পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে টানা ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। এবারের লকডাউন সবচেয়ে কঠোর হলেও গণমাধ্যম নিষেধাজ্ঞার বাইরে রয়েছে। সরকার ঘোষিত প্রজ্ঞাপনেও গণমাধ্যমের কর্মীদের কাজ ও চলাচল অব্যাহত রাখার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে বহুল প্রচারিত জাতীয় দৈনিক ইনকিলাবের স্টাফ রিপোর্টার মো. শামছুল ইসলামের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের ডেমরা জোনের এডিসি দীন মোহাম্মদ। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সাইনবোর্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সাংবাদিক শামছুল ইসলাম জানান, গত বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে ঢিলেঢালা লকডাউনে ঢাকা-চিটাগাং রোডের সাইনবোর্ড মোড়ে সাদা পোশাকে ওয়ারলেস সেট হাতে নিয়ে যানবাহন থামিয়ে চেক করছেন ডেমরা জোনের এডিসি দীন মোহাম্মদ। এ সময় তাকে সহায়তা করছেন আরো কয়েকজন পুলিশের কনস্টেবল। ডেমরার সারুলিয়ার পূর্ববক্স নগরস্থ বাসা থেকে সিএনজি-অটোরিকশা যোগে তিনি মতিঝিল অফিসে আসছিলেন। সাইনবোর্ড এলাকা অতিক্রম করার সময় দীম মোহাম্মদ সিএনজি অটোরিকশাটি থামান। এ সময় সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ওয়ারলেস সেট উঁচু করে ক্ষিপ্ত স্বরে সংবাদপত্রের সিএনজি চালককে বলেন, বাম দিকে চাপা। চালক ভীত-সন্ত্রস্ত স্বরে বলে উঠেন, ‘আল্লাহ জানেন কী অপরাধ করলাম। রাস্তার পাশে চাপাতেই দু’তিন জন পুলিশ কনস্টেবল সংবাদপত্রের সিএনজিটিকে ঘিরে ধরে উত্তেজিত স্বরে বলেন, কই যাচ্ছেন? রাস্তায় বের হয়েছেন কেন? এসময় সিএনজির ভেতর থেকে সাংবাদিক তার পরিচয়পত্র দেখিয়ে বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যেই ঢাকার পত্রিকা অফিসে যাচ্ছি। কনস্টেবল পুলিশ কর্মকর্তার উদ্দেশে বলেন, স্যার দৈনিক ইনকিলাবের সাংবাদিক। সাংবাদিক শুনেই দীন মোহাম্মদ ক্ষিপ্ত হয়ে উচ্চ স্বরে বলেন, কিসের ইনকিলাব।
সিএনজিতে সংবাদপত্র ব্যানার লাগিয়ে বের হবেন কেনো? এ কথা বলেই পুলিশের ওই কর্মকর্তা ব্যানার খুলে রাখার ইশারা দেন। সাথে সাথে দুই কনস্টেবল সিএনজির সামনে রশি দিয়ে বাধা সংবাদপত্র ব্যানারটি মুহূর্তে টেনে হিচড়ে খুলে নিয়ে লোহার ব্যারিকেডের উপর ছুঁড়ে মারে। এসময় উপস্থিত পথচারিরা পুলিশের আচরণে হতবাক হন। ওয়ারলেসধারী পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকের উদ্দেশে বলেন, সংবাদপত্র ব্যানার নিয়ে রাস্তায় বের হবেন না। পত্রিকার কার্ড থাকলেই হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছিনিয়ে নেয়া সংবাদপত্রের ব্যানারটি দেয়া যাবে না। আপনারা চলে যান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের ডেমরা জোনের এডিসি দীন মোহাম্মদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, সিএনজির অটোরিকশায় সংবাদপত্র ব্যানার লাগিয়ে অনেকই চলাফেরা করছেন। তাই ব্যানার খুলে ফেলা হয়েছে। আইডি কার্ড থাকলে গাড়িতে ব্যানার লাগনো লাগবে না বলে জানান তিনি। তিনি আরো জানান, ওইদিন ব্যানার খোলার পর আইডি কার্ড থাকায় সিএনজি অটোরিকশা ও সাংবাদিককে ছেড়ে দেয়া হয়। এখানে হয়রানি বা অসৌজন্যমূলক আচরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলেও জানান তিনি।
এদিকে, পুলিশের ক্ষিপ্ত হওয়া ও অসৌজন্য আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জাতীয় তাফসীর পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মহাসচিব হাফেজ মাওলানা মাকসুদুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মুফতী বাকিবিল্লাহ ও মুফতী ওমর ফারুক যুক্তিবাদী।
গতকাল এক যুক্ত বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত বৃহস্পতিবার ঢাকা-চিটাগাং রোডের সাইনবোর্ড মোড়ে চেক পোস্টে পুলিশের কাছে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পরও কিসের ইনকিলাব বলে সংবাদপত্রকে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়েছে। সব কিছু বন্ধ থাকলেও সংবাদপত্র জাতির দুর্দিনে দেশ, মানবতার সেবা দিয়ে আসছে। সেই সংবাদপত্র বিশেষ করে দৈনিক ইনকিলাবের মত জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিকের সাথে তুচ্ছ্য-তাচ্ছিল্য ব্যবহার কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তারা বলেন, একজন পুলিশ কর্মকর্তার মুখে কিসের ইনকিলাব? বলে তুচ্ছ্য-তাচ্ছিল্য করা সংবাদপত্রের সাথে অসদাচরণ করার শামিল। তারা বলেন, সংবাদপত্রকে সমাজের দর্পণ বলা হয়। সংবাদপত্রের মাধ্যমেই জাতি দেশ বিদেশের হালচাল জানতে পারে। সংবাদপত্রই সমাজের অন্যায়, অসত্য, দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে সমাজকে সংশোধন করার ভূমিকা পালন করে থাকে। কাজেই দৈনিক ইনকিলাবের সাংবাদিকের সাথে পুলিশের অসৌজন্যমূলক আচরণ নিন্দনীয়। এ ধরণের আচরণ পরিহার করা উচিত। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।