বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দেশের গৃহ ও ভূমিহীন মানুষের স্বপ্নের ঠিকানা প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর ঘর নির্মাণে অপরিকল্পনা, অনিয়ম, অবহেলা ও দুর্নীতির ঘটনায় তোলপাড় চলছে। এমন অনিয়ম ঘটনার সত্যতা প্রাথমিক তদন্তে পেয়ে সিলেট সহ সারা দেশে এসব ঘর পরিদর্শন করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) পাঁচটি টিম। এরই মধ্যে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর ঘরগুলো পরিদর্শন করেছে একটি পিএমও টিম। উপ-প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের নেতৃত্বে ওই প্রতিনিধি দল গত ১০ জুলাই (শনিবার) বিশ্বনাথ ও গোলাপগঞ্জ এবং মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানের ঘরগুলো ঘুরে দেখেন। পরিদর্শনকালে ঘরগুলোর ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন টিমের সদস্যরা। পিএমও টিম সূত্রে জানা গেছে, সিলেট জেলায় এসব ঘর নির্মাণে বড় ধরনের দুর্নীতির তথ্য পাননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে স্থান নির্ধারণ ও মাটি ভরাটের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে হয়নি করা।
এ বিষয়ে সিলেটে পরিদর্শনে আসা উপ-প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, একটি কাজ করতে গেলে অনিচ্ছাকৃত ভুল হতে পারে। সে বিষয়টি আমরা দেখছি। যে বিষয়গুলো এসেছে বিভিন্ন মিডিয়াতে। সেগুলো কি ভুল নাকি ইনটেনশনাল, সেটা আমরা যাচাই করছি। প্রত্যেকটা কেস, প্রত্যেকটা বিষয় আমরা অ্যাটেইন করবো, আনঅ্যাটেন্ডেড থাকবে না কোনোটাই । তিনি বলেন, চলমান কার্যক্রম বিষয়ে কোথাও কোথাও থেকে আমরা প্রতিবেদন পেয়েছি এবং মিডিয়াতে এসেছে কোথাও কোথাও সমস্যা হয়েছে। এ বিষয়গুলোর ভিত্তিতে আমাদের প্রকল্প অফিসের ৫টি টিম সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় সরেজমিনে দেখছে। কী সুবিধা-অসুবিধা সেটা শনাক্ত করে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেই কাজ করছি এবং দ্রুত কাজ শেষ হবে। মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, এর আগেই আমাদের সকল জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনকে কমিটি করার জন্য বলা হয়েছে। কারিগরি কমিটি করে প্রত্যেকটা ঘর সরেজমিন দেখে যদি কোনো নির্মাণগত ত্রুটি থাকে তাৎক্ষণিক মেরামত করবে। যদি সঠিক থাকে আমাদের জানাবে।
তিনি বলেন, সিলেটে আমরা যেটি দেখেছি- আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের জমি নির্ধারণ এবং মাটি ভরাটের ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা রয়েছে। ঘরের নিচের ভরাটকৃত মাটি যদি জমাট ও শক্ত না থাকে তবে ঘর ঝুঁকিপূর্ণ থেকে যায়। প্রয়োজনে ভিটের মাটি টেকাতে ঘরের পাশে গার্ড ওয়াল স্থাপন করতে হবে। সিলেটের কিছু স্থানে এমন সমস্যা রয়েছে। সেগুলো দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে। একসময় যাদের ঠিকানা ছিলো গাছতলা, কোনো অফিসের বারান্দা, কারো চিলেকোঠা বা অন্যের বাড়িতে- তারা পাচ্ছেন স্থায়ীভাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই। এ প্রাপ্তি ছিলো পরম আনন্দের। কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে অসামাঞ্জস্যপূর্ণ ব্যয় নির্ধারণ, ত্রুটিপূর্ণ নির্মাণপদ্ধতি ও অনিয়ম-দুর্নীতি মলিন করে দিয়েছে উপকারভোগীদের মুখের হাসি।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সিলেট জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকারমূলক এই প্রকল্পে সিলেটসহ সারা দেশে পৌনে ৯ লাখ গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে ঘর দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে গত বছর কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ৪ হাজার ২ শ ৯৩টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার সেমিপাকা ঘর। ৩৯৪ বর্গফুটের ও ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা বাজেটের একেকটি ঘরে রয়েছে ২টি থাকার কক্ষ, ১টি রান্না ও খাবার কক্ষ এবং ১টি বাথরুম বা টয়লেট। দুই দফা ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সিলেট জেলার ১৩টি উপজেলার ২ হাজার ২ শ ৫৯টি ঘরের দলিল এরই মধ্যে উপকারভোগীদের নিকট হস্তান্তর করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।