নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তার আগে টানা জয়ে দলের আত্মবিশ্বাস সঙ্গী হলেও ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাস ছিল তলানিতে। সেই ধারাবাহিকতায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গতপরশু ব্যাটিংবান্ধব উইকেট পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। কিউইদের দেওয়া ১৬২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা করতে পেরেছিলেন ১৩৪ রান। আসন্ন বিশ্বকাপের আগে ব্যাটসম্যানদের এমন ব্যর্থতা অস্বস্তি বাড়াচ্ছে ড্রেসিংরুমে।
অভিজ্ঞ তামিমের অনুপস্থিতিতে যাদের ওপর দায়িত্ব ছিল, তারা কেউই পারফেক্ট ব্যাটিংটা করতে পারছেন না। টপ অর্ডারে নামা নাঈম, লিটন, সৌম্য, মুশফিক বাজে শটে আউট হয়েছেন। এমন হতশ্রী ব্যাটিং নিশ্চিতভাবেই বিশ্বকাপের আগে টিম ম্যানেজমেন্টকে ভাবাবে।
জিম্বাবুয়ে সফরে স্পোর্টিং উইকেটে খেলে আসার পর ঘরের মাঠে স্লো ও টার্নিং উইকেটেই খেলছে বাংলাদেশ। মাঝে মধ্যে বেশ কিছু উইকেট ব্যাটিংবান্ধব হলেও সেখানেও ব্যাটসম্যানরা ভালো করতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গত দশ ম্যাচের মধ্যে সবচেয়ে ভালো উইকেট ছিল শেষ ম্যাচে। তাই কিউইরা আগে ব্যাটিং করে শরিফুল-নাসুম-তাসকিনদের বিপক্ষে ঝড় তুলেছিলেন। সেই ঝড়েই সফরকারীদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৬১। কুড়ি ওভারের ধুম-ধাড়াক্কা ক্রিকেটে এই লক্ষ্য মামুলিই হওয়ার কথা। কিন্তু টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় স্বাগতিকরা সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের এমন পারফরম্যান্সের অজুহাত হিসেবে কোনও কিছুকেই সামনে আনার সুযোগ নেই। তবু যদি আনতে হয় তাহলে স¤প্রতি খেলা মিরপুরের স্লো-টার্নিং উইকেটকেই আনতে হবে!
এমন পিচে খেলতে খেলতেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাস যে তলানিতে ঠেকেছে। যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে গতপরশুর ম্যাচ। বিশ্বকাপের আগে স্লো উইকেটে খেলে জয় পেলেও আদতে যে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি যথার্থ হয়নি, সেটা প্রমাণ করতেই যেন ব্যাটিং পিচে লিটন-সৌম্য-নাঈম-মুশফিকরা দ্রুত সাজঘরে ফিরে গেলেন!
তাই তো বড় দুটি দলের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পরও বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটারসহ কোচেরা। শুধু তা-ই নয়, নিউজিল্যান্ডের অভিজ্ঞ পেসার মিচেল ম্যাকক্লেনাঘান তো টুইটারে মাধ্যমে প্রশ্ন রেখেছেন- এভাবে জিতে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কতদূর? ৫ম টি-২০ ম্যাচের আগে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের টানা ৯ ম্যাচে সর্বোচ্চ রান ১৪১, যা সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে কিউইরা করেছিল। বাকি ম্যাচগুলোর বেশিরভাগই লো স্কোরিং। আগের সিরিজে অজিরা ৬২ রানে অলআউট হওয়ার পর কিউইরা প্রথম ম্যাচে ৬০ রানে অলআউট হয়েছিল। গত বুধবারও একশ’ নিচে অলআউট হয়েছে সফরকারীরা। এ কারণে এভাবে জিতেও দীর্ঘমেয়াদে ভালো দল হয়ে ওঠা সম্ভব কিনা, প্রশ্ন তুলেছেন ম্যাকক্লেনাঘান।
শুধু ম্যাকক্লেনাঘানই নন, ভারতের জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলেও এমন উইকেটে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি যথাযথ হচ্ছে কিনা প্রশ্ন রেখেছেন। টুইটারে তিনিও লিখেছেন, ‘আমি ঠিক বুঝতে পারছি না বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজে যে ধরনের উইকেটে খেলা হচ্ছে; সেটা তাদের বিশ্বকাপ প্রস্তুতির জন্য ভালো হবে কিনা!’ বাংলাদেশের স্থানীয় কোচ সারোয়ার ইমরানও বলেছেন, ‘এমন উইকেটে খেলে বাংলাদেশের প্রস্তুতিটা যথার্থ হচ্ছে না। বিশ্বকাপের কন্ডিশন হবে ব্যাটিংবান্ধব। কিন্তু মিরপুরের স্লো উইকেটে খেলে ব্যাটসম্যান সেই প্রস্তুতিটা নিতে পারবে না। ফলে প্রস্তুতির ঘাটতি নিয়েই বিশ্বকাপে যেতে হবে বাংলাদেশকে।’
বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট অবশ্য ব্যাটসম্যানদের প্রস্তুতিটা ওমানে গিয়েই নিতে আগ্রহী। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর কথায় তেমনটাই বোঝা গেলো, ‘দেখেন যে কোন ফরম্যাটে খেলি না কেন, জয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জয়টা কিন্তু আত্মবিশ্বাস সব সময় বাড়ায়, হারতে থাকলে মানসিকতা এমনিতেই নেমে যায়। সে হিসাবে জয়ের আত্মবিশ্বাস থাকলে যেকোনও জায়গায় ভালো করা যায়। আর আমাদের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি কিন্তু ওমানে গিয়ে শুরু হবে। তাছাড়া বিশ্বকাপ শুরু হতে প্রায় এক মাসের মতো সময় আছে। সেদিক থেকে বিল্ডআপ বা রিফ্রেশিংয়ের যথেষ্ট সময় আছে।’
সর্বোচ্চ রান (সেরা ৫)
ব্যাটসম্যান ম্যাচ রান সর্বোচ্চ গড়
টম ল্যাথাম ৫ ১৬৯ ৬৫* ৫৩
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৫ ১২০ ৪৩* ৬০
মোহাম্মদ নাঈম ৫ ১০৫ ৩৯ ২১
উইল ইয়ং ৫ ৯৯ ৪৬ ১৯.৮০
হেনরি নিকলস ৫ ৮১ ৩৬* ২০.২৫
সর্বোচ্চ উইকেট (সেরা ৫)
বোলার ম্যাচ ওভার উইকেট সেরা
ইজাজ প্যাটেল ৫ ২০ ১০ ৪/১৬
নাসুম আহমেদ ৫ ১৪ ৮ ৪/১০
মুস্তাফিজুর রহমান ৪ ১৪.২ ৮ ৪/১২
কোল ম্যাককোঞ্চি ৫ ১৮.১ ৭ ৩/১৫
রাচিন রাভিন্দ্রা ৫ ১৯ ৬ ৩/২২
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।