বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঘোষণা করা হয়েছে সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচনের তারিখ। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহণ। আগামী ১ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টা থেকে ২ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টার আগ পর্যন্ত প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন। প্রচারণার জন্য হাতে মাত্র একদিন সময়। তবে লকডাউন উঠার পর থেকেই প্রচারণায় নেমে পড়েছেন এই আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। প্রচারণা মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে নৌকার প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব ও লাঙ্গলের আতিকুর রহমান আতিক। এতে করে প্রচারণা জমে উঠছে নৌকা লাঙ্গলে। তবে প্রচারণায় কিছু নাম গন্ধ ছড়াচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক বিএনপির এমপি শফি আহমদ চৌধুরী। একেবারের আড়ালে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী জুনায়েদ মুহাম্মদ মিয়া।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব পুরো আগস্ট মাস জুড়ে চালাচ্ছেন কৌশলী প্রচারণা। শোক দিবসের কর্মসূচী নামে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। এতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক নেতাও অংশ নিচ্ছেন। রোববার (২২ আগস্ট) শোকসভাকে সামনে রেখে হাবিবের পক্ষে প্রচারণা চালাতে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এবং কার্যনির্বাহী সদস্য আজিজুস সামাদ ডন সিলেটে আসেন। রোববার আওয়ামী লীগের এই পাঁচ কেন্দ্রীয় নেতা সিলেট-৩ আসনের নির্বাচনী এলাকা দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শোকসভায় এবং ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শোকসভায় বক্তৃতা করেন। এতে হাবিবের পক্ষে ভোট চান নেতারা। নৌকার প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব বয়েস তরুণ ও প্রাণবন্ত। নির্বাচনী যুদ্ধে নবাগত। নৌকার সমর্থকের বাইরের দীর্ঘদিনে নিজস্ব এক পরিচয় পরিচিতি গড়ে তুলেছেন তিনি। সেকারণে নির্বাচনী এলাকায় সহজে মানিয়ে নিতে পারছেন তিনি। তার লাস্যময় হাসি অনেকের নজর কাড়ছে। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামীলীগ রাজনীতির মারপ্যাঁচে এখনো পেছনে রয়েছেন তিনি। মানিয়ে বা ম্যানেজ করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে তার। এ আসনে তার মতো তরুণের চেয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেক প্রবীণ রাজনীতিক ছিলেন দলে। সেই রাজনীতিকদের স্বপ্ন সাধ ছিল নৌকা নিয়ে নির্বাচনের। কিন্তু সেই স্বপ্ন সাধ গুড়িয়ে দিয়েছেন হাবিব নৌকা প্রতীক নিশ্চিত করে। সেকারণে একটি মানসিক ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয় প্রবীণ রাজনীতিকদের মনে। সেই পরিবেশ পরিস্থিতি অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। তাদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ঘোড়া ডিঙ্গিয়ে ঘাস খেয়েছেন হাবিব, এর পরিমাণ মঙ্গলজনক নয়।’ স্থানীয়ভাবে দলের মধ্যে বিরাজমান এহেন পরিবেশ উত্তরণে সফল হলে হাবিবের নৌকার বিজয় পথ মসৃণ হয়ে যাবে, এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে হাবিব এক্ষেত্রে কতটুকু সফল হবেন, তা বলা বাহুল্য।
এদিকে, লাঙ্গলের প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক রয়েছেন প্রচারণায়। প্রতিদিন গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। জাতীয় পার্টির মনোনয়নে প্রার্থী হলেও তার পক্ষে এখন পর্যন্ত কোনো কেন্দ্রীয় নেতা প্রচারণায় অংশ নেননি। তবে স্থানীয় কয়েকজন জাপা নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ভালভাবেই প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। নির্বাচনী মাঠে অভিজ্ঞ আতিক। সফলতা না পেলেও ভোট রাজনীতির কৌশলে অনেক এগিয়ে তিনি। দলের সাংগঠনিক স্তর নিজ নির্বাচনী এলাকায় তেমন শক্তিশালী না থাকলেও তার প্রতি মায়া দরদ রয়েছে সাধারণ ভোটারদের। নির্বাচনে বারবার পরাজয়ের অতীত ঘটনায় সহানুভূতিশীল একটি মনোভাব দেখা দিয়েছে ভোটারদের মধ্যে। বলতে গেলে অনেক ইমোশনাল ভোট পড়বে তার বাক্সে। সেকারণে নৌকা ও লাঙ্গলের লড়াইয়ে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে এ আসনের ভোট।
এছাড়া দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতি করা প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরী দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে একক ভাবেই চালাচ্ছেন প্রচার প্রচারণা। প্রার্থী হওয়ায় দল থেকে তাকে বহিষ্কারও করা হয়। ফলে বহিষ্কৃত নেতার পক্ষে বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে তার সাথে নেই। প্রথমদিকে স্থানীয় কয়েকজন নেতা শফির সাথে প্রচারণায় থাকায় দল থেকে শোকজ করা হয় তাদেরকে। এরপর দলীয় শাস্তির ভয়ে আর কেউ শফির পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন না। তবে স্থানীয় কিছু তরুণ ও যুবক তার নির্বাচনী কাজে অংশগ্রহণ করছেন। তাই নিজের ব্যক্তি ইমেজ ও স্থানীয় মানুষের সহানুভূতিকে কাজে লাগিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।