গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
লকডাউনে রাজধানীর রাস্তায় যানবাহন কম। কিছু রিকশা চলাচল কররেও রিকশাচালকরা ভাড়া হাঁকছে আকাশছোঁয়া। এমতবস্থায় রাতের বাস বা লঞ্চে যারা সকালে ঢাকায় এসেছেন তারা পড়েছেন মহাবিপাকে। যাদের শারিরিক সামর্থ আছে তারা পায়ে হেঁটেই রওনা করছেন। তবে এক্ষেত্রে বৃদ্ধ, বয়স্ক, মহিলা ও শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অকেনেই। বাধ্য হয়ে তখন আকাশছোঁয়া ভাড়া দিয়েই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা করছেন।
রাজধানীর মিরপুরের লোডেস্টার ফ্যাশনস লিমিটেড গার্মেন্টসের ফিনিশিং বিভাগের অপারেটর লিজা আক্তার। ঈদের ছুটিতে পরিবার পরিজনের সঙ্গে ঈদ করতে বরিশালে যান। লকডাউনের কারণে আজ শুক্রবার (২৩ জুলাই) ভোর ছয়টায় লঞ্চ থেকে সদরঘাটে নামেন।
সদরঘাটে নেমে টার্মিনাল থেকে বেরিয়ে দেখেন হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু যানবাহন হাতেগোনা। দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা অপেক্ষা শেষে মিরপুরে যাওয়ার জন্য তিনি ও তার এক সহকর্মী রিকশাচালকের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে দরদাম শুরু করেন। রিকশাচালক ভাড়া দেড় হাজার টাকা দাবি করেন।
লিজা আক্তার বলেন, সারা মাস হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে বেতন পাই ৮ হাজার টাকা। ঈদে বাড়ি গিয়ে টাকা শেষ। আছে মাত্র ৫০০ টাকা। এখন মিরপুরের রিকশা ভাড়া দেড় হাজার টাকা কোথায় পাব?
রিকশাচালকের কাছে এমন ভাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, এখান থেকে মিরপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া ৮০০-১০০০ টাকা। সেগুলো ইঞ্জিনে চলে। আর এত দূরের পথ প্যাডেল করে নিয়ে যেতে হবে। তাই ভাড়া দেড় হাজার টাকা চেয়েছেন। একপর্যায়ে লিজা ভাড়া ৮০০ টাকা দিতে চাইলেও রিকশাচালক ১১০০ টাকার কমে যাবেন না বলে জানিয়ে দেন। লিজা নির্বাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন।
শুধু লিজা একা নন, আজ শুক্রবার (২৩ জুলাই) ঈদের তৃতীয় দিনে লকডাউন শুরু হওয়ায় গণপরিবহনসহ সকল (রিকশা ও জরুরি কাজে ব্যবহৃত যানবাহন ছাড়া) প্রকার পরিবহন বন্ধ থাকায় দক্ষিণাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চের হাজার হাজার যাত্রী ঘরে ফেরা নিয়ে বিপাকে পড়েন।
বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ বিভিন্ন রুট থেকে ছেড়ে লঞ্চগুলো ভোর ৪টা থেকে ৬টার মধ্যে সদরঘাটে এসে পৌঁছায়। যাত্রীর তুলনায় রিকশার সংখ্যা কম হওয়ায় রিকশাচালকরা কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দাবি করেন। ফলে সদরঘাট ও ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকায় লাগেজ ও ব্যাগ নিয়ে শত শত যাত্রী যানবাহনের জন্য অপেক্ষা করেন।
অপেক্ষাকৃত যারা অর্থবিত্তের মালিক তারা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে চলে যেতে পারলেও নি¤œবিত্ত শ্রেণির মানুষ বিপাকে পড়ে। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় যাদের বাসা তাদের কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ শেয়ারে ভ্যান ভাড়া করে গন্তব্যে যান। কেউ কেউ আবার পরিবার ও আত্মীয়দের ফোন করে এলাকা থেকে ভ্যান ও রিকশা ভাড়া করে সদরঘাটে পাঠায়। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন এলাকার যাত্রীরা।
ভুক্তভোগিরা বলেন, তারা লকডাউনের কথা মাথায় রেখে ভোর ৪টায় সদরঘাট পৌঁছান। তাদের ধারণা ছিল, ভোর ছয়টা পর্যন্ত গাবতলী, সাভার ও গাজীপুর রুটে বাস চলবে। রাস্তা খালি থাকায় তারা সহজে পৌঁছাতে পারবেন। কিন্তু ভোর ৪টায় নেমেও দেখেন সব বন্ধ।
আজ সকাল সাড়ে ৯টায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সদরঘাট থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ। কেউ লাগেজ ও ব্যাগ থাকায় শিশু ও নারীদের নিয়ে পায়ে হেঁটে আসছেন। কেউ ভ্যান আবার কেউ রিকশায় গাদাগাদি করে ছুটছেন। অসংখ্য পরিবারকে রাস্তার পাশে বসে থাকতে দেখা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।