বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বরগুনা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ করাতকল। বিভিন্ন সংরক্ষিত বন থেকে গাছ কেটে এনে এই করাতকলগুলোতে বিক্রি করছে চোরাকারবারিরা। নিয়মিত কাঠ আসছে এবং তা চেরাইয়ের কাজ চলছে সেগুলোতে। বন উজাড় হওয়ার পেছনে এটাও অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। করাতকল চালানোর জন্য সরকারের বনবিভাগ থেকে লাইসেন্স নেয়ার কথা থাকলেও বেশিরভাগ ব্যবসায়ী এই আদেশ মানছে না।
বন বিভাগের উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তাদের কাছে পাওয়া তথ্যানুসারে, বরগুনা জেলায় প্রায় সাড়ে ৩শ’ করাত কল রয়েছে। যার মধ্যে ১৯৫টি করাতকল বৈধভাবে চলছে। বাকিগুলোর লাইসেন্স নেই, চলছে অবৈধভাবে। এদের মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় শতাধিক করাতকলের মধ্যে বৈধ করাতকলের সংখ্যা প্রায় ৬০টি, পাথরঘাটা উপজেলায় প্রায় ৪০টি, বামনা উপজেলায় প্রায় ২৬টি, বেতাগী উপজেলায় ৩৫টি, আমতলী উপজেলায় ২৫টি এবং তালতলী উপজেলায় ৩টি করাতকল বৈধভাবে চলছে। এর বাইরেও প্রতিটি উপজেলায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা করাতকল রয়েছে আরও বেশি।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও বরগুনার বিষখালী নদীর তীরে বড়ইতলা ও বাওয়লকর এলাকার সংরক্ষিত বনের এক-দুই কিলোমিটারের মধ্যে বেশ কয়েকটি করাতকল অবৈধভাবে গড়ে উঠছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের দুইশ’ মিটারের মধ্যেও গড়ে উঠেছে অবৈধ করাতকল। নিয়মিত কাঠ চেরাইয়ের কাজ চলছে সেগুলোতে।
বরগুনার সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের খন্দকার বাড়ি জামে মসজিদের একশ’ হাতের মধ্যে গড়ে উঠেছে একটি অবৈধ করাতকল। নূর আলম খন্দকার নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারি জমিতে বিধিমালার তোয়াক্কা না করে এ করাতকল গড়ে তুলেছেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। একইভাবে বরগুনার খাকদন নদীকে কেন্দ্র করে পোটকাখালী এলাকাতেও একাধিক অবৈধ করাতকল গড়ে উঠেছে।
পোটকাখালীতে লাইসেন্সবিহীন করাতকল পরিচালনা করছেন আবুল বাশার। তিনি বলেন, আমরা বন বিভাগ থেকে নোটিশ পেয়েছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে বন বিভাগে গিয়ে কীভাবে লাইসেন্স পেতে পারি সে বিষয়ে আলোচনা করবো।
এ ব্যাপারে লাইসেন্সবিহীন এসব করাতকলের মালিকরা বলছেন, সরকারের বিধিমালার ভেতরে থেকে আমরা ব্যবসা করতে চাই। তবে আমাদের করাতকলের পাশে বন থাকায় আমরা লাইসেন্স পাচ্ছি না। আমরা ইতোমধ্যে সব কাগজপত্র জমা দিয়েছি। কর্তৃপক্ষ লাইসেন্স দিচ্ছে না।
বরগুনা বনবিভাগ অফিস সূত্র জানায়, বরগুনা সদর উপজেলায় প্রায় একশ’ করাতকলের কাছে লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। এদের কাগজপত্র সরকারি বিধিমালার অনুসারে যাচাই বাছাই করে লাইসেন্স দেয়া হবে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ করাতকল সরকারের বিধিমালা না মেনেই গড়ে উঠেছে। সেসব করাত কল লাইসেন্স পাবে না।
বরগুনা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (রেঞ্জ অফিসার) মো. মতিয়ার রহমান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বরগুনা সদর উপজেলার সব করাতকল থেকে কাগজ নিয়েছি। যারা সরকারের বিধিমালার মধ্যে রয়েছে, তাদের লাইসেন্স দেয়া হবে বা নবায়ন করা হবে। অন্যান্য করাত কলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাকি উপজেলাগুলোতেও একই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অবৈধ করাত কল বন্ধের বিষয়ে বন বিভাগের পটুয়াখালী ও বরগুনার দায়িত্বরত বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, অবৈধ করাতকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা চিঠি দিয়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় এসব করাতকলের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসময় তিনি আরও বলেন, বেশ কিছু অবৈধ করাতকলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে সব অবৈধ করাতকল বন্ধ করা যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।