পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : ধ্বংসের আগুনে পুড়ছে আলেপ্পো। সিরিয়া ও রাশিয়ার বিমান হামলায় শহরটি কেঁপে উঠে। ধোঁয়ার কু-লিতে আলেপ্পোর আকাশ ছেয়ে যায়। এ হামলায় অন্তত ৯০ জন নিহত হয়েছেন। খবরে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় শহরটিতে ১৫০-এরও বেশি বিমান হামলা হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম জানায়, শহরে অন্তত ৩০টি এলাকা লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এই হামলায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। এই হামলায় হোয়াইট হেলমেটস নামে একটি স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের কর্মীও আহত হয়েছেন। তাদের একটি অ্যাম্বুলেন্সসহ পাঁচটি গাড়িও ধ্বংস হয়েছে। একজন মানবাধিকার কর্মী জানান, আমাদের মনে হচ্ছিল যেন ভূমিকম্প হচ্ছে। আলেপ্পো ধ্বংসের আগুনে পুড়ছে।
এদিকে আইএসজিএস’র আয়োজনে নিউইয়র্কে বৈঠকে অংশগ্রহণকারী রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সসহ বেশ কয়েকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা দীর্ঘসময় আলোচনা করেও সিরিয়ায় অস্ত্রবিরতিকে পুনরায় সচল করতে কোনো ধরনের সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেননি। তবে অস্ত্রবিরতি কার্যকর না থাকলেও ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও আল-নুসরার মতো জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে সামরিক তৎপরতা অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। বার্তা সংস্থাগুলোর খবরে বলা হয়, সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ আলেপ্পো শহর দখলে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত সরকারি বাহিনী ও রাশিয়া। দেশটির আকাশে যুদ্ধবিমান উড্ডয়ন বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান উপেক্ষা করেই এদিন আলেপ্পোর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে মুহুর্মুহু বিমান হামলা চালায় সিরিয়া ও রাশিয়ার যুদ্ধবিমানগুলো। এসব হামলায় কমপক্ষে ৯০ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়েছেন। এদিকে ইন্টারন্যাশনাল সিরিয়ান সাপোর্ট গ্রুপ (আইএসএসজি) জানিয়েছে, সিরিয়ায় বাতিল হয়ে যাওয়া যুদ্ধবিরতি পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে রুশ-মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। নিউইয়র্কে এক বৈঠক শেষে এই কথা জানানো হয় সংস্থাটির পক্ষ থেকে। প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সিরিয়ার সেনাবাহিনী আলেপ্পোর বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্বাঞ্চল দখলে রুশ বাহিনীর সমন্বয়ে নতুন অভিযানের ঘোষণা দেয়। এর কিছু সময় পরই ওই অঞ্চলে কমপক্ষে ১০০ বার বিমান হামলা চালায়। ওইসব হামলায় সিরিয়ার পাশাপাশি রুশ যুদ্ধবিমানও অংশ নেয়। স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানায়, আলেপ্পোর এই অংশে কমপক্ষে আড়াই লাখ লোক অবরুদ্ধ রয়েছে। ২০১২ সালের গ্রীষ্মকাল থেকে আলেপ্পো দুই অংশে বিভক্ত হয়ে আছে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে। দুই অংশে প্রায় ২০ লাখ মানুষ যথেষ্ট নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছাড়াই অবরুদ্ধ হয়ে আছে। রুশ-মার্কিন সহায়তায় গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সিরিয়াজুড়ে অস্ত্রবিরতি সাতদিন পার হওয়ার পর সিরীয় বাহিনী তার সমাপ্তি ঘোষণা করে। ওই ঘোষণার পরপরই আলেপ্পো ও তার আশপাশের অঞ্চলগুলোতে অব্যাহত হামলা চালাতে শুরু করে রুশ ও সিরীয় বাহিনী। গত বুধবারও রাতভর বিমান হামলা চালানোর পর, বৃহস্পতিবারই আবারো এই ভয়াবহ বিমান হামলা চালানো হলো। স্থানীয় সমাজসেবীরা এই হামলাকে ধ্বংসাত্মক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। সাংবাদিকরা জানান, আলেপ্পো ও তার আশপাশে কমপক্ষে ৩০টি লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়েছে সরকারি বাহিনী। তিনি জানান, বিমান হামলাগুলো এত ঘন ঘন হচ্ছিল যে, আহতদের উদ্ধারে হিমশিম খাচ্ছিলেন উদ্ধারকর্মীরা। সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ‘হোয়াইট হেলমেট’র দুটি সেবাকেন্দ্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানায়, আলেপ্পোর প্রতিটি অংশ দখলে সিরীয় সরকারি বাহিনীর ব্যাপক স্থল অভিযান শুরু করেছে, আর আকাশপথ থেকে বিমানহামলা চালিয়ে সাহায্য করছে রুশ ও সিরিয়ার যুদ্ধবিমান। বিবিসি, আল-জাজিরা, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।