পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীতে আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাট শুরু হবে। এরইমধ্যে হাটগুলো গরুতে ভরপুর। কিছু কিছু ছাগল উঠেছে। দুই একটি হাটে উঠ, দুম্বা উঠেছে। অন্যান্য বছর যেমন নির্ধারিত সময়ের আগেই বেচাকেনা শুরু হয়ে যায়, এবার কিন্তু তেমনটি হয়নি। হাটে পর্যাপ্ত সংখ্যক গরু থাকলেও ক্রেতাদের সংখ্যা খুবই কম।
গতকাল রাজধানীর আশিয়ান সিটি, ভাটারা (সাইদনগর) বালুর মাঠ, উত্তরার ১৫ নং সেক্টর ও বৃন্দাবন, আফতাব নগর পশুর হাটে এমন চিত্র দেখা গেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিক্রেতারা গরু নিয়ে অপেক্ষা করছেন। অথচ ক্রেতার উপস্থিতি নেই বলেই চলে। বিক্রেতারা বলছেন, হাটে গরু আছে, ক্রেতা নেই। অন্যান্যবারের এবার নির্ধারিত সময়ের আগেই বেচাকেনা হচ্ছে না। তবে তারা আশা করছেন, নির্ধারিত সময়ে হাট শুরুর পর ক্রেতারা হাটে আসবেন।
সিরাজগঞ্জ থেকে ২টি গরু নিয়ে এসেছেন আলাউদ্দিন। ব্রাহমা জাতের গরু দুটি আশিয়ান সিটি হাটে সবচেয়ে বড় গরু। দাম চাচ্ছেন একটির ১২ লাখ, আরেকটির ৮ লাখ। গরুতে ভরপুর হাটে নেই কোন ক্রেতা। এছাড়া হাটটি অভিজাত এলাকায় না হওয়ায় বড় গরু দুটি বিক্রি হওয়া নিয়ে চিন্তিত আলাউদ্দিন।
পাবনা থেকে নয়টি গরু নিয়ে ভাটারা বালুর মাঠ পশুর হাটে এসেছেন তমিজ আলী। তিনি বলেন, তিন দিন হলো হাটে এসেছি। এই তিন দিনে নয়টি গরুর একটিও বিক্রি করতে পারিনি। হাটে ক্রেতাই নেই। তবে আশা করা যায়, আগামী রোববার, সোমবার হাটে ক্রেতাদের ভিড় হবে। তবে এখন যারা আসছেন, তারা গরুর দামও ঠিকঠাক বলছেন না। শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনির মাঠে দেখা গেছে হাটের প্রতিটি খুঁটির সঙ্গে গরু বাঁধা। ব্যাপারিরা তাদের পশুর পরিচর্যা করছেন। সে তুলনায় অবশ্য ক্রেতা ছিল না। দুয়েকজন ছিল পশুর দেখাশোনায়। দিনে তীব্র রোদ থাকায় অনেককে ছাউনি বানিয়ে পশুকে ছায়ায় রাখার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। হাটের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্যবিধি লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। মাঝে মধ্যে মাইকিংও করা হচ্ছে। সাত বছরের ছেলেকে নিয়ে কলোনির মাঠে হাঁটতে এসেছিলেন মাইমুনা আক্তারা। তিনি বলেন, আজ বাচ্চাকে গরু দেখাতে এসেছি। পছন্দও করে যাবো। কয়েকটি পছন্দ হয়েছে। পরে পরিবারের বাকিরা এসে দেখে কিনবো।
প্রতিবছর রাজধানীতে কোরবানির পশুর হাটগুলোয় উপচেপড়া ভিড় হয়। করোনা পরিস্থিতিতে পশুর হাটের আমেজে অনেকটাই ভাটা পড়েছে। গত বছর করোনার সংক্রমণ রোধে রাজধানীর সব পশুর হাটে জনসমাগম নিয়ন্ত্রিত ছিল। চলতি বছর ঈদুল আজহার সময়ে করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। এ পরিস্থিতিতে রাজধানীতে কোরবানির পশুর হাটগুলো বসেছে। হাটে আসা অনেকে মনে করছেন, নির্ধারিত সময়ের আগেই অন্যান্যবার যেভাবে পশুর হাট জমে ওঠে, এবার তেমনটা হচ্ছে না করোনার কারণে।
আফতাবনগর হাটে ১৪টি গরু নিয়ে এসেছেন মমতাজ উদ্দিন । তিনি বলেন, হাটে এখনও ক্রেতার ভিড় শুরু হয়নি। তবে গরু আছে অনেক পরিমাণে। এবার সবাই এসে শুধু মাঝারি গরু খুঁজছেন। মাঝারি গরুর চাহিদা এবার বেশি। এছাড়া লাল গরু বেশি চাহিদা। ১৪টি গরু এনেছি। এর মধ্যে বিক্রি হয়েছে একটি। দুই লাখ ২০ হাজার টাকার গরুর সর্বোচ্চ দাম বলছে দেড় লাখ টাকা! এবার হাটের অবস্থা যে কোন দিকে যায়, তা এখনও অনুমান করা যাচ্ছে না।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবার দুটি স্থায়ীসহ ২৫টি হাট বসাতে চাইলেও করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় হাটের সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। সে অনুযায়ী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় গাবতলী স্থায়ী হাট ছাড়াও আরও নয়টি অস্থায়ী হাট বসানো হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় সারুলিয়া স্থায়ী পশুর হাট ছাড়াও আরও ১০টি অস্থায়ী হাট বসিয়েছে তারা। স্থায়ী-অস্থায়ী সব মিলিয়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় এবার ২১টি হাট বসছে। দুই সিটি করপোরেশনের ঘোষণা অনুযায়ী, ১৭ জুলাই থেকে ২১ জুলাই (ঈদের দিন) পর্যন্ত হাট চলবে।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশন অংশে ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, মেরাদিয়া বাজার সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, আফতাব নগর (ইস্টার্ন হাউজিং) বøক ই, এফ, জি এইচ, সেকশন ১ ও ২ এর খালি জায়গায় অস্থায়ীভাবে কোরবানির পশুর হাট বসেছে।
এছাড়াও গোলাপবাগের ডিএসসিসি মার্কেটের পেছনের খালি জায়গা, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ধুপখোলা ইস্ট অ্যান্ড ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা ও রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গায় অস্থায়ীভাবে গরুর হাট বসেছে। এছাড়াও সারুলিয়া স্থায়ী হাটেও কোরবানির পশু বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন অংশের গাবতলী স্থায়ী পশুর হাট ছাড়াও বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং বøক-ই সেকশন ৩ এর খালি জায়গা, উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমের অংশ, ২ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমে গোলচত্বর পর্যন্ত সড়কের ফাঁকা জায়গা, মিরপুর সেকশন ৬ ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের খেলার মাঠ, উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর এলাকায় অবস্থিত বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ পর্যন্ত খালি জায়গা, ভাটারা (সাইদনগর) বালুর মাঠ, কাওলা শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাচল ব্রিজ সংলগ্ন মস্তুল ডুমনী বাজারমুখী রাস্তার উভয় পাশের খালি জায়গা এবং উত্তরখান মৈনারটেক শহীদনগর হাউজিং প্রকল্পের খালি জায়গায় অস্থায়ীভাবে পশুর হাট বসেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।