নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
জিম্বাবুয়ে সফরে একমাত্র টেস্টে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ। হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টায় শুরু হবে খেলা। প্রায় ৮ বছর পর জিম্বাবুয়ে সফরে গেছে বাংলাদেশ। তবে বলা চলে চোট নিয়েই এই সফরে গেছেন বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারের বড় দুই ভরসা ওপেনার তামিম ইকবাল ও উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। স্বাগতিকদের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট খেলার আগে গত শনিবার জিম্বাবুয়ে নির্বাচিত একাদশের বিপক্ষে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিনে ব্যাটিং করেননি তামিম-মুশফিক। পরে দ্বিতীয় দিনে শেষ বিকেলে তামিম খানিকটা ব্যাটিং করলেও মুশফিক করেননি। তারপরও মুশফিককে নিয়ে বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডমিঙ্গো আশাবাদি। বিসিবির ভিডিও বার্তায় গত পরশু কোচ সেটাই বললেন,‘মুশফিক বেশ আত্মবিশ্বাসী যে সে খেলার মতো ফিট হয়ে উঠবে। তার পুনর্বাসন খুব ভালো হয়েছে এবং সবকিছু ঠিক পথে আছে বলেই মনে হচ্ছে। তাই আত্মবিশ্বাস আছে যে টেস্টে সে খেলবে। তবে তামিম এখনও শতভাগ নিশ্চিত নয়। এখনও অনেক সংশয় আছে তাকে নিয়ে। ম্যাচের আগে ওকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে তামিমের জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করব।’
তামিমের চোট হাঁটুতে, আর মুশফিকের আঙুলে। গত মাসে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে এই চোটে পড়েন দু’জন। ফলে তামিম খেলতে পারেননি সুপার লিগের কোনো ম্যাচই। মুশফিক খেলেননি সুপার লিগের শেষ তিন ম্যাচ।
টেস্ট হলো ধৈর্যের খেলা, তা পুরনো কথা। কিন্তু আধুনিক ক্রিকেট টেস্টকেও করেছে গতিময়। তবে ম্যাচ যখন হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে, তখন সেই পুরনো পথে হাঁটার বিকল্প নেই বলে মনে করেন রাসেল ডমিঙ্গো। বাংলাদেশ কোচের মতে, এখানে জিততে হলে ম্যাচ মুঠোয় নিতে হবে একটু একটু করে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এর আগে সর্বশেষ পাঁচ টেস্টের মধ্যে ঘরের মাঠে চারটিতেই বাংলাদেশ জিতেছিল বড় ব্যবধানে। বিপরীতে জিম্বাবুয়ের জয় ছিল এক ম্যাচে। ২০১৪ সালের অক্টোবরে ঢাকায় তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছিল ৩ উইকেটে। নভেম্বরে খুলনায় এই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পেয়েছিল ১৬২ রানে। চট্টগ্রামে তৃতীয় ও শেষ টেস্টে স্বাগতিকরা ১৮৬ রানে জিতে ৩-০ ব্যবধানে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল। অবশ্য ২০১৮ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ সফরে এসে জিম্বাবুয়ে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টটি সিলেটে জিতেছিল ১৫১ রানে। অবশ্য ঢাকায় এই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পেয়েছিল ২১৮ রানে। ২০২০ সালে ঢাকায় একমাত্র টেস্টে সফরকারী জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ও ১০৬ রানে হারিয়ে সিরিজ জিতে নেয় স্বাগতিকরা।
তবে এবারের আগে জিম্বাবুয়েতে বাংলাদেশের সর্বশেষ সফর ছিল ২০১৩ সালে। তখন এই হারারেতেই প্রথম টেস্টে ৩৩৫ রানে হেরেছিল সফরকারীরা। প্রথম ইনিংসে প্রায় দুই দিন ব্যাট করে ৩৮৯ রান তুলেছিল জিম্বাবুয়ে, বাংলাদেশ সেই রানের কাছাকাছি যেতেও পারেনি। প্রথম ইনিংসের ওই ব্যবধানই গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য। তখন অবশ্য বাংলাদেশ কোচের দায়িত্বে ছিলেন না ডমিঙ্গো। তবে বিভিন্ন সময় এই মাঠের অভিজ্ঞতা হয়েছে তারও। এবার বাংলাদেশ দলকে তিনি জানালেন এখানে সাফল্যের পথ। ‘হারারেতে খেলার ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ হলো ধৈর্য। কয়েকবার আমি এখানে এসেছি, স্কোরিং রেট খুব উঁচু নয়। ব্যাটিং হোক বা বোলিং, ধৈর্যের খেলা হবে এখানে। লম্বা সময় চাপ ধরে রাখতে হবে উইকেট নেয়ার জন্য। এটা এমন ভেন্যু নয়, যেখানে কোনো ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে দেয়া যায় বা এক দিনে সাড়ে তিনশ রান করে ফেলা যায়।’
রাসেল ডমিঙ্গো আরো বলেন,‘কঠিন লড়াইয়ের ক্রিকেট হয় এখানে। জিম্বাবুয়েনরা এখানে খুব স্মার্ট ক্রিকেট খেলে। আমরা তাই জানি, আগামী কয়েকদিনে আমাদের কাজ সহজ হবে না। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যেন ধৈর্য ও শৃঙ্খলা ধরে রাখতে পারি, সুযোগগুলো যেন নিতে পারি। কারণ এখানে সুযোগ খুব সহজে আসবে না। তাই যখন সুযোগ আসবে, তা নিতে হবে।’
টেস্টে বাংলাদেশের সা¤প্রতিক পারফরম্যান্স খুব একটা ভালো নয়। গত ফেব্রæয়ারিতে দেশের মাঠে খর্বশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশ হতে হয়েছে বাংলাদেশকে। আর এপ্রিলে সিরিজ হেরে শ্রীলঙ্কা থেকে ফিরতে হয়েছে তামিমদের। তাই বলা যায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আজ থেকে শুরু হওয়া টেস্টটি বাংলাদেশের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। যে চ্যালেঞ্জে ব্যর্থ হওয়া যাবে না, সাফল্য তুলে আনতেই হবে।
সংখ্যায় সংখ্যায় পরিসংখ্যান
# ১ বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে প্রথম জয়টি আসে জিম্বাবুয়ে বিপক্ষে। চট্টগ্রামে ২২৬ রানের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল বাংলাদেশ।
# ২ একমাত্র দেশ জিম্বাবুয়ে; যাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যান ২টি ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। দু’টিই মুশফিকুর রহিমের।
# ৭ এখন পর্যন্ত ৯ সিরিজে ১৭ ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুই দল। দু’দলেরই জয় সমান ৭টি করে ম্যাচে। এই ম্যাচে যে জিতবে তার সামনে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ।
# ৮ এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৮ উইকেট শিকার করেন বাংলাদেশের তাইজুল ইসলাম। ২০১৪ সালে মাত্র ৩৯ রান দিয়ে তিনি এ উইকেটগুলো নেন।
# ১০ এই নিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দশম সিরিজের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এর আগের ৯ সিরিজে সর্বোচ্চ চারবার জিতেছে জিম্বাবুয়ে; আর ৩ বার বাংলাদেশ। এবার জিততে পারলে জিম্বাবুয়েকে স্পর্শ করবে টাইগাররা।
# ৪১ সর্বোচ্চ ৪১ উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশ স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ৬ ম্যাচ খেলে তিনি এ উইকেটগুলো শিকার করেন।
# ১০৭ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর ১০৭ রান। ২০০১ সালে নিজেদের মাঠে সর্বনিম্ন রানের লজ্জায় পড়ে বাংলাদেশ।
# ২১৯ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস ২১৯। ২০১৮ সালে এটি করেন মুশফিকুর রহিম।
# ৫৬০ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর ৫৬০। ২০২০ সালে ঘরের মাঠে মুশফিকের ডাবল ও মুমিনুলের সেঞ্চুরিতে এই রান করে বাংলাদেশ।
# ৮৪৬ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৯ ম্যাচে ১৭ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান মুশফিকুর রহিমের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।