পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রায় শতভাগ মুসলমানের দেশে ইসলামী শরীয়া শাসন কায়েমের ৫ বছর পর তালেবানকে মার্কিন ন্যাটো ও বিশ্ব মিত্রদের সহায়তায় দেশীয় যুদ্ধবাজ গ্রæপগুলো ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়। ওসিলা ছিল ৯/১১ এ আমেরিকার টুইনটাওয়ার ধ্বংস এবং এর সাথে জড়িত থাকার কারণ দেখিয়ে উসামা বিন লাদেনকে হত্যা করা। এ সপ্তাহে তালেবান মুখপাত্র মোল্লা জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, টুইনটাওয়ার ধ্বংসের সাথে বিন লাদেনের সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি আমেরিকা।
তালেবান আন্দোলন কান্দাহারের মাদরাসা শিক্ষক মোল্লা উমর মাত্র ৬০ জন ছাত্র নিয়ে শুরু করেন। তাদের সাথে যোগ দেয় প্রতিবেশী পাকিস্তানের ৬ শতাধিক ছাত্র। এরপর ধীরে ধীরে সারা আফগানিস্তানের মাদরাসা ছাত্রদের সমন্বয়ে এ সংখ্যা দেড় লাখে ওঠে। ২০ বছরের যুদ্ধে ৮০ হাজার শাহাদত বরণ করে বর্তমানে প্রায় আশি হাজার তালেবান রয়েছে।
দেশ সাম্রাজ্যবাদী বিদেশী সৈন্যমুক্ত করে স্বদেশী কমিউনিষ্ট, প্রো ইন্ডিয়ান, মার্কিন লবির রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তিগুলোকেও পরাজিত করে তাদের কাবুল বিজয় করতে হয়েছে। গত ৪০ বছরে সোভিয়েত ও মার্কিনীদের আগ্রাসনে এবং দেশীয় তাবেদারদের হাতে কমবেশি ৪ মিলিয়নেরও বেশি আফগান মৃত্যুবরণ করেছে। কোনো কোনো প্রদেশে শতকরা ১৬% কিশোর তরুন পঙ্গু হয়েছে। যারা চকলেট বোমা ও সাম্রাজ্যবাদের পেতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে আহত হয়। এতিম বিধবা সর্বস্বহারা গৃহহীন ও যুদ্ধাহতের সঠিক কোনো পরিসংখ্যান এখনো হয়নি। কোটির অংকে মানুষ যুদ্ধে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত।
সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল তালেবান নাম দিয়ে ফেইক মুজাহিদ ও মুক্তিযোদ্ধা দল। যারা দেশে সাবোটাজ করার পাশাপাশি বিদ্বেষী মিডিয়ার খোরাক যোগাতে বড় বড় অমানবিক ঘটনা ঘটাতো। মালালা নাটক এর অন্যতম। বর্তমানেও তালেবানের নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ইহুদি নাসারা ও মুশরিকদের তৈরি ফেইক মুজাহিদরা আত্মঘাতী হামলায় শান্তিচুক্তির আওতাধীন মার্কিন বাহিনী, তালেবান, সাধারণ আফগান মুসলিম জনগণকে হত্যা করছে।
একদল কাফের বানানোর কাজে ব্যস্ত লোক গোটা তালেবান নেতৃত্ব ও মুজাহিদদের কাফের মুরতাদ বলে ফতোয়া দিয়ে বেড়াচ্ছে। হানাফি মাজহাব অনুসারী তালেবান শক্তিকে কথিত সালাফিরা হত্যার পাঁয়তারা করছে। বিগত সময়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে অনেক তালেবান, মুজাহিদ ও আত্মঘাতী যোদ্ধা ধরা পড়েছে যারা মূলত হিন্দু খৃষ্টান ও অমুসলিম নানা ফেরকার বলে প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমানেও আফগান রাষ্ট্র পরিচালনায় তালেবান গোয়েন্দাদের এসব কথিত মুজাহিদদের গতিবিধির প্রতি কড়া নজর রাখতে হচ্ছে এবং এদের সমূলে উৎখাত করার জন্য তালেবান সরকারকে সবসময় সক্রিয় থাকতে হচ্ছে।
পাকিস্তানে গত বিশ বছরে আফগান মুজাহিদ ও তালেবান সমর্থক শত শত শীর্ষ আলেমকে হত্যা করা হয়। পাকিস্তানের বিন্নুরি টাউন জামিয়ার মুহাম্মদ বিন্নুরী, ড. হাবিবুল্লাহ মুখতার, জিয়াউর রহমান ফারুকি, মুফতি নিজামুদ্দিন শামজাই, মোল্লা উমরের উস্তাদ বাবায়ে তালেবানখ্যাত সিনেটর মাওলানা সামিউল হক ইবনে আব্দুল হক হাক্কানী, সলিমুল্লাহ খান সাহেবের পুত্র ড. মাওলানা নাসের খানসহ আরো শত শত আলেমকে গুলি করে হত্যা করা হয়। মাওলানা তাকি উসমানির ওপর একাধিকবার প্রাণঘাতী হামলা হয়। লাল মসজিদে গণহত্যা সঙ্ঘটিত হয়। আর্মি স্কুলে পৈশাচিক হামলায় শিশুদের হত্যা করা হয়। গত পঁচিশ বছর ধরে পাকিস্তানের সব মাদরাসায় সশস্ত্র গার্ড, রেঞ্জার ও গোত্রীয় বন্দুকধারীদের নিয়োগ করতে হয়। বড় সব আলেমদের সশস্ত্র রক্ষী পরিবেষ্টিত হয়ে চলতে হয়।
হত্যার গ্রাউন্ড নির্মাণ করা হয় ফেরকাগত মনোমালিন্য যেমন শিয়া সুন্নী, দেওবন্দী বেরেলভী, জিহাদপন্থী তাগুতপন্থী নামে তৈরি প্রেক্ষাপটকে। কিন্তু মারা গেছেন সব আলেম ইমাম ধর্মীয় নেতা ও সাধারণ মুসল্লি। এ সবের পেছনেও মুশরিক ও ইহুদীবাদী ফেইক মুজাহিদরা সক্রিয় ছিল। সঙ্গে ছিল কিছু উগ্রবাদী সরলমনা ছাত্রও। মূল খেলাটি না বুঝে তারা শয়তানী শক্তির ক্রীড়নক হয়ে এ কাজে সমর্থন যোগায়। দেশে দেশে হাক্কানী আলেম উলামা পীর মাশায়েখ ও সাধারণ জনগন যে উগ্রতা ও সন্ত্রাসের বিরোধিতা করে এসেছেন। সাধারণ মুসলিম রাষ্ট্র কেবল নয়, তালেবানের মত রাষ্ট্র ও সরকারকেও যে সন্ত্রাসী শক্তিটিকে দমনে তৎপর থাকতে হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।