দিনাজপুরে পৃথক দুটি স্থানে বজ্রপাতের ঘটনায় ৪ কিশোরসহ ৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো দুজন। এই ঘটনায় দিনাজপুরের এম আবদুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক হৃদয় বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ৮ থেকে ১০ বছরের ৪ কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় তাদের পিতা-মাতা ও আত্বীয়স্বজনদের হাহাজারিতে হাসপাতাল চত্বরের মানুষদের চোখের পারি নেমে আসে।
সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে দিনাজপুরে প্রবলবেগে বৃষ্টি শুরু হয়। এসময় আকাশে বিদ্যুতের ঝলকানি চলতে থাকে। মূল শহরের উপকন্ঠে উপশহর ৮ নং ব্লকের রেলঘুমটি সংলগ্ন একটি মাঠে কিশোরেরা খেলা করছিল। মাঠের পাশেই একটি পুকুরে পাহাড়াদারদের জন্য থাকা একটি খড়ের ছাউনির নিচে ৭ কিশোর আশ্রয় নেয়। এসময় তারা মোবাইলে গেম খেলছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। বেলা সাড়ে তিন টার প্রচন্ড শব্দে বজ্রপাত হয় ওই খড়ের ছাউনিতে। বজ্রপাতে শব্দে কিশোরেরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে। জড়িয়ে ধরা অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এলাকার লোকজন ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে এবং একে অপর থেকে আলাদা করে। দ্রুত তাদের পার্শ্ববর্তী এম আবদুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে ৪ জনকে ডাক্তাররা মৃত ঘোষনা করে। নিহতরা হলো সাজ্জাদ (১০) পিতা আইনুল ইসলাম, মীম (৯) পিতা মৃত সাজু মন্ডল, আপন (১০) পিতা মকছেদ আলী ও জাহিদ হাসান (৮) পিতা মৃত আবু বক্কর সিদ্দিক। তৎক্ষনিকভাবে আহত দুজনের নাম পাওয়া যায়নি। ঘটনার পরপরই দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মর্তুজা আল মুইদ, কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচাজ মোজাফ্ফর হোসেন ও স্থানীয় ৪নং আস্করপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাসপাতালে ছুটে আসেন। টিএনও তাৎক্ষনিকভাবে সরকারের পক্ষ থেকে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে সহায়তা ঘোষনা করেন। আহতদের বিনামুল্যে চিকিৎসার কথা জানান। বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে ময়না তদন্ত ছাড়াই কিশোরদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
অপর আরো একটি বজ্রপাতের ঘটনা ঘটেছে প্রায় একই সময়ে। জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার শুকদেবপুর এলাকায় মাছ ধরা অবস্থায় বজ্রপাত হলে তিন জন মৃত্যুবরন করে। তাৎক্ষনিকভাবে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।