পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আফগান নেতাদের অনেক বাড়িই বর্তমানে তালেবানদের কব্জায়। তালেবানরা সম্প্রতি দখলে নিয়েছে আফগানিস্তানের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট পলাতক আব্দুল রশিদ দোস্তামের অসাধারণ বিলাসবহুল ‘কাবুল ম্যানশন’ও। দোস্তামের মাজার-ই-শরিফের প্রাসাদের মতো এই প্রাসাদও এখন তালেবানদের বাসস্থান। তালেবান যোদ্ধাদের প্রায় দেড়শ সদস্যের একটি দল বর্তমানে এখানে অবস্থান করছে।
অধিকাংশ আফগানদের জন্য এই সুবিশাল প্রাসাদের জাঁকজমক কল্পনাতীত। বিলাসবহুল কার্পেটে মোড়ানো বাড়িটিতে রয়েছে মূল্যবান অসংখ্য ঝাড়বাতি। অন্দরমহলে রয়েছে রয়েছে আপেল-সবুজ রঙের গালিচা বিছানো সুদীর্ঘ করিডোর। রয়েছে ফিরোজা রঙের সুদৃশ্য টাইল্সে তৈরি সাতটি সুইমিং পুল এবং কয়েকশ বর্গমিটারের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় গ্রিনহাউজ। একটি পুলে বসবাসরত বিশাল বিশাল দৃষ্টিনন্দন মাছগুলো জলকেলিতে মগ্ন। পাশেই রয়েছে তুর্কি সাওনাসহ অত্যাধুনিক সরঞ্জামসমৃদ্ধ জিম। এক কথায় তালেবানের দখলকৃত দোস্তামের দুটি প্রাসাদই সাধারণ আফগানদের কাছে অকল্পনীয়।
কাবুল ম্যানসনে নতুন তালেবান রাজত্বের দৃশ্যগুলো ক্যামেরাবন্দি করেছে এএফপি। ছবিতে দেখা যায়, বন্দুক হাতে তালেবান যোদ্ধারা স্বর্ণ-কারুকাজখচিত বিশালাকারের তুলতুলে সোফাগুলোয় বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। অনেকে একে অপরের ছবি তুলছেন। কেউ আবার প্রাসাদের দেয়াল চিত্র, গঠনশিল্পের নান্দনিক কারুকার্য দেখে অভিভূত। পুলের পাশের মনোরম বাগানে গোল হয়ে আড্ডায় মজেছেন এক দল। এক কথায় কাবুল ম্যানসন তালেবানদের জন্যও এটি অকল্পনীয় বিলাসীতার অভিজ্ঞতা, যারা আফগানিস্তানকে দখলদার মুক্ত করতে জীবন উৎসর্গ করে বছরের পর বছর ধরে আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত সমতল, রুক্ষ উপত্যকা এবং দুর্গম পাহাড়ে বসবাস করেছেন। তবে বাড়িটিতে অবস্থান নেওয়া তালেবানরা বলছেন যে, বছরের পর বছর দুর্নীতির আয়ে দোস্তামের এই বিলাসিতা নিন্দনীয়।
নতুন তালেবান সরকার বলেছে যে, তারা এই ধরনের বিলাসিতা তৈরি হতে দেবে না। ম্যানশনের নেতৃত্বে থাকা তালেবানের চার প্রদেশের সামরিক কমান্ডার কারি সালাহউদ্দিন আইয়ুবি বলেন, তার লোকেরা বিলাসী জীবনে অভ্যস্ত হবে না। আইয়ুবি নতুন তালেবান সরকারের সবচেয়ে ক্ষমতাধর কমান্ডারদের একজন। দলের মতাদর্শ সম্পর্কে এএফপিকে তিনি বলেন, ‘ইসলাম কখনোই চায় না আমরা বিলাসবহুল জীবনযাপন করি, প্রকৃত মুসলিমদের বিলাসিতা হবে মৃত্যুর পরের জীবনে।’ আইয়ুবি আরও বলেন, ‘আমরা দরিদ্রদের পাশে আছি।’
উল্লেখ্য, কাবুল ম্যানসনের পলাতক মালিক দোস্তাম ‘জুনবিশ-ই মিলি’র প্রতিষ্ঠাতা, কমিউনিস্ট কমান্ডার, যুদ্ধবাজ এবং সাবেক প্যারাট্রুপার। নির্মম সামরিক আগ্রাসনেরও কুখ্যাতি আছে তার। তিনি ট্যাংকের চাকার নিচে বন্দিদের পিষে মারার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন। একাধিক যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত থাকা সত্ত্বেও তিনি সাবেক আফগান সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট হন এবং ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব করেন। গনি সরকার ২০২০ সালে তাকে ‘আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ’ খেতাবে ভূষিত করে।
দোস্তামকে চরম শত্রু মনে করে তালেবান। ৩০ বছর ধরে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়েছেন দোস্তাম। ২০০১ সালে তার বিরুদ্ধে দুই হাজারের বেশি তালেবান যোদ্ধাকে নৃশংসভাবে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, দোস্তাম সেই নেতা, যিনি ২০০১ সালে মরুভূমিতে প্রখর তাপের মধ্যে জাহাজের পরিত্যক্ত ধাতব কন্টেনারগুলিতে তাদের তালাবদ্ধ করে রেখেছিলেন। সম্প্রতি তালেবানদের হাতে মাজার-ই-শরিফ পতনের পর উজবেকিস্তানে পালিয়ে যান ৬৭ বছর বয়সি দোস্তাম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।