Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতীয় শিক্ষার্থীর সর্বস্ব লুট : গ্রেফতার সাত

গাড়ি ভাড়া নিয়ে রাতভর ডাকাতি করত এ চক্র

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৩ এএম

বাংলাদেশে অধ্যয়নরত দুই ভারতীয় শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সর্বস্ব লুটের ঘটনায় সাত ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। গত শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও কেরানীগঞ্জ এলাকায় ধারাবাহিক অভিযানে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো- ফখরুল ইসলাম ফকু, আলমাস, সামুন, আব্দুল্লাহ আল ইউসুফ আহম্মেদ আসিক, শাহিন, বাবু ও শফিকুল ইসলাম। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১টি প্রাইভেটকার, ২টি চাপাতি, ১টি ল্যাপটপ ও ১৯ টি মোবাইল ফোন সেট, ৪৩ হাজার ৯৫০ ভারতীয় রুপি ও ৩ হাজার বাংলাদেশি টাকা উদ্ধার করা হয়। গতকাল শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবি দক্ষিণের যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম।

গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, চক্রটি বিভিন্নজনের ব্যক্তিগত গাড়ি ভাড়া নিয়ে ডাকাতি করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে চক্রটি গাড়ির নম্বর প্লেট স্কচটেপ দিয়ে ঢেকে দিতো। চক্রটি সপ্তাহে একদিন রাতভর একাধিক ডাকাতি করতো।
ডিবি দক্ষিণের যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, রাজধানীর মগবাজারের ওয়ারলেস এলাকায় ডা. সিরাজুল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অধ্যয়নরত ভারতীয় দুই শিক্ষার্থী শাহীল আহমেদ ও আসিফ ইকবাল দুই সপ্তাহের ছুটিতে ভারতে ফেরার পথে গত ২৩ জানুয়ারি ভোর রাতে ছিনতাইয়ের শিকার হন। ঘটনার সময়ে সাদা রঙের গাড়িতে থাকা চারজন তাদের পথ রোধ করে। তারা সবাই মুখোশ পরা ছিল। চারজনের মধ্যে দু’জন দুই শিক্ষার্থীর গলায় ছুরি ধরে। অপর দুজন তাদের সঙ্গে থাকা ট্রলি ব্যাগ, হ্যান্ডব্যাগ, ল্যাপটপ, মোবাইল, ৫৭ হাজার ভারতীয় রুপি ও ৭৬ হাজার টাকা নিয়ে যায়। ঘটনার দিন ভুক্তভোগীরা রমনা থানায় একটি ছিনতাই মামলা করেন। থানা পুলিশের পাশাপাশি মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগ। মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত একটি ডাকাত দলের সন্ধান পাওয়া যায়। ঘটনার সময়ে চারজন উপস্থিত থাকলেও ডাকাত দলের সাত সদস্যের তথ্য পাওয়া যায়। ডিবির যুগ্ম কমিশনার আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত ডাকাত চক্রের সদস্যরা অভিনব কায়দায় ডাকাতি করে আসছিল। তারা বিভিন্নজনের কাছ থেকে গাড়ি ভাড়া নিয়ে রাতভর ডাকাতি করতো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিতে তারা গাড়ির নম্বর প্লেট ঢেকে দিতো। পুরো রাজধানী জুড়ে দাপিয়ে বেড়াতো চক্রটি। আর সুযোগ পেলেই তারা সাধারণ মানুষের সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত চলে যেত। চক্রটি সপ্তাহে একদিন ডাকাতি করতো। চক্রের প্রত্যেক সদস্যের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের মধ্যে মূলহোতা অনিকের বিরুদ্ধে আটটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। ঘটনার পরে ছিনতাই মামলা হলেও ডাকাতির প্রমাণ পাওয়ায় এই মামলা ডাকাতিতে রূপান্তর হবে।
রাজধানীতে প্রায়ই এ ধরনের ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে, আপনাদের নজরদারি নেই কেন? এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টহল পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও নজরদারি রয়েছে। যেখানে ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো ঘটছে সেখানে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়েই ছিনতাইকারীরা এমন ঘটনা ঘটাচ্ছে। যারা ছিনতাইয়ের কাজ করে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসাই গুরুত্বপূর্ণ কাজ, সেই কাজটিই ডিবি পুলিশ করে যাচ্ছে।
প্রাইভেটকার যারা ভাড়া দিচ্ছেন তাদের উদ্দেশে ডিবির পরামর্শ সম্পর্কে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় গাড়ির মালিক জানতেন না তার গাড়ি ভাড়া নিয়ে ছিনতাই কাজে যাচ্ছে। পরিচিত অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকে গাড়ি ভাড়া না দেয়ার জন্য অনুরোধ রইলো। গ্রেফতার ছিনতাইকারীরা নির্দিষ্ট কোনো এলাকায় ছিনতাই করতো নাকি সমগ্র ঢাকা শহরে ছিনতাই করতো? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তাদের নির্দিষ্ট কোনো এলাকা নেই। রাতে বের হয়ে সময়-সুযোগ বুঝে ছিনতাই করতো। ১৮টি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। এই মোবাইলগুলোর মালিক কে বা কারা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উদ্ধার ১৮মোবাইলের মধ্যে একটি মোবাইল ভুক্তভোগী একজন শিক্ষার্থীর। বাকি ১৭টি মোবাইলের সূত্র ধরে ভুক্তভোগীদের ফেরত দেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারতীয় শিক্ষার্থীর সর্বস্ব লুট : গ্রেফতার সাত
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ