Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে ২ মাসের শিশু খুনের ঘটনায় সেই ঘাতক আয়া কারাগারে

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০২১, ৭:৫১ পিএম

সিলেটে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনস্থ নগরীর বাগবাড়িস্থ ছোটমনি নিবাসে ২ মাসের শিশুকে খুনের ঘটনায় ঘাতক আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকাকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। আজ শনিবার (১৪ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে সুলতানাকে সিলেটের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাইফুর রহমানের আদালতে প্রেরণ করা হয়। এসময় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন তিনি। এরর সন্ধ্যায় তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন আদালত।

আয়া সুলতানা গত ২২ জুলাই ছোটমনি নিবাসে ২ মাস ১১ দিন বয়সের নাবিল আহমদকে প্রথমে সজোরে ছুড়ে ফেলেন এবং পরে বালিশচাপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন তার। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দিবাগত (১৩ আগস্ট) রাতে ঘাতক আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। শুক্রবার তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানার এস.আই মাহবুব মন্ডল বাদী হয়ে দায়ের করেন একটি হত্যা মামলা। এদিকে, অবুঝ শিশু নাবিলকে হত্যার পর ঘটনাটি গোপন রাখেন ছোটমনি নিবাসের দায়িত্বে থাকা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এ কারণে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধেও নেয়া হতে পারে আইনি ব্যবস্থা।

জানা গেছে, গত ২২ জুলাই দিবাগত রাত ১১টার দিকে নগরীর বাগবাড়িস্থ ছোটমনি নিবাসে মাত্র ২ মাস ১১ দিন বয়সী শিশু নাবিল আহমদ কান্নাকাটি শুরু করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দেখভালের দায়িত্বে থাকা আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকা। বিরক্ত হয়ে একপর্যায়ে নাবিলকে বিছানা থেকে তুলে সজোরে ছুড়ে ফেলেন সুলতানা। এসময় বিছানার স্টিলের রেলিংয়ে বাড়ি খেয়ে মাটিতে পড়ে যায় শিশুটি। প্রচন্ড আঘাতের ফলে তৎক্ষণাৎ জ্ঞান হারায় শিশু নাবিল। এরপর নাবিলের মুখের উপরে বালিশ চেপে ধরে পাষণ্ড আয়া সুলতানা নিশ্চিত করেন তার মৃত্যু। এরপর প্রমাণাদি লোপাটের চেষ্টা করেন তিনি। তাকে সহযোগিতার করেন ছোটমনি নিবাসের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার লক্ষ্যে ২৪ জুলাই কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা (নম্বর-৪৫) দায়ের করা হয়। ময়না তদন্তের পর নাবিলের লাশ করা হয় দাফন।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) রাতে কোতোয়ালি থানা পরিদর্শনে আসেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উপ-কমিশনার (ডিসি উত্তর) আজবাহার আলী শেখ। এসময় শিশু নাবিলের অপমৃত্যু মামলাটি দৃষ্টিগোচর হয় তার।

বিষয়টি তার কাছে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় রাত ১১টায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আবু ফরহাদ এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাহবুবসহ পুলিশ ফোর্স নিয়ে বাগবাড়ির ছোটমনি নিবাসে ছুটে যান ডিসি আজবাহার আলী শেখ। সেখানের সিসি ক্যামেরায় শিশু নাবিল খুনের পুরো ঘটনাটি রেকর্ড হয়েছিলো। ক্যামেরায় ধারণ হয় সুলতানা কীভাবে নাবিলকে ছুড়ে ফেলে এবং বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। সিসি ফুটেজ দেখে আয়া সুলতানা ফেরদৌসী সিদ্দিকাকে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করার নির্দেশ দেন আজবাহার আলী শেখ। পরে সুলতানাকে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমকিভাবে নাবিলকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন সুলতানা। সুলতানাকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আবু ফরহাদ বলেন, আয়া সুলতানা শিশু নাবিলকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যার বিষয়টি পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। পরে তাকে আজ (শনিবার) বিকেলে আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালতেও তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীর মাধ্যমে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন। পরে কারাগারে প্রেরণ করেন বিজ্ঞ আদালত।

সুলতানাকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আবু ফরহাদ শনিবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় বলেন, আয়া সুলতানা শিশু নাবিলকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যার বিষয়টি পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। পরে তাকে আজ (শনিবার) বিকেলে আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালতেও তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীর মাধ্যমে স্বীকারোক্তি প্রদান করেন। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন বিজ্ঞ আদালত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিলেট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ