পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনা সংক্রমণ নিস্নমুখী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় এবং করোনা সংক্রান্ত কারিগরি কমিটির মতামতের ভিত্তিতেই আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্ত স্বাগতও জানিয়েছে করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। পাশাপাশি দেয়া হয়েছে সতর্ক থাকার পরামর্শও। গত সোমবার রাতে কারিগরি কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগেই সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক/কর্মচারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে তাদের সব ধরনের ঝুঁকি কমানোর যথাযথ ব্যবস্থাপনা করতে হবে। স্কুল বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা যেসব ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং তাদের যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে তা কমানোর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং এলাকায় কোভিড-১৯ রোগের পরবর্তী সংক্রমণ রোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারাদেশে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে সংক্রমণ হারে উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। সর্বোচ্চ সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার থেকে অনেকটাই নেমে কিছুটা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় এসেছে। যদিও সংক্রমণ এবং মৃত্যু পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। জীবিকা ও দেশে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সচল রাখার উদ্দেশ্যে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানা সাপেক্ষে প্রায় সবকিছুই খুলে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে ১৭ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে সরকার অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষাকার্যক্রম অব্যাহত রেখেছিল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ইতোমধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের এবং হলে অবস্থানকারী ১৮ ও এর বেশি বয়সী ছাত্রছাত্রীদের টিকা দিয়েছে। অন্য ১৮ ও এর বেশি বয়সী ছাত্রছাত্রীদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য প্রয়োজনীয় গাইডলাইনের খসড়া প্রস্তুত করেছে।
আট দফা সুপারিশ: সরকার যদি স্কুল এবং অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খুলে দেয় সেক্ষেত্রে আট দফা সুপারিশ বিবেচনায় রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- ১. প্রি-স্কুল ছাড়া সব স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খুলে দেওয়া যেতে পারে। ২. সব স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করা এবং ব্যত্যয় হলে সে ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা (৫ বছরের কমবয়সী শিশু ছাড়া এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী)। কেন্দ্রীয়ভাবে সব শিক্ষার্থীর জন্য উপযুক্ত মানসম্পন্ন এবং সঠিক মাপের মাস্কের ব্যবস্থা ও বিতরণ করা। একইসঙ্গে অন্যান্য জনস্বাস্থ্য পদক্ষেপ যেমন- হাত পরিষ্কার রাখা (হাত ধোয়া/হাত জীবাণুমুক্ত করার স্টেশন স্থাপন করা) এবং সাধারণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রস্তুত করা দরকার।
৩. স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ৮০ শতাংশ শিক্ষক এবং কর্মচারীর করোনার টিকা নেওয়া থাকতে হবে এবং তারা দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ১৪ দিন পার হওয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন। তবে ক্ষেত্রবিশেষে ১ম ডোজের ১৪ দিন পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদানের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। ৪. উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৮ বছরের অধিক বয়সী শিক্ষার্থীদের দ্রুত টিকা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. শ্রেণিকক্ষে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সমাগম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নির্দিষ্ট ক্লাস কোনটি সপ্তাহের কোন দিন হবে তা বিভক্ত করে দেওয়া যেতে পারে। যেমন, প্রথমদিকে পরীক্ষার্থীদের ক্লাস প্রতিদিন খোলা রাখা ছাড়া, বাকি সব ক্লাস সপ্তাহে এক/দুই দিন খোলা রাখা যেতে পারে। এতে একটি নির্দিষ্ট দিনে যেই ক্লাসটি খোলা থাকবে। সেই ক্লাসের শিক্ষার্থীরা অন্যান্য খালি শ্রেণিকক্ষগুলো ব্যবহার করে তাতে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে বসতে পারবে।
এছাড়া নিয়মিত প্রাতঃসমাবেশ বন্ধ রাখতে হবে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রস্তুত করা দরকার। এছাড়া প্রথমদিকে স্বল্প সময়ের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যেতে পারে, যাতে করে খাবার গ্রহণের জন্য মাস্ক খোলার প্রয়োজন না হয়।
৬. আবাসিক সুবিধা সম্বলিত স্কুল-কলেজ-মাদরাসার জন্য- সব সমাবেশ স্থানে (ক্যাফেটেরিয়া, ডাইনিং, টিভি/স্পোর্টস রুম ইত্যাদি) বন্ধ রাখা, রান্নাঘর থেকে রুমগুলোতে সরাসরি খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা থাকা। একাধিক শিক্ষার্থী একই বিছানা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবে। মাদরাসায় একসঙ্গে নামাজ, সমাবেশ ইত্যাদির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নির্দেশনা মেনে চলা। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রস্তুত করা দরকার।
৭. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় খুলে দেওয়ার আগে করণীয় এবং বর্জনীয় কাজ সম্পর্কে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ প্রতিষ্ঠানের অন্য কর্মচারীদের একটি অরিয়েন্টেশনের মাধ্যমে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে হবে। এই ওরিয়েন্টেশন সীমিত উপস্থিতি ও নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে সশরীরে আয়োজন করা যেতে পারে, তবে প্রয়োজনে অনলাইন সেশন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ সংক্রান্ত তথ্য সম্বলিত লিফলেট তৈরি এবং বিতরণ করা এবং করণীয়-বর্জনীয় বিষয়গুলো মিডিয়া এবং স্থানীয় ক্যাবল লাইনের মাধ্যমে প্রচার করা যেতে পারে। যেসব শিক্ষার্থীর কোভিড-১৯ এর লক্ষণ থাকবে তাদের বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন/আইসোলেশন এবং কোয়ারেন্টাইন/আইসোলেশন থাকাকালে তাদের শুশ্রুষার জন্য নির্দেশনা এ ওরিয়েন্টেশনে থাকতে হবে। যেসব শিক্ষার্থীর রোগের লক্ষণ পাওয়া যাবে অথবা তাদের পরিবারের কারও এরকম লক্ষণ থাকবে অথবা কোভিড-১৯ রোগ পাওয়া যাবে তাদের অনুপস্থিত গণ্য না করে ১৪ দিন বাড়িতে থাকার অনুমতি দিতে হবে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) ও প্রচারণাপত্র প্রস্তুত করা দরকার।
৮. স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য কর্মচারীদের মধ্যে সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ এবং দৈনিক রিপোর্ট করতে হবে। নির্বাচিত কিছু স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য কর্মচারীদের নমুনা পরীক্ষা এবং সার্ভেইলেন্সের প্রটোকল তৈরি এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। যেসব জেলায় ল্যাব আছে সেসব জেলার স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ সার্ভিল্যান্সের জন্য নির্বাচন করা যেতে পারে। যেসব জেলায় সংক্রমণের হার বেশি, শনাক্তের হার ২০ শতাংশের বেশি বা কেসের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা (আগের সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে ৩০% বেশি সংখ্যক কেস), সেই জেলাগুলোতে আরও নিবিড় সার্ভেইলেন্স থাকা উচিত। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষের দ্বারা পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) তৈরি করতে হবে। সব বিধিনিষেধ সুষ্ঠু পালন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মনিটরিং টিম গঠন করে দৈনিক মনিটরিং করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।