আগামী অক্টোবরেই ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে। এবার প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদের মধ্যে আরও বেশি সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। প্রস্তাব এসেছে শিশুদেরও টিকা দেওয়ার।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মেনে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে গঠিত বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটির রিপোর্টে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতে ইতোমধ্যেই আছড়ে পড়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে দেশটিতে ‘আর ভ্যালু’ ১-এর ওপর ওঠে গেছে। একজন সংক্রমিতের থেকে কতজন আক্রান্ত হচ্ছেন, তা বোঝানো হয় এই ‘আর ভ্যালু’ দিয়ে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে যাতে আরও সতর্ক হয়ে মোকাবিলা করা হয়, তার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে রিপোর্টে। তৃতীয় ঢেউয়ের সময়ে বিপুলসংখ্যক শিশু সংক্রমিত হলে তাদের চিকিৎসার জন্য পর্যান্ত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসার সরঞ্জাম এবং পরিকাঠামো নেই ভারতে। এই বিষয়টির দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালেই বিশেষজ্ঞদের একাংশ সতর্ক করেছিলেন, তৃতীয় ঢেউয়ে রেহাই পাবে না শিশুরা। প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি সমান তালে বাড়বে তাদের ঝুঁকি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে শিশু চিকিৎসকদের ঘাটতি ৮২ শতাংশ ছুঁয়েছে। নানা রকম অসুখ-বিসুখ থাকার কারণেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে সংক্রমিত হওয়া ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। সুস্থ হওয়ার পর তাদের অনেকের মধ্যে বেশ কিছু শারীরিক সমস্যাও দেখা দিয়েছে।

সেই বিষয়টি উল্লেখ করে রিপোর্টে বলা হয়েছে, কিছুটা বাড়ির মতো করেই শিশুদের জন্য হাসপাতালে কোভিড ওয়ার্ড গড়ে তোলা যেতে পারে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে দ্রুত শিশু-চিকিৎসক নিয়োগে নজর দিতে হবে। সেই সঙ্গে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি নিয়েও ভাবতে হবে। বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশের দাবি, শিশুরা করোনায় আক্রান্ত হলেও তাদের শরীরের গুরুতর প্রভাব পড়বে না। তবে তাদের শরীর থেকেও অন্যের শরীরে ছড়াবে সংক্রমণ।
এদিকে অক্টোবর থেকেই বাঙালি হিন্দুদের পূজার মৌসুম শুরু হচ্ছে। তখন তৃতীয় ঢেউ সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠলে পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে, তা নিয়ে শঙ্কিত বিশেষজ্ঞরা। সূত্র : ইন্ডিয়া টুডে।