পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর পাকিস্তানকে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা ঝুঁকি কমাতে সহযোগিতার আহবান জানিয়েছে চীন। আন্তর্জাতিক মঞ্চে বেইজিংয়ের অন্যতম নিকটতম অংশীদার ইসলামাবাদের সাথে ক‚টনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী উপলক্ষে এক বক্তৃতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি পাকিস্তানের কোভিড-১৯ মোকাবিলা এবং তার অর্থনীতিকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে চীনের প্রতিশ্রুতিও তুলে ধরেন।
“[চীন ও পাকিস্তান]কে একসাথে আঞ্চলিক শান্তি রক্ষা করতে হবে। আফগানিস্তানের সমস্যাগুলো চীন এবং পাকিস্তান উভয়েরই বাস্তব চ্যালেঞ্জ। আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ওয়াং বলেন, পাকিস্তানের পাশাপাশি চীন আফগানিস্তানের সব পক্ষকেই সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমাধানের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখতে এবং জাতিগত পুনর্মিলন ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তির দিকে পরিচালিত করতে রাজি রয়েছে।
‘সংশ্লিষ্ট আগ্রহী দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ জোরদার করার জন্য চাপ দেওয়া, কার্যকরভাবে আফগানিস্তানের সুরক্ষা ঝুঁকির প্রসারণ নিয়ন্ত্রণে এবং আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক উভয় সন্ত্রাসবাদের বিস্তারকে রোধ করতে সহায়তা করবে, যাতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা যায়’।
ওয়াং আরো যোগ করেছেন যে, চীন পাকিস্তানের সাথে আরো ‘ন্যায়বিচার ও যুক্তিসঙ্গত’ বৈশ্বিক প্রশাসনের জন্য সহযোগিতা জোরদার করতে চায়। তিনি আরো বলেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের একটি প্রধান উপাদান চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরে আফগানিস্তানের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করে ‘ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতায়’ আরো জোর দেওয়া উচিত।
সা¤প্রতিক বছরগুলোতে, চীন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের বাইরেও তার প্রভাব প্রসারিত করার চেষ্টা করছে। এর ভ‚মিকা স¤প্রসারণে তার চেষ্টার অংশ হ’ল সিপিসির মাধ্যমে আফগানিস্তানের সাথে সম্পর্ক বাড়ানো, যার মধ্যে রয়েছে রাস্তাঘাট, বন্দর, তেল ও গ্যাস পাইপলাইন এবং অপটিক্যাল ফাইবার কেবলের একটি নেটওয়ার্ক।
তবে, আফগানিস্তানে সা¤প্রতিক লড়াই চীনের পরিকল্পনা জটিল করেছে এবং আফগান কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন যাবৎ ধরে রেখেছেন যে, পাকিস্তান তালেবানদের আশ্রয় ও সামরিক সহায়তা সরবরাহ করে। ইসলামাবাদ এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এসেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সোমবার বলেছেন যে, আফগানিস্তানকে একটি পূর্ণাঙ্গ গৃহযুদ্ধ থেকে বাঁচানোর প্রয়াসে দেশটি তার প্রতিবেশীদের কাছে নিয়ে যাচ্ছে এবং তার শান্তির উদ্যোগের অংশ হিসাবে ‘তালেবানদের সাথে’ যোগাযোগ করবে। নির্ভরযোগ্য প্রশাসনিক কাঠামো কার্যকর রয়েছে তা নিশ্চিত না করেই আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার জন্য ইসলামাবাদ যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করেছে। মার্কিন প্রস্থান এবং তালেবান অগ্রগতি আফগানিস্তানে আরেকটি গৃহযুদ্ধ নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে।
ওয়াং প্রায়শই আফগানিস্তান বিরোধের উৎস হিসাবে আমেরিকা এবং চীনকে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হিসাবে পরিস্থিতিটির মধ্যস্থতায় পৌঁছানোর জন্য উপস্থাপন করায় সমালোচনা করেছিলেন।
বেইজিং সুরক্ষিত ঝুঁকিগুলো তার নিজের অঞ্চলে প্রবাহিত হওয়ার বিষয়েও উদ্বিগ্ন, কারণ আফগানিস্তান জিনজিয়াংয়ের সাথে ৯০ কিলোমিটার (৫৬ মাইল) সীমান্ত ভাগ করে নিয়েছে।
তালিবানদের থেকে কেল্লা-ই নাও পুনরুদ্ধার
এদিকে আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আফগান সরকারী বাহিনী বৃহস্পতিবার তালেবানদের দখলিত পশ্চিমের একটি প্রাদেশিক রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে সক্ষম হয়েছে এবং এই অঞ্চলে কয়েকশ’ নতুন সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এতে বলা হয়, মধ্য এশিয়ার দেশ তুর্কমেনিস্তানের সীমান্তবর্তী বাঘিস প্রদেশের রাজধানী কেল্লা-ই-নাওয়ে কিছু লড়াই চলছে।
২০ বছরের দীর্ঘ আগ্রাসনের পর বিদেশি বাহিনী আফগানিস্তান থেকে সরে আসার কারণে তালেবানদের নাটকীয় অগ্রগতির অংশ হিসাবে বুধবার বিদ্রোহীরা পুলিশ সদর দফতরসহ শহরের মূল সরকারী ভবন দখল করে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফাওয়াদ আমান বলেন, ‘শহরটি পুরোপুরি (ফিরে) আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং আমরা শহরের উপকণ্ঠে তালেবানদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছি। সূত্র : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট ও এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।