Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গৌরনদীর টরকী বন্দরে ফিল্মি ষ্টাইলে গন ডাকাতি ৫০ লক্ষাধীক টাকার মালামাল লুট

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০২১, ৮:২৪ পিএম

বরিশালের বৃহত বানিজ্য বন্দর গৌরনদীর টরকী বন্দরে ফিল্মি ষ্টাইলে গন ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে শণিবার রাতে। সংঘবদ্ধ ডাকাতদল বন্দরের ব্যবসায়ীসহ পাহারাদারদের বেধে রেখে ১৪টি দোকান থেকে নগদ টাকা ও মালামালসহ ৫০লক্ষাধীক টাকার সম্পদ লুটে নিয়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ব্যবসায়ীরা জানান, ২৫-৩০ জনের একটি সংঘবদ্ধ সশস্ত্র ডাকাতদল রাত সোয়া ২টার দিকে বন্দর সংলগ্ন আড়িয়াল খাঁ নদ-এর শাখা নদীপথে ট্রলার যোগে এসে বন্দরে ঢুকে ফিল্মি ষ্টাইলে রায় পট্টির ব্যবসায়ী ও পাহারাদারদের আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গনডাকাতি শুরু করে। এরপর প্রায় পৌনে ২ঘন্টা ধরে পুরো গলি যুড়ে তান্ডব চালায়। বন্দরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখাগেছে, সশস্ত্র ডাকাত দলের অধিকাংশ সদস্য খোলা মুখে থাকলেও ২-৩জন ছিলেন মুখোশ পরিহিত।
ব্যবসায়ী মানিক সাহা (৩৭) জানান, ডাকাত দল প্রথমে তাদের মহাজনী দোকানের শার্টার ভেঙ্গে ভেতরে ঢোকে। এ সময় তিনি দোকানের ভেতরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ডাকাতরা তাকে আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বেঁধে ফেলে ও দোকানের মালামাল তছনছ করে। এরপর দোকানের সিন্দুক ভেঙ্গে নগদ টাকা ও মালামালসহ ১০/১২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
ব্যবসায়ী অমর রায় জানান, একইভাবে ডাকাতদল ওই গলির পূন্য গোপাল রায়ের দোকানে ঢুকে দোকান কর্মচারী শ্যামল মন্ডল(৩০)কে কাটা রাইফেল, পিস্তল, রামদা দেখিয়ে জিম্মি করে বেধে ফেলে। এরপর ওই দোকানের মালামাল তছনছ করে সিন্দুক ভেঙ্গে নগদ ১লক্ষ টাকা ও মালামাল নিয়ে যায়।
সশস্ত্র ডাকাতদল একই সাথে বন্দরের ৬জন পাহারাদার, বন্দরে চলাচলরত ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও পথচারীসহ অর্ধশতাধিক মানুষকে বেঁধে জিম্মি করে ১৪টি দোকানে লুটপাট চালায়। ডাকানদল রায়পট্টির দোকানগুলো থেকে নগদ প্রায় ৩৫ লাখ টাকা, মোবাইল ফোন, দামি ব্রান্ডের সিগারেটসহ ৫০লক্ষাধীক টাকার মালামাল লুট করেছে বলে ব্যবসায়ীরা প্রাথমিকভাবে ধারনা দিয়েছেন। ডাকাতদলের সদস্যদের বেশিরভাগই শর্টপ্যান্ট, গেঞ্জি পরে ছিল। ডাকাতি শেষে ফিরে যাওয়ার সময় তারা বিভিন্ন পথচারীকে মারধর করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। রাত ৪টার দিকে ফিরে যাওয়ার সময় ডাকাতদল দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে ট্রলারযোগে পালরদী নদীপথে নির্বিঘেœ পালিয়ে যায়।
বন্দরের ব্যবসায়ী রুহুল আমীন সিকদার জানান, শুক্রবার ছিল এ বন্দরের সাপ্তাহিক হাট। শুক্র ও শনিবার দুইদিন সরকারি ছুটির কারনে ব্যাংক বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা তাদের বেচা-কেনার নগদ টাকাগুলো যার যার দোকানেই রেখে দিয়েছিল।
ওই বন্দরের বাসিন্দা গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ জয়নাল আবেদীন হাওলাদার বলেন, স্বাধীনতার পর টরকী বন্দরে এ রকম ঘটনা আর কখনও ঘটেনি। অথচ এই বন্দরে পুলিশের একটি ফাঁড়িও রয়েছে। তাদের কোন ভূমিকাই ব্যবসায়ীদের চোখে পরেনি। ঘটনাটি আমাদের বিস্মিত করেছে।
গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রব হাওলাদার সাংবাদিকদের জানান, ওই বন্দরের রায়পট্টির দোকানগুলোর তালা ভেঙ্গে ডাকাতদল নগদ টাকা লুট করে ট্রলারযোগে পালিয়ে গেছে। আমিসহ পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনা তদন্তে পুলিশের একাধিক টীম কাজ করছে বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লুট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ