েছেন। এসব শিশুর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া অনির্দিষ্টকালের জন্যই অনিশ্চিয়তার কবলে। গত বছরের আড়াই মাস ক্লাস হবার পরে বন্ধ হয়ে যাওয়া এসব শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রÑছাত্রীরা এখন পরের বছরের শেষভাগে এসে কোথায় পড়াশোনা করবে তার জবাব পাচ্ছে না। অভিবাবকগনও বাচ্চাদের কোন জবাব দিতে না পেরে নিজেরাই চরম হতাশার কবলে। দেড় বছর পরে আরেক বছরের দুই তৃতীয়াংশ পার করে স্কুল খুললেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই অস্তিত্বহীন। ফলে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিশু শিক্ষার্থীরা কোথায় গিয়ে দাড়বে তা খুজে পাচ্ছে না।
দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলাতেই এখন শিশুশিক্ষা কার্যক্রম চরম বিপর্যয়ের কবলে। হতাশ অভিভাবকগন তাদের কোমলমতি শিশুদের নিয়ে এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে ছুটছেন। কিন্তু বেশীরভাগ কেজি স্কুলই হয় বন্ধ, নয়ত অস্তিত্বহীন।
করোনা মহামারীর কারণে গত বছর ১৭ মার্চ থেকে সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়ে যাওয়া অনেক শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এখন কোন খোজ নেই। অনেক প্রতিষ্ঠানের সইনবোর্ড থাকলেও তালা বন্ধ। আবার কোন কোন প্রতিষ্ঠানের সইনবোর্ডও নেই। বাড়িওয়ালাদের ভাড়া দিতে না পাড়ায় গত বছরের শেষেই বন্ধ হয়ে গেছে বেশীরভাগ কেজি স্কুল। আর বিপুল সংখ্যক কেজি স্কুলের শিক্ষক মন্ডলীর বেশীরভাগই মাসের পর মাস বেতন না পেয়ে বছরখানেক আগেই নানা পেশায় যুক্ত হয়েছেন। এমনকি দক্ষিণাঞ্চলের অনেক শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বরিশাল মহানগরীতে ইজিবইক চালিয়ে জীবীকা নির্বাহ করছেন। শিক্ষিকাদের অবস্থা আরো করুন।
খোদ বরিশাল মহানগরীতে দেড় শতাধীক শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্তত ৫০টি স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। আরো ৫০টি এখনো বন্ধ থাকলেও চালুর চেষ্টা করছে। তবে দীর্ঘ দেড়বছর বেতন ভাতা না পেয়ে বেশীরভাগ শিক্ষক অন্য পেশায় যুক্ত হওয়ায় এসব শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করা যাচ্ছে না। তবে বন্ধ কোন কোন প্রতিষ্ঠানের মালিক শিক্ষা বর্ষের এ শেষ সময়ে কোন ঝুকি না নিয়ে নতুন বছরে চালু করার চিন্তা করছেন। এক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বাড়ী ভাড়া পরিষোধ বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে। যেসব কেজি স্কুল এখনো অস্তিত্ব টিকিয়ে রোখেছে, তাদের প্রায় সবগুলোরই বাড়ী ভাড়া বকেয়া ৬মাস থেকে এক বছরেরও বেশী। ফলে কোন বাড়ী মালিকই এখন বকেয়া পরিশোধ না করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চালু করতে দিচ্ছেন না। সে ক্ষেত্রে কিছু বকেয়া পরিশোধ করেও আপোষ রফার মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চালু করার চেষ্টা করছেন অনেকে। কিন্তু বেশীরভাগ কেজি স্কুলের পরিচালকদের সে ধরনের সঙ্গতিও নেই।
এসব ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালকের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, বরিশাল বিভাগের ৬ জেলায় ৬৭৬টি কেজি স্কুল বা শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের কাছে নিবন্ধিত। তবে এসব প্রতিষ্ঠানের ছাত্রÑছাত্রী ও শিক্ষকের সংখ্যা সম্পর্কে তার দপ্তর অবহিত নন বলে জানিয়ে তিনি বলেন, করোনা সংকটের পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহ সবে খুলেছে। আমরা এখনো সরকারী প্রতিষ্ঠাগুলে নিয়ে কাজ করছি। কেজি স্কুল বা শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষেয়ে আমরা নজর দিতে পারিনি। সরকারী নির্র্দেশনা পেলে বিষয়টি সম্পর্কে খোজ খবর নিয়ে অধিদপ্তরকে জানানোর কথাও বলেন তিনি। তবে তার জানা মতে, এসব শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালুর ব্যাপরে সরকারী কোন সহায়তা বা নির্দেশনা এখনো নেই বলেও জনান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিক্ষা কার্যক্রম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ