বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দোরগোড়ায় সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচন। ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণা হয়নি এখনো। তবে ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সমাপ্ত হবে এমনটিই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। বাধ্যবাধকতাকে টার্গেট করেই কৌশলী প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা। তবে নির্বাচনী প্রচারণায় নেই বললেই চলে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়া। প্রার্থীতার মধ্যে সীমাবদ্ধ তার কার্যক্রম। অপরদিকে বিএনপির (বহিষ্কৃত) সাবেক এমপি শিল্পপতি শফি আহমেদ চৌধুরী ব্যক্তি ইমেজে ভরসা রেখে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা। নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের মতে, সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়ার পাশাপাশি আওয়ামীলীগ প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব ও জাপার প্রার্থী আতিক নেমেছেন নিজস্ব ভোট ব্যাংক অক্ষত রাখতে। জাপার ঘুমন্ত একটি ভোট ব্যাংক রয়েছে, সেই সাথে শাসক দল আ’লীগের রয়েছে নিজস্ব ভোট ব্যাংক। তবে সেই ভোট ব্যাংকের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সমর্থন আদায়ে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছেন বিশেষ করে এই দুই প্রার্থী। এছাড়া এ আসনে বিএনপি জামাত, হেফাজতের উল্লেখযোগ্য ভোট রয়েছে। সেই ভোটের প্রতি মনোযোগী হয়ে উঠছেন এই দুই প্রার্থীই। কিভাবে ম্যানেজ করে সেই ভোটে ভাগ বসানো যায়, তাই নিয়ে নানাভাবে করছেন ফন্দিফিকির তারা। ভোটারদের ভরসা দিচ্ছেন পাশে থাকবেন, বিপদে-আপদে সুখে দু:খে। রাজনীতিক দমন নিপীড়নের অভয়ও দেখাচ্ছেন তাদের। এর মধ্যে দিয়ে হিসেব করছেন বিজয়ের ভরসা।
অপরদিকে, ৯ আগস্ট মোগলাবাজার থানার দাউদপুর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির উদ্যোগে নির্বাচনী মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ওই সভার সভাপতি মোগলাবাজার থানা জাপার সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করার আহ্বান জানানোর পরিবর্তে নিজেই ক্ষোভ ঝাড়েন দলীয় প্রার্থী আতিকের বিরুদ্ধে। প্রার্থীর বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে তার বক্তব্যের মধ্যেই জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। এর আগে একই সভায় মোগলাবাজার থানা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমদও বক্তৃতা দিতে এসে পদত্যাগ করেন। তারা পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ার সাথে সাথে সভায় উপস্থিত অনেক নেতাকর্মীও হাততালি দিয়ে সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান তাদের। নির্বাচনী সভায় পদত্যাগের এই ঘটনাকে গভীর ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক। তবে জাপার প্রার্থী আতিক সূত্র জানায়, সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি সহ নানামুখী চাপে ঘর ভাঙ্গার খেলা হচ্ছে জাপার। এর মধ্যে দিয়ে স্বচ্ছ ভোট গ্রহণের প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। এছাড়া সূত্র জানায়, প্রতিদ্বন্দ্বী এক প্রার্থী সুবিধাবাদী কিছু নেতাকর্মীকে দিয়ে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।
এদিকে, আওয়ামী লীগের একটি অংশকে ‘ম্যানেজ’ করার চেষ্টা করছেন আতিকও। দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত কয়েকজন নেতা ও প্রয়াত সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী বলয়ের কতিপয় নেতাকে গোপনে নিজের পক্ষে রাখার চেষ্টা করছেন আতিক। এই মিশনে অনেকটা সফলও তিনি। নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত অনেককেই দেখা যায়নি। তবে আওয়ামী লীগের ঘরে আতিকের হানা দেয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, সিলেট-৩ আসনের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ। নৌকা প্রতীকের বিজয় নিশ্চিতে তারা স্বেচ্ছায় কাজ করছেন। নৌকার পক্ষে গণজোয়ার দেখে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরাও এখন কাজ করছেন নৌকার পক্ষে। লকডাউন শিথিলের পর পুনরায় প্রচারণায় নেমেছেন বিএনপি থেকে সদ্য বহিষ্কৃত সাবেক সাংসদ শফি আহমেদ চৌধুরী। প্রচারণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংসদ সদস্য থাকাকালে এলাকায় অনেক উন্নয়ন করেছেন তিনি। তার ব্যক্তি ইমেজ ও উন্নয়ন বিবেচনায় সাধারণ মানুষ তার পক্ষে আছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।