পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম নগরীর উম্মুক্ত দৃষ্টি নন্দন এলাকা সিআরবিতে সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ নির্মাণ প্রকল্প চুক্তি বাতিলের দাবিতে সামাজিক আন্দোলন অব্যাহত আছে। দলমত নির্বিশেষে সবাই সিআরবি রক্ষার আন্দোলনে শরিক হয়েছেন। এদিকে অবিলম্বে হাসপাতাল নির্মাণ চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়ে চট্টগ্রামে ১০১ জন পেশাজীবী নেতা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী সঠিক তথ্য জানতে পারলে প্রকল্প বাতিল করবেন।
এক যুক্ত বিবৃতিতে পেশাজীবী নেতারা বলেন, সিআরবি চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেখানে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পরিবেশ, প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস হয়ে যাবে। নগরীর ফুসফুস হিসেবে পরিচিত হেরিটেজ জোনের একটি উম্মুক্ত স্থানে এ ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ দেশের সংবিধান ও পরিবেশ আইন বিরোধী একটি হঠকারী ও আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
তারা বলেন, মানুষের চেতনা, নতুন প্রজন্মের দৃষ্টিভঙ্গি উপেক্ষা করে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট করে কোনো উন্নয়ন হতে পারে না। সিআরবি আমাদের শৈশবের স্মৃতিধন্য স্থান। সিআরবি রক্ষা করতে হবে চট্টগ্রামে স্বার্থে। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিধন্য সিআরবিতে ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বহু মানুষ শহীদ হয়েছেন। সেখানে ৯ জন শহীদের কবর আছে। শহীদের সমাধির উপর রক্তাক্ত স্বাধীনতার ইতিহাস মøান করতে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এখানে সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে উঠেছে। আমরা মনে করি সুকৌশলে চট্টগ্রামের হৃৎপিন্ড ধ্বংসের ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
রেলওয়ে বলছে, হাসপাতাল হলে গাছ কাটা পড়বে না। অথচ হাসপাতাল নির্মাণের নির্ধারিত স্থানেই শতবর্ষী তিনশ’ গাছ আছে। মুুুুুুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে দিতে সেখানে বাণিজ্যিক হাসপাতাল হতে পারে না। জনগণের নয়, এ হাসপাতাল বেনিয়া স্বার্থে করা হবে। চট্টগ্রাম বন্দরকেও বেনিয়াদের দেয়ার চেষ্টা হয়েছিল তা চট্টগ্রামের মানুষ ঠেকিয়ে দিয়েছে। সিআরবিও আমরা বেনিয়াদের হাতে দিতে দেব না। তারা বলেন, সিআরবি এবং সার্সন রোড ছাড়া এমন সবুজ অঞ্চল চট্টগ্রামে আর নেই। অতএব চট্টগ্রামের নাগরিক হিসেবে আমরা মনে করি এ দুটি অঞ্চলের ক্ষতি করার অধিকার কারও নেই। ব্যবসার জন্য যদি চট্টগ্রামে একটা বদ্ধ পরিবেশ তৈরি হয়, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিঃশ্বাস ফেলবে কোথায়?
তারা বলেন, কোনো কোনো রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, এমপির দেশপ্রেমে ঘাটতি আছে বলেই আমলারা তাদের ঘিরে ফেলেছে। রাজনীতিবিদদের উচিত মানুষের কথা শোনা। শহীদের রক্তে রঞ্জিত মাটি নিয়ে যারা ব্যবসা করতে চান এটা বাংলাদেশের চেতনার বিরুদ্ধে অবস্থান। প্রধানমন্ত্রী অদম্য নেত্রী। তিনি চট্টগ্রাম নিয়ে ভাবেন। নিশ্চয় তার কাছে এতদিনে এ বার্তা পৌঁছে গেছে। আশা করি তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত দেবেন। প্রধানমন্ত্রীকে যদি সঠিক তথ্য জানানো যায় তাহলে তিনি এ প্রকল্প বাতিল করবেন বলেই আমরা বিশ্বাস করি।
বিবৃতি দাতারা হলেন- বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. গাজী সালেহ উদ্দিন, চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনের সভাপতি প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, পেশাজীবী নেতা প্রফেসর ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম, চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর মনজুরুল আলম, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, পরিবেশ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. ইদ্রীস আলী, বিএফইউজের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস, সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, স্থপতি ইন্সটিটিউটের সভাপতি স্থপতি আশিক ইমরান, শিশু সাহিত্যিক ও সাংবাদিক রাশেদ রউফ, কথাসাহিত্যিক বিশ্বজিত চৌধুরী, কবি ও সাংবাদিক ওমর কায়সার, কবি ও সাংবাদিক ড. সৈয়দ আবদুল ওয়াজেদ, গবেষক জামাল উদ্দিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।