নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
অভিষেকেই গড়লেন ইতিহাস! কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেই তৃতীয় দিনে পেয়ে যান সেঞ্চুরির দেখা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ১৬ বছর বয়সে সেঞ্চুরি মোহাম্মদ আশরাফুলকে এনে দেয় টেস্ট ক্রিকেটে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ানের গৌরব। আর সেই গৌরব মাল্যটা তিনি পরেছিলেন টেস্টের তৃতীয় দিনে, গতকাল যার ২০ বছর হয়ে গেল। অভিষেক টেস্টে রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরির দুই দশক পূর্তিতে এসে মেলে দিলেন স্মৃতির ঝাঁপি, খুলে দিলেন মনের অবারিত দ্বার। আর সেখানে বেশ মোটা দাগেই উঠে এলো বর্তমানে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটিয় মানসিকতার দৈন্যতাও।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে টি—টোয়েন্টি সিরিজে ৪—১ ব্যবধানে জয়, নিউজিল্যান্ডকে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৬০ রানে গুটিয়ে দেওয়া, দ্বিতীয় ম্যাচেও হেসেখেলে জয়। সহজ ম্যাচ কঠিন করে হলেও গতকাল চতুর্থ ম্যাচে ৫ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে জিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম বারেরমতো টি—টোয়েন্টিতে সিরিজ উল্লাসে মাতে রাসেল ডমিঙ্গোর দল। বাংলাদেশ তো রীতিমতো উড়ছে! আগামী অক্টোবর—নভেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে টি—টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এমন পারফরম্যান্স নিশ্চয়ই আশা—জাগানিয়া। জয়কে অভ্যাস বানিয়ে ফেলে টইটম্বুর আত্মবিশ্বাস নিয়েই তো মাহমুদউল্লাহরা বিশ্বকাপ লড়াইয়ে থাকবেন। এবার নিশ্চয়ই টি—টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অনেক ভালো করবে বাংলাদেশ! এমন চিন্তাভাবনা যাঁদের, তাঁদের প্রত্যাশার বেলুন কিছুটা হয়তো চুপসে গেছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় টি—টোয়েন্টির পর। সিরিজ নিজেদের করে নেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমে সেদিন ৭৬ রানে গুটিয়ে গিয়ে বড়সড় ধাক্কা লেগেছে আশার পালে।
২০০৭ সালে প্রথম টি—টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অধিনায়ক ছিলেন আশরাফুল। তার মতে ব্যাপারটি আশঙ্কারই, ‘জয় যেমন অভ্যাসের ব্যাপার, ব্যাটসম্যানদের রান করাও কিন্তু অভ্যাসের ব্যাপার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছি, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে প্রথম দুই ম্যাচে জিতলাম। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা তো রান করছে না। উল্টো নিজেদের সুবিধামতো করে তৈরি করা উইকেটেই ৭৬ রানে গুটিয়ে যেতে হলো। টি—টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এটা কিন্তু ভালো হলো না।’
ক্রিকেটে তো বাজে দিন আসেই। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি হারেই কি সব শেষ হয়ে যাচ্ছে? এই যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দাপট দেখিয়ে সিরিজ জয়, নিউজিল্যান্ডকে দুই ম্যাচে হারিয়ে দেওয়া— কিছুই কি কাজে আসবে না টি—টোয়েন্টি বিশ্বকাপে? আশরাফুল এ ব্যাপারে বাস্তববাদী, ‘জয়ের অভ্যাস সব সময়ই ভালো। সেদিক দিয়ে ঠিক আছে। কিন্তু যে ধরনের উইকেটে খেলে জয়গুলো এল, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে আমিরাত আর ওমানে সেটি কাজে আসবে কি না! সেখানে তো স্পোর্টিং উইকেটে খেলতে হবে।’
জয়ের অভ্যাস দরকার হলেও সেটি ভালো উইকেটে খেলে, রান করে আসাটাকেই ভালো মনে করেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। তার মতে, প্রক্রিয়া ঠিক নেই বাংলাদেশের ক্রিকেটে, ‘আমরা বোধ হয় একটু বেশিই সাফল্যনির্ভর হয়ে পড়ছি। সে কারণেই নিজেদের মতো করে উইকেট বানিয়ে জিততে চাইছি। এমন উইকেট বানালে ঘরের মাঠে হয়তো ম্যাচের পর ম্যাচ জিতব, কিন্তু বিদেশের মাটিতে? আমার মনে হয়, এ ব্যাপারটা ভেবে দেখা দরকার।’
টি—টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম জয়টা এসেছিল আশরাফুলের। সে সময় তিনি নিজেই বলেছিলেন ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে ভালো দল হয়ে ওঠার যথেষ্ট সুযোগ বাংলাদেশের আছে। কিন্তু ১৪ বছর পর আশরাফুল হতাশ। টি—টোয়েন্টি ক্রিকেটটা যেন ঠিকমতো বুঝে উঠতেই পারছেন না বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা, ‘বাংলাদেশ কেন টি—টোয়েন্টিতে ভালো দল হতে পারছে না, এটা নিয়ে হতাশা কাজ করে আমার মধ্যে। তবে আমি মনে করি, বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা পর্যাপ্ত পরিমাণে টি—টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় না। ঘরোয়া ক্রিকেটে বিপিএলের বাইরে একটা টি—টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খুবই প্রয়োজন। প্রক্রিয়া ঠিক না হলে কিছুই হবে না। ওটাতেই বেশি জোর দিতে হবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।