দা হাতে প্রতিপক্ষের ঘর ভাঙ্গার হামলা চালিয়েছিলেন সিলেটের অজপাঁড়া গাঁয়ের এক তরুণী। সেই ঘটনার ভিডিও চিত্র ছড়িয়ে পড়ে নেট দুনিয়ায়। মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায় ভিডিওটি। সেই লেডি গুন্ডি হলো সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার কাড়াবাল্লা গ্রামের সালেহা বেগমের যুবতী মেয়ে। এঘটনায় সহযোগী ছিল তার অপর বোনও। এঘটনার পর মামলা হয়। তারপর গ্রেফতার হন তারা। পেয়েছেন জামিনও। এবার এবার সপরিবারে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন দা হাতের সেই ভাইরাল কন্যা। সোমবার (১২ জুলাই) একটি ফেসবুক পেইজের লাইভে এসে এ হুমকি দেন তারা। এসময় তিনি বলেন, গ্রামের মৃত তবারক আলীর ছেলে (ওই মেয়ের চাচা) মইন উদ্দিন লথু ও তার সন্তানেরা রাস্তায় ঘর তৈরি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন তাদের। বার বার বিচার-সালিশ করলেও নির্যাতন বন্ধ হয়নি লথু পক্ষের। লথু ও তার সন্তানেরা প্রায়ই সালেহা বেগম ও তার মেয়েদের উত্যক্ত করতেন। তাদেরই জায়গায় টিনের ঘর নির্মাণ করায় সে ঘর ভেঙে দেন তারা। লথু ও তার ছেলেদের নির্যাতন আর সইতে পারছেন না উল্লেখ করে সালেহা বেগমের মেয়ে বলেন, আমরা এখন নিজেদের প্রাণ নিজেরা নেবো। আর এসব নির্যাতন সহ্য হচ্ছে না। সুবিচার পাচ্ছি না আমরা।

প্রসঙ্গত, কানাইঘাটের কাড়াবাল্লা গ্রামে গত শুক্রবার বিকেলে মহিলারা হামলা করে ভেঙে ফেলেন প্রতিপক্ষের ঘর। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই হামলা ও ভাঙচুরের ভিডিও দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হয়ে পড়ে ভাইরাল। এ ঘটনায় শনিবার (১০ জুলাই) সকালে কানাইঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন বসতঘরের মালিক মইন উদ্দিন লথু। পরে শনিবার বিকেলে আসামি ৫ নারী ও এক কিশোরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন- ছালেহা বেগম, তার মেয়ে নাজমিন বেগম কুলছুমা, সুমি বেগম, সুহাদা বেগম, রহিমা বেগম ও ছেলে নাসির উদ্দিন। পরদিন রোববার (১১ জুলাই) তাদের আদালতে প্রেরণ করলে গ্রেফতারকৃত এক নারীর সঙ্গে দুগ্ধপোষ্য শিশু থাকায় এবং দুজন আসামি নাবালিকা হওয়ায় সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (কানাইঘাট) আলমগীর হোসেন জামিন প্রদান করেন তাদের সবাইকে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বসতবাড়ির জায়গা নিয়ে কাড়াবাল্লা গ্রামের মৃত আব্দুন নুরের স্ত্রী ছালেহা বেগমের (৪৫) সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তার ভাসুর মৃত তবারক আলীর ছেলে মইন উদ্দিন লথুর বিরোধ চলছে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের কয়েকটি মামলা আদালতে বিচারাধীন। কয়েকদিন আগে ছালেহা বেগম সেই বিরোধপূর্ণ জায়গা থেকে বিক্রি করেন বেশ কয়েকটি গাছ। ক্রেতারা শ্রমিক নিয়ে গাছ কাটতে আসলে এতে বাধা প্রদান করেন ছালেহা বেগমের ভাসুর মইন উদ্দিন লথু। এসময় বিষয়টি মীমাংসা করার উদ্যোগ নেন স্থানীয় মুরব্বিরা। কিন্তু শুক্রবার (৯ জুলাই) বিকেল ৫ টার দিকে ছালেহা বেগম তার ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের লোকজন নিয়ে হঠাৎ হাতে ধারালো দা ও লাঠিসোটা হাতে মইন উদ্দিন লথুর টিনশেড বসতঘরে শুরু করেন হামলা-ভাঙচুর। মইন উদ্দিনের টিনশেডের ঘর এবং আসবাবপত্র। স্থানীয় অনেকে ঘটনাটি দেখলেও ছাহেলা বেগম ও তার মেয়েদের ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারেননি কেউ। তবে ভাঙচুরের পুরো দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করেন স্থানীয়রা। পরে সেটি ভাইরাল হয়ে পড়লে কানাইঘাট ও সিলেটজুড়ে সৃষ্টি হয় তোলপাড়।