Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা টিকা বেসরকারি খাতে না দেয়ার সুপারিশ

আমদানিকৃত টিকার মেয়াদ ৬ মাস থাকতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

 করোনাভাইরাসের টিকা বেসরকারি খাতে দেওয়া হলে অব্যবস্থাপনা বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির বৈঠকে টিকা কোনোভাবেই না দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিদেশ থেকে আমদানির আগে টিকার মেয়াদ ৬ মাস আছে কিনা তা দেখে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স, মো. আব্দুল মজিদ খান ও মো. হাবিবে মিল্লাত এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান সাংবাদিকদের বলেন, বেসরকারিভাবে টিকা দেওয়ার জন্য মোবাইলে এসএমএস দেওয়া হচ্ছে। আমি নিজেই এ ধরনের এসএমএস পেয়েছি। কোন কোন ধরনের টিকা পাওয়া যায়, সেটাও জানানো হচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা সতর্ক থাকতে বলেছি। কোনোভাবেই বেসরকারিভাবে টিকা না দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কারণ বেসরকারি খাতে টিকা এলে অব্যবস্থাপনা বেড়ে যাবে। দেখা যাবে, মেয়াদোত্তীর্ণ টিকা নিয়ে আসবে। পানি ভরে টিকা দেওয়া হবে। আর সব দোষ পড়বে সরকারের ওপর। আবার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পর্যন্ত টিকা বিক্রিতে নেমে পড়বেন। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই টিকা কমিটির সদস্য। আমরা তাকে বলেছি, ওই কমিটিতে যেন আমাদের এই পর্যবেক্ষণ জানানো হয়।

কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে বিভিন্ন দেশ বা প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্যাকসিন আমদানির ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের মেয়াদ যাতে ছয় মাস থাকে, তা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি পাইপলাইনে থাকা ভ্যাকসিনগুলো দ্রæততম সময়ে আনার জন্য তৎপরতা অব্যাহত রাখতে কমিটি থেকে মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি বলেন, আমরা বলেছি, টিকার মেয়াদ কতদিন আছে, সেটা আনার আগে দেখে নিতে হবে। সেই টিকা আমরা যেভাবেই পাই না কেন, উপহার হিসেবে হোক বা কিনে আনা হোক। কারণ দেখা গেলো, বাংলাদেশে এসে যখন টিকা পৌঁছালো তার মেয়াদ ১৫ থেকে ২০ দিন রয়েছে। ওই টিকা পরে মাঠ পর্যায়ে যেতে যেতে আর মেয়াদই থাকবে না। রোল আউট করতে করতে ডেট চলে যাবে। তাই এ বিষয়ে আমরা তাদের সতর্ক করে দিয়েছি।

কমিটির বৈঠকে জানানো হয়, দেশে এখন চারটি কোম্পানির কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া হচ্ছে। এগুলো হলো, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার-বায়োএনটেক, মর্ডানা ও সিনোফার্মের টিকা। গত ১১ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন উৎস থেকে এসব কোম্পানির মোট দুই কোটি ৯০ লাখ ৪৩ হাজার ৯২০ ডোজ টিকা এসেছে। আর গত ১০ আগস্ট পর্যন্ত এক কোটি ৯৬ লাখ ৭১ হাজার ৬২০ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। মজুত আছে ৫৯ লাখ ৭২ হাজার ৩০০ ডোজ।

বৈঠকে ১০ বছর বয়স পর্যন্ত বিদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের টিকার আওতায় আনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া বৈঠকে বিশ্বব্যাংকসহ যে সকল দাতা সংস্থা ও দেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে অর্থ ও মানবিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে রাখার ব্যাপারে কথা বলছে তাদের প্রত্যেককে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মায়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টির জন্য অনুরোধ জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। আর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমগুলো ই-মেইলের মাধ্যমে নিয়মিত অবহিত করার এবং জাতিসংঘের আসন্ন সাধারণ অধিবেশনে সংসদীয় কমিটির সদস্যদের অংশগ্রহণের বিষয়টি বিবেচনার সুপারিশ করা হয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টিকা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ