পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নব্য জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান জাহিদ হাসান রাজু ওরফে ইসমাঈল হাসান ওরফে ফোরকানসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। রসায়নের মেধাবী ছাত্র ফোরকান তৎকালীন নব্য জেএমবির আমীর মুসার সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন। মেধা ও সাহসিকতার জন্য দ্রæত সংগঠনের সামরিক শাখার সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান জাহিদ। তার নেতৃত্বে বান্দরবানে সামরিক প্রশিক্ষণ ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একাধিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। অল্পদিনে তিনি গ্রেনেড ও বোমা বানানোয় দক্ষতা অর্জন করেন। আইইডি প্রস্তুতেও দক্ষ জাহিদ সংগঠনের বেশ কয়েকজন বিশ্বস্ত সদস্যকে বোমা ও গ্রেনেড তৈরিতে দিয়েছেন প্রশিক্ষণ।
গতকাল দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিটিটিসি প্রধান ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রæপের উপ-পুলিশ কমিশনার আব্দুল মান্নান ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রহমত উল্লাহ চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামান জানান, গত মঙ্গলবার রাজধানীর কাফরুল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সিটিটিসির বোম ডিসপোজাল ইউনিটের একটি টিম বিশেষ নব্য জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান প্রশিক্ষক ও বোমা প্রস্তুতকারক জাহিদসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার অন্যরা হলেন- সাইফুল ইসলাম মারুফ ওরফে বাসিরা ও রুম্মান হোসেন ফাহাদ ওরফে আব্দুল্লাহ। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে বিস্ফোরক পদার্থ, ঢাকনাযুক্ত জিআই পাইপ, রিমোট কন্ট্রোল ডিভাইস, লোহার বল, সাংগঠনিক কাজে ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ফোন ও একটি ট্যাব উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র জাহিদ হাসান রাজু ওরফে ইসমাঈল হাসান ওরফে ফোরকান। তিনি রসায়ন বিভাগ থেকে অনার্স শেষ করার পর ২০১৬ সালে অনলাইনে ‘হোয়াইট হাউজের মুফতি’ নামক আইডির মাধ্যমে তৎকালীন আমির মুসার হাত ধরে নব্য জেএমবিতে যোগদান করেন। আমির মুসার সঙ্গে কাজের সুবাদে সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় জঙ্গিদের নজরে আসেন তিনি।
রসায়নে পারদর্শী হওয়ার কারণে তার মেধা এবং সাহসের জন্য তাকে এই সংগঠনের সামরিক শাখার সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি অল্পদিনে গ্রেনেড ও বোমা বানানোর অত্যন্ত দক্ষ হয়ে ওঠেন। নিত্য-নতুন কৌশলে আইইডি, বোমা ও গ্রেনেড তৈরিতে পারদর্শী জাহিদ বিশ্বস্ত সহযোগীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিতেন।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসি তথা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে নব্য জেএমবির শীর্ষস্থানীয় জঙ্গিরা গ্রেফতার বা নিহত হলে এই সংগঠনটি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। জাহিদ তখন গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান। পরে তিনি আমিরের নেতৃত্বে সংগঠনকে সংগঠিত করার উদ্যোগ নেন। তারই অংশ হিসেবে অনলাইনে আইডি খোলার মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সামরিক বিভাগে কাজ করতে আগ্রহী সাহসী সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের টাইম ও রিমোট কন্ট্রোল বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিতেন।
তিনি বলেন, নব্য জেএমবির কার্যক্রম বিস্তৃত করার পরিকল্পনা ছিল জাহিদের। রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক নব্য জেএমবিকে বিস্তৃত করতে তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একাধিকবার মিটিং ও যাতায়াত করেন।
গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনা ছিল জাহিদের: বড় কোনো কেমিক্যাল সাপ্লাই কোম্পানিতে চাকরি করে সেখান থেকে বিস্ফোরক সামগ্রী নিয়ে আইইডি তৈরির পরিকল্পনাও করেছিলেন জাহিদ। তিনি শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের আওতাধীন মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়াম থেকে কারাতে প্রশিক্ষণও গ্রহণ করেন। সর্বশেষ তিনি ড্রোন বানানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। ড্রোনের সাথে এক্সপ্লোসিভ যুক্ত করে কোনো জায়গায় আক্রমণের পরিকল্পনার পাশাপাশি সামরিক শাখার প্রধান নিযুক্ত হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, পুলিশ বক্সে হামলার পরিকল্পনার সাথেও জড়িত ছিলেন। আমির মুসার নির্দেশে যেসব হামলার ঘটনা ঘটেছে সেসব হামলায় জাহিদ সমন্বয়কের ভ‚মিকা পালন করেছেন বলেও দাবি সিটিটিসির।
গ্রেফতার অপর অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম মারুফ একজন দক্ষ বোমা তৈরির কারিগর। তিনি অনলাইনে জাহিদের নিকট হতে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বেশ কয়েকটি বোমা হামলার ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন।
প্রশিক্ষণের জন্য বান্দরবানে হিজরত: সাইফুল ইসলাম মারুফ এবং গ্রেফতার অপর অভিযুক্ত মো. রুম্মান হোসেন ফাহাদসহ সংগঠনের সিদ্ধান্তে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার লক্ষ্যে বান্দরবান এলাকায় হিজরত করেন জাহিদ।
সিটিটিসি প্রধান জানান, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে কাফরুল থানায় মামলা হয়েছে। মামলা তদন্ত অব্যাহত আছে। গ্রেফতারদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।