Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে

লালমনিরহাট জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০২১, ৪:১২ পিএম

বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে আবারও তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গতকাল ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার)। যা বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে, গত ৮ জুলাই রাত ১২টায় একই পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ১৫ ঘণ্টা পরেই কমে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে।

জানা যায়, ভারতের সিকিম উপত্যকা থেকে সৃষ্ট তিস্তা নদী ভারতে প্রবাহিত হয়ে লালমনিরহাট জেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। উজানে ভারতের অংশে ভারত সরকার বাঁধ নির্মাণ করে তিস্তা নদীর এক তরফাভাবে ব্যবহার করছে। ফলে শুস্ক মৌসুমে বাংলাদেশ অংশে কোনো পানি থাকে না। মরুভূমিতে পরিণত হয় তিস্তা। আবার বর্ষাকালে অতিবর্ষণের ফলে ভারতের অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেয়ায় বাংলাদেশ অংশে ভয়াবহ বন্যা আর তীব্র ভাঙনের মুখে পড়ে লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলাসহ নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলা।

গত ৮ জুলাই সন্ধ্যা থেকে ভারত সরকার অতিমাত্রায় পানি ছেড়ে দেয়ায় তিস্তা নদীতে বাংলাদেশ অংশে পানি প্রবাহ বেড়ে যায়। এতে দু'কুল উপচিয়ে বন্যার পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে বন্যার সৃষ্টি করে। যার ১৫ ঘণ্টা পরেই পানি প্রবাহ কমে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে। পানিবন্দিরা মুক্তি পায়। সেই প্রথম ধাপের বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই দ্বিতীয় ধাপের বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তিস্তা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে।

হালকা বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ আবারও বৃদ্ধি পায়। একই দিন সন্ধ্যা ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার)। যা বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারাজ রক্ষার্থে সকল জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আসন্ন ঈদের এ সময়ের বন্যায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষ।

দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানান, প্রায় পানি শুন্য গত ৮ জুলাই সন্ধ্যার পর থেকে হঠাৎ পানি প্রবাহ বেড়ে যায় তিস্তায়। ওই দিন রাত ১২টায় তিস্তার পানি প্রবাহ বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। পরবর্তী ১৫ ঘণ্টায় কমে গিয়ে প্রথম দফার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে। এর এক সপ্তাহ পরেই আবারও পানি প্রবাহ বাড়তে থাকে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে। গত সন্ধ্যা ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারাজ রক্ষার্থে সবগুলো জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের সব গেট খুলে দিয়ে পানির চাপ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ফলে নিম্নাঞ্চল প্রাবিত হতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তিস্তা নদী

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ