Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যেভাবে হিজাব অব্যাহত রাখেন তিউনিসিয়ার ড. হিন্দ শিবলির

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০২১, ১২:০২ এএম

তিউনিসিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোরআন ও তাফসির বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. হিন্দ শিবলি ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন। গত ২৪ জুন তিনি ইন্তেকাল করেন। তিউনিসিয়া সরকারের শত বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি নিয়মিত হিজাব পরতেন।
ড. হিন্দ শালবি তিউনিসিয়ার জায়তুনার ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান ছিলেন। তার বাবা শায়খ আহমদ শালবি একজন প্রসিদ্ধ আলেম ও জনপ্রিয় শিক্ষক। শৈশবে তিনি পবিত্র কোরআন হেফজ করেন। তিনি ছিলেন জায়তুনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা প্রথম সারির তিউনিসিয়ান নারী। ১৯৬৮ সালে ড. হিন্দ শিলবি উসুলুদ্দিন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। ১৯৮১ সালে তিনি একই বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণ করেন। অতঃপর ১৯৮১ সালে উলুমুল কোরআন বিষয়ে তিনি জাইতুনাহ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন।
১৯৭৫ সালে একটি জাতীয় সম্মেলনে ড. হিন্দ শালবি ‘ইসলামে নারীর মর্যাদা’ শীর্ষক আলোচনা প্রদান করেন। সেখানে তিউনিসিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হাবিব বরগুইবা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু আলোচনার মধ্যে কোরআন ও সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক সরকারের নারী বিষয়ক নীতিমালার তীব্র সমালোচনা করেন। ১৯৮১ সালে তিউনিসিয়া রাষ্ট্রপ্রধান বুরগুইবা সরকারি অফিসে হিজাব পরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পরবর্তী প্রেসিডেন্ট বেন আলির সময়েও এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকে। কিন্তু ড. হিন্দ ইসলামের বিধান পালনে কখনো ছাড় দিতেন না। বরং সরকারি বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করে সর্বদা তিনি হিজাব পরে চলাফেরা করেছেন। পুরো শরীর ঢেকে রাখতে তিউনিসিয়ান নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘সেফসারি’ পরতেন তিনি। এর মাধ্যমে মাথা থেকে পা পর্যন্ত পুরো শরীর ঢাকা পড়ে।
জায়তুনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিআহ ও আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. ইলিয়াস দারদুর জানান, ড. হিন্দ শালবির মৃত্যু শুধুমাত্র তিউনিসিয়া নয়, বরং মুসিলম বিশ্বে শূণ্যতা তৈরি করেছে। তিনি অত্যন্ত চমৎকারভাবে পবিত্র কোরআনের তাফসির পাঠদান করতেন। তিউনিসিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকেই প্রথম হিজাবি শিক্ষার্থী মনে করা হয়।
তিনি আরো জানান, ‘পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট হাবিব বরগুইবা ও জয়নাল আবেদিন বেন আলীর চাপের মুখে তিনি তিউনিসিয়ার ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘সেফসারি’ পরা শুরু করেন। ৮০-এর দশকে আমিও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম। তিনি এই পোশাকের মাধ্যমে মাথা থেকে পা পর্যন্ত পুরো শরীর আবৃত রাখতেন। এর মাধ্যমে সরকারি বিধি-নিষেধ লঙ্ঘন থেকে যেমন রেহাই পেয়েছিলেন, তেমনি শরয়ি পোশাক পরার বিধানও পালন করেন। সূত্র : আল জাজিরা নেট।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হিজাব


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ