Inqilab Logo

সোমবার ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ কার্তিক ১৪৩১, ০১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতেই পালিয়েছি : ফেসবুক পোস্টে আশরাফ ঘানি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০২১, ১১:৫৫ এএম

আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি দেশত্যাগের পর প্রথমবারের মতো দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে মন্তব্য করে বলেন, আফগানিস্তানে রক্তের বন্যার এড়াতেই তিনি পালিয়ে গেছেন। এছাড়া তার হাতে আর কোন বিকল্প ছিল না। ৬০ লক্ষ মানুষের কাবুল নগরীতে রক্তপাত, খুনোখুনি এবং ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে আগেভাগেই দেশত্যাগের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
রবিবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, কাবুল ঘেড়াওয়ের খবর শুনে দেশ ত্যাগ করেন আশরাফ ঘানি। বিশ্ব গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, তিনি বর্তমানে তাজিকিস্তানে অবস্থান করছেন, বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইন্টেরিয়র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
আশরাফ গণি ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, ‘আজ আমি এক কঠিন পরিস্থিতি পার হয়ে এসেছি। ২০ বছর ধরে আমি নিজেকে আমার দেশের জন্যই উৎসর্গ করেছি। আমি যদি কাবুলে থেকে সশস্ত্র তালেবানদের সঙ্গে লড়াইয়ে নামতাম, তাহলে কাবুল ধ্বংস হয়ে যেত। অনেক দেশপ্রেমিক নাগরিক শহীদ হতেন। পরিণামে নেমে আসত ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। খবর বিবিসি, গার্ডিয়ান ও আল-জাজিরার
আত্মপক্ষ সমর্থন করে তিনি আরও লিখেছেন, তালেবান আমাকে সরিয়ে দিতে পেরেছে। তারা কাবুলে ঢুকে পড়েছে এখানকার বাসিন্দাদের ওপর হামলা চালাতে। এমন অবস্থায় রক্তের বন্যা এড়াতে প্রাসাদ থেকে চলে আসাটাই আমি শ্রেয় মনে করেছি।
দীর্ঘ ২১ বছর পর আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসা তালেবান এখন ‘ঐতিহাসিক পরীক্ষার’ সম্মুখীন হবে বলে মন্তব্য করেন আশরাফ গনি।
তিনি বলেন, ‘তালেবান তলোয়ার ও বন্দুকের যুদ্ধে জিতে গেছে। দেশবাসীর সম্মান, সম্পদ ও সুরক্ষার দায়িত্ব এখন তাদের। আফগানিস্তানের জনগণের ভালোবাসা তাদের জিতে নিতে হবে। দূর করতে হবে ভয় ও আশঙ্কা।’
ফেসবুক পোস্টে আশরাফ গনি জানাননি তিনি কোথায় গেছেন। তবে রোববার সন্ধ্যার দিকে আফগান গণমাধ্যম টোলো জানায়, তিনি তাজিকিস্তানে পালিয়ে গেছেন।
বাংলাদেশ সময় রোববার রাত দুইটার দিকে আল-জাজিরার এক সাংবাদিকের টুইট উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানায়, আশরাফ গনি তার স্ত্রীসহ এরই মধ্যে তাজিকিস্তানে পৌঁছে গেছেন। সঙ্গে তার জাতীয় নিরাপত্তা উদেষ্টা ও চিফ অব স্টাফ রয়েছেন।
রোববার দুপুরে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের দখল নিয়ে নেয় তালেবান বাহিনী। তার আগে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর জালালাবাদের দখল নেয় তালেবান। কোনো যুদ্ধ ছাড়াই তালেবান শহরটির দখল নিতে সক্ষম হয়। জালালাবাদ দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে অন্তত ২৮টির রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিল তালেবান।
কাবুল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর রোববার বিকেলে তালেবানের শীর্ষ নেতা মোল্লা আবদুল গনি বারাদার কাবুলে প্রেসিডেন্ট প্যালেসে যান। এসময় তার সঙ্গে বিদেশি কূটনীতিকরাও ছিলেন।
তাদের বৈঠক চলাকালীন আফগানিস্তানের গণমাধ্যমে খবর আসে, আশরাফ গণি পদত্যাগ করেছেন। এর কিছুক্ষণ পর তিনি মন্ত্রিসভার ক'জন সদস্য ও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে তাজিকিস্তানের উদ্দেশ্যে রওনা হন বলে আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ জানান।
এদিকে দেশকে সঙ্কটে রেখে ‘পালিয়ে যাওয়ার অপরাধে’ আফগানরা প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির ‘বিচার করবে’ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির শীর্ষ রাজনীতিক আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ।
তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনার লক্ষ্য নিয়ে জাতীয় আপোষবিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের শান্তি কাউন্সিল গঠন করা হলে তার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ।
ফেসবুক দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় আশরাফ গনিকে ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে উল্লেখ করে আবদুল্লাহ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘দেশকে এই পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে চলে গেছেন। আল্লাহর কাছে তিনি দায়বদ্ধ থাকবেন এবং জাতি তার বিচার করবে।’ সূত্র : বিবিসি, গার্ডিয়ান ও আল-জাজিরা



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফেসবুক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ